পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত পঞ্চম ভাগ.djvu/৩০১

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミbミ শ্ৰীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত—৫ম ভাগ [ পরিশিষ্ট ছিড়লে পুলের কিছু হবে না, আরও অনেক শিকল দিয়ে বাধা আছে—তারা টেনে রাখবে। তেমনি সংসারীদের অনেক বন্ধন । ভগবানের কৃপা ব্যতিরেকে সে বন্ধন যাবার উপায় নাই । “র্তাকে দর্শন করলে আর ভয় নাই। র্তার মায়ার ভিতর বিদ্যা অবিদ্যা দুই আছে —দর্শনের পর নিলিপ্ত হতে পারে। পরমহংস অবস্থায় ঠিক বোধ হয় । দুধে জলে আছে, হাসে যেমন দুধ নিয়ে জল ত্যাগ করে। হাস পারে কিন্তু শালিক পারে না।” একজন ভক্ত—তবে সংসারীর উপায় কি ? শ্রীরামকৃষ্ণ—গুরুবাক্যে বিশ্বাস তার বাক্য অবলম্বন ; তার বাক্যরূপ খুটি ধরে ঘোরো, সংসারের কাজ করে । গুরুকে মাছুষবুদ্ধি করতে নাই। সচ্চিদানন্দই গুরুরূপে আসেন। গুরুর কৃপায় ইষ্টকে দর্শন হয়, তখন গুরু ইষ্টতে লীন হয়ে যান। “সরল বিশ্বাসে কিনা হয়। গুরুপুত্রের অন্নপ্রাশনে—শিষ্যেরা যে যেমন পারে, উৎসবের আয়োজন করছে। একটী গরীব বিধবা সেও শিষ্যা । তার একটা গরু আছে, সে একঘট দুধ এনেছে। গুরু মনে করেছিলেন যে দুধ, দধির ভার ঐ মেয়েটি লবে। বিরক্ত হয়ে সে যা এনেছিল ফেলে দিলে আর বললে—তুই জলে ডুবে মরতে পারিস নি ? মেয়েট এই গুরুর আজ্ঞা মনে করে নদীর ধারে ডুবতে গেল। তখন নারায়ণ দর্শন দিলেন ; আর প্রসন্ন হয়ে বললেন—এই পাত্ৰটীতে দধি আছে, যতই ঢালবে ততই বেরুবে, গুরু সন্তুষ্ট হবেন। এবং সেই পাত্ৰটী দেওয়া হলে গুরু অবাক। আর সমস্ত বিবরণ শুনে নদীর ধারে এসে মেয়েটিকে বললেন—নারায়ণকে যদি আমাকে দর্শন না করাও তবে আমি এই জলেতে প্রাণত্যাগ করবো । নারায়ণ দর্শন দিলেন, কিন্তু গুরু দেখতে পেলেন না । মেয়েটি তখন বললে, প্ৰভু গুরুদেবকে যদি দর্শন না দেন, আর র্তার শরীর যদি যায় ত আমিও শরীর ত্যাগ করব। তখন নারায়ণ একবার গুরুকে দেখা দিলেন।” দেখ গুরুভক্তি থাকলে নিজেরও দর্শন হ’ল আবার গুরুদেবেরও হ’ল ।