পাতা:শ্রীশ্রীহরি লীলামৃত.djvu/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
শ্রীশ্রীহরি লীলামৃত

এই হরিচাঁদ লীলা সুধার সাগর।

তারকেরে কর হরি তাহাতে মকর।।



পুনর্ব্বা‌র অবতারের প্রয়োজন ও পূর্ব্ব‌
পূর্ব্ব‌ পুরান ও ভাগবত প্রসঙ্গ

ত্রিপদী

ত্রেতাযুগে সূর্য্য বংশে, এক বিষ্ণু চতুরংশে,
হ’ল দশরথের নন্দন।
দ্বাপরেতে কারাগারে, জন্ম বসুদেব ঘরে,
যশোদার হৃদয় রতন।।
যোগমায়ার প্রভাবে, দেবকীর গর্ভস্রাবে,
রোহিনী গর্ভেতে আকর্ষন।
যোগমায়া আকর্ষণে, জন্মিলেন বৃন্দাবনে,
বলরাম নাম সংকর্ষণ।।
নন্দের নন্দন যেই, শচীসুত হৈল সেই,
নিত্যানন্দ হৈল বলরাম।
সেই লীলা সম্বরণ, খেতর জন্মধারণ,
নিত্যানন্দ হৈল নরোত্তম।।
শ্রীঅদ্বৈত রামচন্দ্র, শ্রীনিবাস গৌরচন্দ্র,
তিন প্রভু প্রেম প্রচারিলা।
যে জন্যে এ অবতার, পশ্চাতে করি প্রচার,
ওঢ়াকান্দী কৈলা শেষ লীলা।।
যস্য পুত্র যস্য নাম, যথা হ’ল জন্মধাম,
করিলাম লিখিতে আশায়।
রসিক সজ্জন বিজ্ঞ, দেহ মোরে এই ভাগ্য,
মনোজ্ঞ নিস্ফল যেন নয়।।
মানব কুলে আসিয়ে, যশোমন্ত সুত হ’য়ে,
জন্ম নিল সফলা নগরী।
প্রচারিল গূঢ়গম্য, সূক্ষ্ম সনাতন-ধর্ম্ম,
জানাইল এ জগত ভরি।।

---

পয়ার

কি ধন্য প্রভুর লীলা এই কলিযুগে।
সব লীলা হ’তে ধন্য হ’ল ভক্তিযোগে।।
দশরথ-গৃহে জন্ম লইয়া শ্রীরাম।
ভূভার হরণ পূর্ণ ভক্ত নমস্কাম।।
বৈকুণ্ঠনায়ক হরি হৈল লীলাকারী।
নন্দের নন্দন কৃষ্ণ গোলোকবিহারী।।
ভূভার হরণ ভক্ত মনোরম্য কারী।
ভক্তসঙ্গে প্রেমরস মধুর মাধুরী।।
তিন শক্তি একত্র হইয়া ভগবান।
দেবকীর বায়ুগর্ভে দুই শক্তি যান।।
ব্রহ্মবৈবর্ত্তপুরাণে মীমাংসা র’য়েছে।
যশোদার গর্ভে মহাবিষ্ণু জন্মিয়াছে।।
চারি শক্তি একযোগে হয় কৃষ্ণলীলা।
ভাগবতে সুকদেব মীমাংসা করিলা।।
বহুত প্রমাণ লাগে সে সব লিখিতে।
অন্যান্য প্রমাণ গ্রন্থে র’য়েছে বলিতে।।
চৈতন্যচরিতামৃত তাহার প্রমাণ।
বহুযুগ গত পরে এল ভগবান।।
নন্দসুত ব’লে যারে ভাগবতে গাই।
সেই কৃষ্ণ অবতীর্ণ চৈতন্য গোঁসাই।।
বহুত দ্বাপর কলি আসে আর যায়।
স্বয়ং এর অবতার তাতে নাহি হয়।।
অষ্টাবিংশ মন্বন্তর শেষ যেই কলি।
অবতীর্ণ ভক্তবৃন্দ লইয়া সকলি।।
যে দ্বাপরে অন্য শক্তি বিবর্জ্জিত হ’য়ে।
গোলোক বিহারী লীলা গোকুলে আসিয়ে।।
দ্বাপরের শেষে সেই কলির সধ্যায়।
শ্রীগৌরাঙ্গরূপে প্রভু জন্ম নদিয়ায়।।
এই সেই কলি এই অবতার।
অনর্পিত প্রেমভক্তি অর্পিল এবার।।
সেই ত গৌরাঙ্গ প্রভু এই কলিকালে।
অবতীর্ণ নদিয়াতে হরি হরি বলে।।
উৎকলেতে লীলা সাঙ্গ অল্পেতে করিল।
মনের কামনা বহু মনেতে রহিল।।
চৈতন্য চরিতামৃত মঙ্গলাচরণে।
প্রভুর মনের কথা লিখিল যতনে।।
দাস্য সখ্য বাৎসল্য মধুর চারিরস।
চারিভাবে ভক্ত যত কৃষ্ণ তার বশ।।
আপনিও এই ধর্ম্ম করিব যাজন।
ইহাদ্বারা করাইব ভক্তের শিক্ষণ।।
সন্ন্যাস করিল প্রভু এই ধর্ম্ম লয়ে।
রাগানুগা প্রেমভক্তি হাটে বাহুড়িয়ে।।
গৌড়িয়ার ভক্ত তার নাহি পায় লেশ।
শুদ্ধাচার সেবা ভক্তি নাম ভাবাবেশ।।
আটচল্লিশ বর্ষ মধ্যে প্রভু দিল ফাকী।
এইত প্রতিজ্ঞা এক রহিলেক বাকী।।