পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ অধ্যায় :বৈদ্য ও কায়স্থাদির কথা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১০৫ “ইহাদের গৃহজামাতারূপে সেন বংশ আসেন ও কুলমৰ্যাদায় রায়নগরের কায়স্থ সমাজের শ্রীকণীত্ব প্রাপ্ত হন। বৰ্ত্তমানে সেনদের অবস্থা স্বচ্ছল নহে। ইহাদের ভবিষ্যত কি হয় জানিনা, তবে এখনও ক্ষীণহস্তে ইহারা সমাজে কর্ণধার হইয়া চলিয়া আসিতেছেন।” “মজুমদারগণ—বরশালার মজুমদার; ইহাদের দুই শাখা ছিল, এক শাখা নিৰ্ব্বংশ (মাত্র এক বিধবা জীবিতা আছেন) ও অন্য শাখা স্থানত্যা বরশালার মজুমদারের হিন্দুশাখা রায়নগরের মজুমদার ও মোসলমান শাখা গড়দুয়ারের মোসলমান মজুমদার বংশীয়গণ ।”৩ রাম তারক মজুমদার * “রায়নগরের রামতারক মজুমদার (যাহার বিধবা বৰ্ত্তমান) সম্প্রতি মারা গিয়াছেন; বরশালায় তাহার সম্পত্তি ছিল। মোসলমান মজুমদার ও রামতারক মজুমদার মধ্যে অনেক তালুক লইয়া বিবাদ বিসম্বাদও হয়। হামিদ বখত মজুমদার সাহেব রামতারককে মাসিক ৩০ টাকা বৃত্তি দিতেন, বৰ্ত্তমান খা বাহাদুর পর্যন্ত তাহাকে আত্মীয় বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন।” “বরশালার মজুমদার বংশ বিভক্ত হইয়া গেলে তাহাদের দেবতা বাসুদেব রায়নগরেই আনীত হন, সেই দেবতা সেদিন মাত্র নরসিংহ টীলায় গিয়াছেন।"8 “রামতারক বড় তেজস্বী ও জাত্যভিমানী ব্যক্তি ছিলেন। ভগবান তাহাকে দারিদ্রের চরম অবস্থায় নিয়া গিয়াছিলেন। উপবাসে তাহার অনেক দিন গিয়াছে, তবুও লোকে তাহাকে আছে, তবুও উপবাস করেন, বাজার হইতে চাউল ডাল কে আনিয়া দিব?” “রাজা গিরীশ চন্দ্র একদিন তাহাকে ডাকিয়া বলিলেন—আপনি কষ্ট পাইতেছেন, আমার এখানে রোজ একবার আসিয়া কিছু আলাপ প্রসঙ্গ করিবেন, আপনাকে ৩০ টাকা করিয়া দিব।” রামতারক বলিলেন—“তাহা পারিতাম, তবে আজ আপনি আমাকে যেরূপ অভিবাদন করিয়াছেন, আপনার প্রস্তাবে রাজি হইলে আপনাকেই তদ্রুপ অভিবাদন করিতে হইবে।” “এই মজুমদারগণ গুপ্ত উপাধিধারী। ইহারা যদিও অপর স্থান হইতে আসিয়াছিলেন, তবুও দেব (বা রায়) হইতে শ্রেষ্ঠ সম্মানের অধিকারী হন। কারণ দেবগণ বহু বৎসর ব্যাপিয়া বড় দুৰ্গতিতে পড়িয়াছিলেন।” বিভিন্ন বংশ "এতদ্ব্যতীত রায়নগরে মোহন রায়ের একটি বংশ ছিল, তাহার বাড়ীর চিহ্ন আছে, প্রায় ২০০ বৎসর হইল, সেই বংশ লোপ পাইয়াছে। শম্বুরায়ের আর একটি বংশ ছিল, শম্বুরায়ের দীঘী ও দুইটি শিবালয়ের ভূকম্পের অবশিষ্ট ভগ্নাবশেষ আছে।” “রায় নগরে দানী রায় বলিয়া o. No Hose re Mazumdar family গ্রন্থের নির্দেশ মতে শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৩য় অধ্যায়ে সৰ্ব্বানন্দকে দস্তিদার বংশীয় বলা হয়, এ বিবরণ প্রকৃষ্ট প্রতিবাদ। মতান্তরে রায়নগরের মজুমদারের পূৰ্ব্ববৰ্ত্তিগণ বরশাল হইতে আখালিয়াতে গমন করেন এবং তথা হইতে রায়নগরে সমাগত হন। ৪. মোগল রাজত্বের অবসান কালে বাবা শাস্তিদাস শ্রীহট্টে আসিয়া এক সুরম্য স্থানে নিজ সিদ্ধাশ্ৰম স্থাপন করেন। তাহার জটাকলাপ মধ্যে নরসিংহ দেবতাকে তিনি রাখিতেন। এই স্থানে সে দেবতা স্থাপন করিলে আশ্রমটি নরসিংহ টীলা নামে খ্যাত হয় । নরসিংহ দেবের সেবাব্যয় সুদীর্ঘকাল মণিপুরাধিপতি প্রদান