পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত প্রথম ভাগ.djvu/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীশ্ৰীরামকৃষ্ণকথামৃত । ১৮৮৪,১৯ অক্টোবর। هواك . ঈশ্বরের আরাধনায় প্রবৃত্ত হয়েছে, সে প্রবর্তকের থাক। সে সব লোক ফোট কাটে, তিলক মালা পরে, বাহিরে খুব আচার করে। সাধক, আরো এগিয়ে গেছে। তার লোক দেখান ভাব কমে যায়। সাধক ঈশ্বরকে পাবার জন্য ব্যাকুল হয়, আস্তরিক তাকে ডাকে, তার নাম করে, তাকে সরলান্তঃকরণে প্রার্থনা করে। সিদ্ধ কে ? যার নিশ্চয়াত্মিক বুদ্ধি হয়েছে, যে ঈশ্বর আছেন, আর তিনিই সব করছেন ; যিনি ঈশ্বরকে দর্শন করছেন । ‘সিদ্ধের সিদ্ধ কে ? যিনি তার সঙ্গে আলাপ করেছেন। শুধু দর্শন নয় ; কেউ পিতৃভাবে, কেউ বাৎসল্যভাবে, কেউ সখ্যভাবে, কেউ মধুর ভাবে, র্তার সঙ্গে আলাপ করে । - “কাঠে আগুন নিশ্চিত আছে, এই বিশ্বাস ; আর কাঠ থেকে আগুন বার ক’রে ভাত রোধে, খেয়ে, শাস্তি আর তৃপ্তিলাভ করা ; দুটা ভিন্ন জিনিষ । ঈশ্বরীয় অবস্থার ইতি করা যায় না। তারে বাড়, তারে বাড়া আছে। { ব্রাহ্মসমাজ ও নিরাকারবাদ । ] ঐরামকৃষ্ণ (ভাবস্থ)। এরা ব্ৰহ্মজ্ঞানী, নিরাকারবাদী। তা বেশ । . (ব্রান্ধভক্তদের প্রতি) । একটাতে দৃঢ় হও, হয় সাকারে নয় নিরাকারে । দৃঢ় হ’লে তবে ঈশ্বর লাভ হয়, নচেৎ হয় না। দৃঢ় হলে সাকারবাদীও ঈশ্বর লাভ করবে, নিরাকারবাদীও ঈশ্বর লাভ করবে। মিছরীর রুট সিদে ক’রে খাও, আর আড় ক’রে থাও, মিষ্টি লাগবে । ( সকলের হাস্ত )। - [ বিষয়ীর ঈশ্বর ; ব্যাকুলতা ও ঈশ্বরলাভ । ] “কিন্তু দৃঢ় হ’তে হবে ; ব্যাকুল হয়ে তাকে ডাকতে হবে । বিষয়ীর ঈশ্বর কিরূপ জান ? যেমন খুড়ী জেঠীর কোদল শুনে ছেলেরা খেলা করবার সময় পরস্পর বলে, “আমার ঈশ্বরের দিব্য’। আর যেমন কোন ফিটু বাবু, পান চিবুতে চিবুতে, হাতে ষ্টিক (stick) ক’রে, বাগানে বেড়াতে বেড়াতে একটি ফুল তুলে বন্ধুকে বলে –‘ঈশ্বর কি beautiful ফুল করেছেন- কিন্তু এ বিষয়ীর ভাব ক্ষণিক, যেন তপ্ত লোহার উপর জলের ছিটে । “একটার উপর দৃঢ় হতে হবে। ডব দাও। না দিলে সমুদ্রের ভিতর রত্ন পাওয়া যায় না। জলের উপর কেবল ভাসলে পাওয়া যায় না।” এই বলিয়া ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ যে গানে কেশৰাদি ভক্তদের মনমুগ্ধ করিতেন, সেই গান—সেই মধুর কণ্ঠে—গাইতে লাগিলেন। সকলের বোধ হইতেছে, যেন স্বৰ্গধামে বা বৈকুণ্ঠে বসিয়া আছেন।