পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত প্রথম ভাগ.djvu/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম পরিচ্ছেদ । [ সন্ধ্যা-সঙ্গীত ও ঈশান-সংবাদ । ] সন্ধ্য আগত প্রায় । ঠাকুর পাদচারণ করিতেছেন। মণি একাকী বসিয়া আছেন ও কি চিন্তা করিতেছেন দেখিয়া, ঠাকুর হঠাৎ তাহাকে সম্বোধন করিয়া সক্ষেহে বলিলেন, “গোটা দু-এক মার্কিনের জামা দিও, সকলের জামা তো পরি না–কাপ্তেনকে বোলবো মনে করেছিলাম, তা তুমিই দিও।” মণি দাড়াইয়া উঠিয়াছিলেন, বলিলেন যে আজ্ঞা । সন্ধ্যা হইল। ঠাকুর স্ত্রীরামকৃষ্ণের ঘরে ধুনা দেওয়া হইল। তিনি ঠাকুরদের প্রণাম করিয়া, বীজ মন্ত্র জপিয়া, নামগান করিতে লাগিলেন। ঘরের বাহিরে অপূৰ্ব্ব শোভা ! কাৰ্ত্তিক মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথি। বিমল চন্দ্রকিরণে এক দিকে ঠাকুরবাড়ী হাসিতেছে, আর এক দিকে ভাগীরথীবক্ষ সুপ্ত শিশুর ন্যায় ঈষৎ বিকম্পিত হইতেছে। জোয়ার পূর্ণ হইয়া আসিল। আরতির শব্দ গঙ্গার মিথোজ্জল প্রবাহসমুদ্ভূত কলকলনাদ সঙ্গে মিলিত হইয়৷ বহুদূর পর্য্যন্ত গমন করিয়া লয় প্রাপ্ত হইতেছিল! ঠাকুরবাড়ীতে এককালে তিন মন্দিরে আরতি -কালীমন্দিরে, বিষ্ণুমন্দিরে ও শিবমন্দিরে। স্বাদশ শিবমন্দিরে—এক একটি করিয়া শিবলিঙ্গের আরতি । পুরোহিত শিবের এক ঘর হইতে আর এক ঘরে যাইতেছেন ; বাম হস্তে ঘণ্টা, দক্ষিণ হস্তে পঞ্চপ্রদীপ, সঙ্গে পরিচারক—র্তাহার হস্তে র্কাসর। আরতি হইতেছে, তৎসঙ্গে ঠাকুরবাড়ীর দক্ষিণপশ্চিম কোণ হইতে রোসনচৌকির স্বমধুর নিনাদ শুনা যাইতেছে । সেখানে নহবতখানা, সন্ধ্যাকালীন রাগরাগিণী বাজিতেছে । আনন্দময়ীর নিত্য উৎসব—যেন জীবকে স্মরণ করাইয়া দিতেছে, কেহ নিরানন্দ হইও নী—ঐহিকের মুখ দুঃখ আছেই ; থাকে থাকুক—জগদম্বা আছেন—আমাদের মা আছেন —আনন্দ কর । দাসীপুত্র ভাল খেতে পায় না, ভাল পরতে পায় না, বাড়ী নাই, ঘর নাই—তবু বুকে জোর আছে তার ষে মা আছে। মার কোলে নির্ভর। পাতানো মা নয়, সত্যকার মা। আমি কে, কোথা থেকে এলাম, আমার কি হবে, আমি কোথায় বাৰ, সৰ আ জানেন । কে অত ভাবে ! আমার মা জানেন—আমার মা, ধিনি দেহ মন প্রাণ আত্মা দিয়ে আমায় গড়েছেন। আমি জানতেও চাই না। যদি