পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত প্রথম ভাগ.djvu/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

n দক্ষিণেশ্বরে। বিজয় গোস্বামী প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে। ৭১ “ভীৱবৈরাগ্য কাকে বলে, একটা গল্প শোনে। এক দেশে অনাবৃষ্টি হয়েছে। চাষার সব খান কেটে দূর থেকে জল আনছে! এক জন চাষার খুব রোক্ত আছ ; সে এক দিন প্রতিজ্ঞা ক’লে যতক্ষণ না জল আসে, খানার সঙ্গে আর নদীর সঙ্গে এক হয়, ততক্ষণ খানা খুড়ে যাবে। এ দিকে त्रीने করবার বেলা হ’লে৷ গৃহিণী মেয়ের হাতে তেল পাঠিয়ে দিল । মেয়ে বল্লে— বাবা! বেলা হয়েছে, তেল মেখে নেয়ে ফেল। o সে ব’ল্পে ‘তুই যা, আমার এখন কাজ আছে। বেলা দুই প্রহর একটা হ'লে, তখনও চাষা মাঠে কাজ ক’চ্ছে। স্নান করার নামটী নাই । তার স্ত্রী তখন মাঠে এসে ব’ল্লে, “এখনও নাও নাই কেন? ভাত জুড়িয়ে গেল, তোমার যে সবই বাড়াবাড়ি । না হয় কাল করবে, কি খেয়ে দেয়েই করবে! গালাগালি দিয়ে চামা, কোদাল হাতে করে তাকে তাড়া করে ; আর বলে, “তোর আঙ্কেল নাই ? বৃষ্টি হয় নাই! চাষ বাস কিছুই হলো না, এবার ছেলেপুলে কি খাবে? না খেয়ে সব মারা যাবি ! আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, মাঠে আজ জল আনবে, তবে নাওয়া খাওয়ার কথা কবো। স্ত্রী গতিক দেখে দৌড়ে পালিয়ে গেল। চাষ সমস্ত দিন হাড়ভাঙ্গ পরিশ্রম করে সন্ধ্যার সময় খানার সঙ্গে নদীর যোগ ক’রে দিল। তখন একধারে বসে দেখতে লাগলো যে, নদীর জল মাঠে কুলকুল করে আসছে। তার মন তখন শাস্তু আর আনন্দে পূর্ণ হলো । বাড়ী গিয়ে স্ত্রীকে ডেকে বল্পে নে, এখন তেল দে, আর একটু তামাক সাজ। তার পর নিশ্চিন্ত হয়ে নেয়ে খেয়ে, মুখে ভোস ভোস ক’রে নিদ্রা যেতে লাগলো! এই রোক তীব্র বৈরাগ্যের উপমা । r “আর একজন চাষ,—সেও মাঠে জল আনছিল। তার স্ত্রী যখন গেল আর বল্পে, অনেক বেলা হয়েছে, এখন এস, এত বাড়াবাড়িতে কাজ নাই ? তখন সে, বেশী উচ্চবাচ্য না করে, কোদাল রেখে স্ত্রীকে বল্লে—“তুই যখন বলছিস তা চল (সকলের হাস্ত )। সে চাষার আর মাঠে জল আনা হলো না! এটা মদ বৈরাগ্যের উপম। খুব রোক না হ’লে চাষার যেমন মাঠে জল আসেন, সেইরূপ মানুষের ঈশ্বরলাভ হয় না । r to . . . . .