পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত পঞ্চম ভাগ.djvu/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দক্ষিণেশ্বর—ঈশ্বর দর্শনের পর অবস্থা »8ዊ সৰ্ব্বভূতে আছেন। যেমন পায়ে কাটা ফুটেছে, আর একটী কাটা জোগাড় করে এনে ঐ কাটাটি তোলা। অর্থাৎ জ্ঞান কাটার দ্বারা অজ্ঞান কাটা তুলে ফেলা ৷” “আবার বিজ্ঞান হ’লে, দুই কাটাই ফেলে দেওয়া—অজ্ঞান কাটা এবং জ্ঞান কাটা। তখন ঈশ্বরের সঙ্গে নিশিদিন কথা, আলাপ হচ্চে—শুধু দর্শন নয়।” “যে দুধের কথা কেবল শুনেছে সে অজ্ঞান ; যে দুধ দেখেছে তার জ্ঞান হয়েছে। যে দুধ খেয়ে হৃষ্টপুষ্ট হ’য়েছে তার বিজ্ঞান হ’য়েছে।” এইবার ভক্তদের বুঝি নিজের অবস্থা বুঝাইয়া দিতেছেন। বিজ্ঞানীর অবস্থা বর্ণনা করিয়া বুঝি নিজের অবস্থা বলিতেছেন। [ শ্রীরামকৃষ্ণের অবস্থা—শ্ৰীমুখ কথিত—ঈশ্বর দর্শনের পর অবস্থা ] শ্রীরামকৃষ্ণ (ভক্তদের প্রতি )—জ্ঞানী সাধু আর বিজ্ঞানী সাধু প্রভেদ আছে। জ্ঞানী সাধুর বসবার ভঙ্গি আলাদা। গোফে চাড়া দিয়ে বসে। কেউ এলে বলে, “কেমন বাবু, তোমার কিছু জিজ্ঞাসা আছে ?” “যে ঈশ্বরকে সৰ্ব্বদা দর্শন করছে, তার সঙ্গে কথা কচ্চে (বিজ্ঞানী ) তার স্বভাব আলাদা ; কখনও জড়বৎ, কখনও পিশাচবৎ, কখনও বালকবৎ, কখনও উন্মাদবৎ ।” “কখনও সমাধিস্থ হয়ে বাহ শূন্ত হয়—জড়বৎ হ’য়ে যায়।” “ব্ৰহ্মময় দেখে তাই পিশাচবৎ ; শুচি অশুচি বোধ থাকে না। হয় ত বাহে করতে করতে কুল খাচ্ছে, বালকের মত। স্বপ্নদোষের পর অশুদ্ধি বোধ করে না—শুক্রে শরীর হয়েছে এই ভেবে। “বিষ্ঠা মূত্র জ্ঞান নাই ; সব ব্রহ্মময়। ভাত ও ডাল অনেক দিন রাখলে বিষ্ঠার মতন হয়ে যায়।” • “আবার উন্মদিবৎ ; তার রকম সকম দেখে লোকে মনে করে পাগল।” “আবার কখনও বালকবৎ ; কোন পাশ নাই, লজ্জা, ঘৃণা, সঙ্কোচ প্রভৃতি।” “ঈশ্বর দর্শনের পর এই অবস্থা। যেমন চুম্বকের পাহাড়ের কাছ দিয়ে জাহাজ যাচ্ছে, জাহাজের স্কু, পেরেক আলুগা হ’য়ে খুলে যায়। ঈশ্বর দর্শনের পর কাম ক্রোধাদি আর থাকে না ।”