পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত পঞ্চম ভাগ.djvu/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

, y গ্রীরামকৃষ্ণ কীৰ্ত্তনামাদ ব্রাহ্মসমাজের শ্ৰীযুক্ত ত্ৰৈলোক্য গান করিতেছেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কীৰ্ত্তন একটু শুনিতে শুনিতে হঠাৎ দণ্ডায়মান ও ঈশ্বরাবেশে বাহশূন্ত হইলেন। একেবারে অস্তমুখ, সমাধিস্থ। দাড়াইয়৷ সমাধিস্থ। সকলেই বেষ্টন করিয়া দাড়াইলেন। বঙ্কিম ব্যস্ত হইয়া ভিড় ঠেলিয়া ঠাকুরের কাছে গিয়া একদৃষ্টে দেখিতেছেন। তিনি সমাধি কখনও দেখেন নাই। কিয়ৎক্ষণ পরে একটু বাইজান হইবার পর ঠাকুর প্রেমে উন্মত্ত হইয়া নৃত্য করিতে লাগিলেম, যেন শ্ৰীগৌরাঙ্গ শ্ৰীবাসমন্দিরে ভক্ত সঙ্গে নাচিতেছেন। সে অদ্ভুত নৃত্য ! বঙ্কিমাদি ইংরাজী পড়া লোকেরা দেখিয়া অবাক। কি আশ্চৰ্য্য ! এরই নাম কি প্রেমানন্দ ? ঈশ্বরকে ভালবেসে মাচুৰ্য কি এত মাতোয়ারা হয় ? এইরূপ কাণ্ডই কি নবদ্বীপে শ্ৰীগৌরাঙ্গ করেছিলেন ? এই রকম করেই কি তিনি নবদ্বীপে আর শ্ৰীক্ষেত্রে প্রেমের হাট বসিয়েছিলেন ? এর ভিতর তো ঢং হ’তে পারে না। ইনি সৰ্ব্বত্যাগী, এর টাকা, মান, নাম বেরুনে, কিছুই দরকার নাই। তবে এই কি জীবনের উদ্দেশ্য ? কোনো দিকে মন না দিয়ে ঈশ্বরকে ভালবাসাই কি জীবনের উদ্দেশু ? এখন উপায় কি ? ইনি বললেন, মা’র জন্ত দিশেহারা হয়ে ব্যাকুল হওয়া ব্যাকুলতা, ভালবাসাই উপায়, ভালবাসাই উদ্দেপ্ত। ঠিক ভালবাসা এলেই দৰ্শন হয়। ভক্তরা এইরূপ চিন্তা করিতে লাগিলেন ও সেই অদ্ভুত দেবদুর্লভ মৃত্য ও কীৰ্ত্তনানন্দ দেখিতে লাগিলেন। সকলেই দণ্ডায়মান—ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের চারিদিকে-আর একদৃষ্টে তাকে দেখিতেছেন। কীৰ্ত্তনাস্তে ঠাকুর ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম করিতেছেন। ‘ভাগবত ভক্তভগবান’ এই কথা উচ্চারণ করিয়া বলিতেছেন, জ্ঞানী-যোগী-ভক্ত সকলের চরণে প্রণাম | আবার সকলে ঘেরিয়া আসন গ্রহণ করিলেন।