পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত প্রথম ভাগ.djvu/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

_ _f দক্ষিণেশ্বরে। বিজয় গোস্বামী প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে । ৭৯ সে ব্যক্তি কারো অনিষ্ট করতে পারে না। পরশমণি ছোয়ার পর তরবার সোণ হ’য়ে যায়, তরবারের আকার থাকে, কিন্তু কারো হিংসা করে না। "নারকেল গাছের বেল্লো শুকিয়ে ঝ’রে প’ড়ে গেলে, কেবল দাগমাত্র থাকে। সেই দাগে এইটি টের পাওয়া যায় যে, এককালে ঐখানে নারকেলের বেল্লো ছিল । সেই রকম যার ঈশ্বর লাভ হ’য়েছে, তার অহংকারের দাগমাত্র থাকে, কাম ক্রোধের আকার মাত্র থাকে ; বালকের অবস্থা হয় । বালকেব যেমন সত্ত্ব, রজঃ, তমো গুণের মধ্যে কোন গুণের অtট নাই। বালকের কোন জিনিষের উপর টান ক’বৃতেও যতক্ষণ, তাকে ছাড় তেও ততক্ষণ। একথান পাচ টাকার কাপড় তুমি আধপয়সার পুতুল দিয়ে ভুলিয়ে নিতে পারে। কিন্তু প্রথমে খুব অ টি ক’রে বলবে এখন—“না আমি দেবে না, আমার বাব কিনে দিয়েছে । বালকের আবার সববাই সমান—ইনি বড়, উনি ছোট, এরূপ বোধ নাই । তাই জাতিবিচার নাই । মা ব’লে দিয়েছে ‘ও তোর দাদা হয়, সে ছু তোর হ’লেও এক পাতে বসে ভাত খাবে। বালকের ঘৃণা নাই, শুচি অশুচি বোধ नोझे পাইখানায় গিয়ে হাতে মাটী দেয় না ! ( ভক্তিযোগ যুগধৰ্ম্ম ; জ্ঞানযোগ বড় কঠিন । ) “কেউ কেউ সমাধির পরও ‘ভক্তের আমি’, ‘দাস আমি নিয়ে থাকে । ‘আমি দাস, তুমি প্রভু’ ‘আমি ভক্ত, তুমি ভগবান, এই অভিমান ভক্তের থাকে। ঈশ্বরলাভের পরও থাকে, সব “আমি যায় না । আবার এই অভিমান অভ্যাস করতে কবৃতে ঈশ্বর লাভ হয় । এরই নাম ভক্তিযোগ । “ভক্তির পথ ধ’রে গেলে ব্রহ্মজ্ঞান হয় । ভগবান সৰ্ব্বশক্তিমান, মনে করলে ব্রহ্মজ্ঞানও দিতে পারেন। ভক্তের প্রায় ব্রহ্মজ্ঞান চায় না। আমি দাস, তুমি প্রভু’ ‘আমি ছেলে, তুমি মা এই অভিমান রাখতে চায়।” বিজয় । যারা বেদান্ত বিচার করেন, তারাও তো তাকে পান ? স্ত্রীরামকৃষ্ণ । ই, বিচারপথেও তাকে পাওয়া যায়। একেই জ্ঞানযোগ বলে । বিচারপথ বড় কঠিন । তোমায় তো সপ্তভূমির কথা বলেছি। সপ্তমভূমিতে মন পহুছিলে সমাধি হয় । ব্ৰহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা, এই বোধ ঠিক হ’লে মনের লয় হয়, সমাধি হয় । কিন্তু কলিতে জীব অন্নগত প্রাণ, ব্ৰহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা কেমন ক’রে বোধ হবে ? সে বোধ দেহবুদ্ধি না গেলে হয় ন। ‘আমি দেহ নই, আমি মন নই, চতুৰ্ব্বিংশতি তত্ত্ব নই, আমি মুখ দুঃপের অতীত, আমার আবার রোগ, শোক, জরা, মৃত্যু কৈ ?’ এ সব বোধ কলিতে