পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত পঞ্চম ভাগ.djvu/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীযুত কালীকৃষ্ণের সঙ্গে মাষ্টার |9 এস ; সেখানে এক জালা মদ আছে। মাষ্টার আসিয়া বন্ধুকে যাহা বলিয়াছিলেন, প্রণামাস্তর ঠাকুরকে সমস্ত নিবেদন করিলেন। ঠাকুরও হাসিতে লাগিলেন। ঠাকুর বলিলেন ভজনানন্দ, ব্ৰহ্মানন্দ, এই আনন্দই সুরা, প্রেমের সুরা। মানবজীবনের উদ্দেশু ঈশ্বরে প্ৰেম ঈশ্বরকে ভালবাসা । ভক্তিই সার। জ্ঞান বিচার ক’রে ঈশ্বরকে জানা বড়ই কঠিন। এই বলিয়া ঠাকুর গান গাহিতে লাগিলেন-- কে জানে কালী কেমন, ষড়দর্শনে না পায় দরশন। আত্মারামের আত্মা কালী প্রমাণ প্রণবের বচন, সে যে ঘটে ঘটে বিরাজ করে ইচ্ছাময়ীর ইচ্ছা যেমন । কালীর উদরে ব্রহ্মাও ভাও প্রকাও তা বুঝ কেমন, যেমন শিব বুঝেছেন কালীর মৰ্ম্ম অন্তে কেবা জানে তেমন । মূলাধারে সহস্রারে সদা যোগী করে মনন, কালী পদ্মবনে হংস সনে হংসীরূপে করে রমণ । প্রসাদ ভাসে লোকে হাসে সস্তরণে সিন্ধু তরণ, আমার মন বুঝেছে, প্রাণ বুঝে না, ধরবে শশী হয়ে বামন । ঠাকুর ত্রীরামকৃষ্ণ আবার বলিতেছেন, ঈশ্বরকে ভালবাসা—এইটি জীবনের উদ্দেশু ; যেমন বৃন্দাবনে গোপ-গোপীরা, রাখালরা শ্ৰীকৃষ্ণকে ভালবাসত। যখন শ্ৰীকৃষ্ণ মথুরায় গেলেন, রাখালরা তার বিরহে কেঁদে কেঁদে বেড়াত। এই বলিয়া ঠাকুর উদ্ধদৃষ্টি হইয়া গান গাহিতেছেন— দেখে এলাম এক নবীন রাখাল, নবীন তরুর ডাল ধরে, নবীন বৎস কোলে ক’রে, বলে, কোথা রে ভাই কানাই । আবার, কা বই কানাই বেরোয় না রে, বলে কোথা রে ভাই, Q আর নয়ন-জলে ভেসে যায় | ঠাকুরের প্রেমমাখা গান শুনিয়া মাষ্টারের চক্ষুতে জল আসিতেছে।