পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত পঞ্চম ভাগ.djvu/২৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩৬ শ্ৰীহীরামকৃষ্ণ কথামৃত—৫ম ভাগ [ পরিশিষ্ট না। দাও বর ভগবান, এক বৎসর তোমার সেবা করব।” বার বার র্তাহাকে ঈশ্বর বলিয়া স্তব করাতে ঠাকুর বলিতেছেন—“ছি, ও কথা বলতে নাই, ভক্তবং ন চ কৃষ্ণবং । তুমি যা ভাব ; তুমি ভাবতে পার। আপনার গুরু ত ভগবানা, তা বলে ও সব কথা বলার অপরাধ হয়।” গিরীশ ঠাকুরকে আবার স্তব করিতেছেন,—ভগবন পবিত্রতা আমায় দাও ; যাতে কখনও একটু পাপচিন্তা না হয়।” শ্রীরামকৃষ্ণ—“তুমি পবিত্র ত আছ—তোমার যে বিশ্বাসভক্তি।” একদিন ১লা মার্চ ১৮৮৫ খৃষ্টাব্দে দোলযাত্রা দিবসে নরেন্দ্রাদি ভক্তগণ আসিয়াছেন। ঐদিন ঠাকুর নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ দিতেছেন ও বলিতেছেন, “বাবা, কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগ না হ’লে হবে না। ঈশ্বরই একমাত্র সত্য, আর সব অনিত্য।” বলিতে বলিতে ভাবপূর্ণ হইয়া উঠিলেন। সেই করুণামাখা দৃষ্টি। ভাবোন্মত্ত হইয়া গান ধরিলেন— কথা বলতে ডরাই, না বললেও ডরাই, মনে সন্দ হয়, পাছে তোমা ধনে হারাই—হারাই। আমরা জানি যে মনতোর দিলাম তোকে সেই মনতোর, এখন মন তোর ! আমরা যে মন্ত্রে বিপদেতে তরি তরাই। শ্রীরামকৃষ্ণের যেন ভয়, বুঝি নরেন্দ্র আর কাহার হইল, আমার বুঝি হ’ল না—ভয় পাছে নরেন্দ্র সংসারের হয়েন। আমরা জানি যে মন্ত্র, দিলাম তোরে সেই মন্ত্র, অর্থাৎ আমি তোকে জীবনের Highest ideal সৰ্ব্বত্যাগ ক’রে ঈশ্বরের শরণাগত হওয়া সেই মন্ত্র দিলাম। নরেন্দ্র অশ্রুপূর্ণ লোচনে চাহিয়া আছেন। ঐদিনেই ঠাকুর নরেন্দ্রকে বলিতেছেন,—“গিরীশ ঘোষ যা বলে তোর সঙ্গে মিললো ।” নরেন্দ্ৰ—আমি কিছু বলি নাই, তিনিই বলেন, তার অবতার ব’লে বিশ্বাস। আমি আর কিছু বলুম না।