পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত পঞ্চম ভাগ.djvu/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>ba শ্ৰীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত—৫ম ভাগ [ ১৮৮৫, ফেব্রুয়ারী ২৫ [ দুই পথ ও গিরীশ–বিচার ও ভক্তি-জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগ ] শ্রীরামকৃষ্ণ–বিচার পথও আছে, বেদাস্তবাদীদের পথ। আর একটি পথ আছে ভক্তিপথ। ভক্ত যদি ব্যাকুল হয়ে কাদে ব্ৰহ্মজ্ঞানের জন্ত, সে তাও পায় । জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগ ।

  • দুই পথ দিয়াই ব্ৰহ্মজ্ঞান হতে পারে। কেউ কেউ ব্রহ্মজ্ঞানের পরও ভক্তি নিয়ে থাকে লোক-শিক্ষার জন্ত ; যেমন অবতারাদি ।”

“দেহাত্মা-বুদ্ধি, আমি-বুদ্ধি কিন্তু সহজে যায় না ; তার কৃপায় সমাধিস্থ হলে যায়—নিৰ্ব্বিকল্প সমাধি জড় সমাধি । “সমাধির পর অবতারাদির ‘আমি আবার ফিরে আসে—বিদ্যার আমি, ভক্তের আমি। এই ‘বিদ্যার আমি দিয়ে লোকশিক্ষণ হয় । শঙ্করাচার্য্য *বিদ্যার আমি’ রেখেছিল । “চৈতন্তদেব এই “আমি” দিয়ে ভক্তি আস্বাদন করতেন, ভক্তি ভক্ত নিয়ে থাকতেন ; ঈশ্বরীয় কথা কইতেন ; নাম সংকীৰ্ত্তন করতেন ।

  • আমি তো সহজে যায় না, তাই ভক্ত জাগ্ৰত স্বপ্ন প্রভৃতি অবস্থা উড়িয়ে দেয় না। ভক্ত সব অবস্থাই লয়, সত্ত্ব, রজঃ তম তিন গুণও লয় ঃ ভক্ত দেখে তিনিই চতুৰ্ব্বিংশতি তত্ত্ব হয়ে রয়েছেন, জীব-জগৎ হয়ে রয়েছেন ; আবার দেখে সাকার চিন্ময়রূপে তিনি দর্শন দেন ।

‘ভক্ত বিদ্যামায়া আশ্রয় করে থাকে। সাধু-সঙ্গ, তীর্থ জ্ঞান, ভক্তি-বৈরাগ্য এই সব আশ্রয় করে থাকে। সে বলে যদি আমি সহজে চলে না যায়, তবে থাকৃ শালা ‘দাস’ হয়ে, ‘ভক্ত’ হয়ে । ভক্তেরও একাকার জ্ঞান হয় ; সে দেখে ঈশ্বর ছাড়া আর কিছুই নাই । ‘স্বপ্লবৎ’ বলে না, তবে বলে তিনিই এই সব হয়েছেন ; মোমের বাগানে সবই মোম, তবে নানা রূপ। “তবে পাকা ভক্তি হলে এইরূপ বোধ হয়। অনেক পিত্ত জমলে স্তাব লাগে ; তখন দেখে যে সবই হলদে। শ্ৰীমতী স্যামকে ভেবে ভেবে সমস্ত শুামময় দেখলে ; আর নিজেকেও শু্যাম বোধ হল। পারার হ্রদে সীসে অনেকদিন থাকলে সেটাও পারা হয়ে যায়। কুমুরে পোকা ভেবে ভেবে