জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
জয় শ্রীবৈষ্ণব দাস জয় গৌরী-দাস।।
জয় শ্রীস্বরূপদাস পঞ্চ সহোদর।
পতিতপাবন হেতু হৈলা অবতার।।
জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
জয় শ্রীগোলকচন্দ্র জয় শ্রীলোচন।।
জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দ ময়।।
জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।
দীর্ঘ–ত্রিপদী
নাম ছিল রামদাস, রাঢ় দেশে ছিল বাস,
তীর্থযাত্রা করি বহুদিন।
স্ত্রী পুরুষ দুই জনে, শেষে যান বৃন্দাবনে,
কৃষ্ণ প্রেমে হ’য়ে উদাসীন।।
কৃষ্ণ নাম উচ্চারণে, ধারা বহিত নয়নে,
হেরিলে পবিত্র হয় জীব।
কাশী কাঞ্চী মধুপুরী, সরস্বতী গোদাবরী,
শান্তিপুর আদি নবদ্বীপ।।
বিষয় সম্পত্তি ত্যজে, তীর্থ-যাত্রী পদব্রজে,
পরে যান শ্রীচন্দ্রশেখর।
নব গঙ্গা নাম শুনি, দেখিবারে সুরধনী,
লক্ষ্মীপাশা এল তার পর।।
কৃষ্ণভক্ত শিরোমণি, সবলোকে ধন্য মানি,
যত্ন করি রাখিল তথায়।
কৃষ্ণ ভকতের সঙ্গে, প্রেমকথা রসরঙ্গে,
থাকিলেন শ্রীলক্ষ্মী পাশায়।।
চন্দ্রমোহন তার পুত্র, ক্রমে শুন তার সূত্র,
তার পুত্র সুকদেব নাম।
লক্ষীপাশার উত্তর, নবগঙ্গা নদী পার,
বাস করে জয়পুর গ্রাম।।
তস্য পুত্র কালীদাস, বহুদিন কৈল বাস,
তিনি যান পাথরঘাটায়।
রবিদাস নিধিরাম, কনিষ্ঠ শ্রীজীব নাম,
তিন পুত্র সহিত তথায়।।
সর্ব্বদায় সাধু সেবা, সংকীর্ত্তন রাত্রি দিবা,
মাঝে মাঝে বাণিজ্য করিত।
যাহা করে উপার্জ্জন, তাহাতে সাধু সেবন,
ক্ষেত্র কার্য অল্প পরিমিত।।
একদিন কৃষ্ণধ্যানে, তুলসী বেদীর স্থানে,
বসিয়াছে কালীদাস যিনি।
করে করে মালা জপ, অপরে কৃষ্ণ আরোপ,
হেন কালে হ’ল দৈব বাণী।।
সাধু সেবা যে দিনেতে, হ’বে তব ভবনেতে,
এই বিলে আছয় প্রস্তর।
আসিয়া বিলের কূলে, দাড়াইল হরি বলে,
ভুরি ভুরি উঠিবে পাথর ।।
সে সব পাথর ল’য়ে, নিজ ভবনেতে গিয়ে,
সাধু সেবা করিও যতনে ।
সাধু সেবা হ’লে পরে, লইয়ে বিলের তীরে,
সে পাত্র রাখিও পূর্ব্ব স্থানে ।।
এরূপ করেন তিনি, গ্রাম্য লোক তাই শুনি,
মহৎসব হ’লে কোন ঠাই।
প্রস্তর লইব বলে, দাঁড়া’ত বিলের কুলে,
দিয়া কালীদাসের দোহাই।।
সেসব পাথর ল’য়ে, আনিয়া নিজ আলয়ে,
ভোজন করায় লোক সবে।
লোকের ভোজন পরে, আনিয়া বিলের তীরে,
পাথর রাখিলে যায় ডুবে।।
পুরাতন লোকে জানে, সেই বিলের দক্ষিণে,
পাবুনে গ্রামের ছিল নাম।
পাথর আসিত ঘাটে, যে ঘাটে পাথর উঠে,
হইল পাথরঘাটা গ্রাম।।
এক বাটী এক দিনে, সেসব পাথর এনে,
বহুলোকে ভোজন করায়।