পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০৬ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড আর একজন প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন । দানীরায় দেব ছিলেন "৫ “ইহা ছাড়া রায়নগরে একটি আদিত্য বংশ ছিল, তাহার বাড়ীতে মণিপুরীরা বাস করিতেছে, তাহা এখন আদিত্য পাড়া নামে খ্যাত। মণিপুরীরা প্রথম ব্রহ্মযুদ্ধের সময় পলাইয়া আসিয়া লালা আনন্দ রামের বাড়ীর নিকটবৰ্ত্ত আনন্দগঞ্জে (গোয়ালিনীর তীরে) বাস করে ও তাহার পরে আদিত্যের বাড়ীতে আসিয়া বাস করে। আদিত্য বংশের শেষ ব্যক্তি রায়াদিত্য (১২৫৮ বঙ্গাব্দ)”৬ “এই আদিত্য বংশও রায়নগরের আদিম অধিবাসী নহেন। দেব ছাড়া কেহই প্রাচীন নহেন। এই আদিত্য কাহারা, তাহা বলা যায় না, তবে লোক মুখে শুনা যায় যে আদিত্যেরা অতি প্রাচীন বংশ সস্তুত, ইহারাও বরশালার লোক।”৭ “এতদ্ব্যতীত রায়নগরে একটি চৌধুরী বাড়ী ছিল, চৌধুরীদের বংশ প্রায় ৬০ বৎসর পূৰ্ব্বে নিৰ্ব্বংশ হইয়াছে। তাহার বাড়ীর সম্মুখে একটি শিবলিঙ্গ স্থাপিত আছেন, তিনি বুড়াশিব। তাহার আদি অন্ত নাই, কেহ তাহাকে স্থাপন করে নাই।”৮ "রায়নগরের কায়স্থের কথা বলিতে একঘর সাহুদের কথা বলিতে হয়, তাহারা পুরকায়স্থ উপাধিধারী, তাহারা মূলতঃ কায়স্থ ছিলেন। সমাজে রাজা গিরীশ চন্দ্রের পরেই তাহাদের স্থান। কিন্তু কায়স্থেরা ইহাদের সঙ্গেই বেশী মিলিয়া থাকেন। সেন, মজুমদার; রায়দেব সম্মানের মত পুরকায়স্থকেও লোকেরা সম্মান করিয়া থাকে, তবে কায়স্থ ও সাহু এই যা প্রভেদ।" সুপ্রসিদ্ধ রাজা গিরীশচন্দ্রের মাতামহ বংশীয় দেওয়ান মুক্তারাম ও মাণিকচাদ প্রভৃতির কথা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত দ্বিতীয় ভাগে ভিন্ন ভিন্ন প্রসঙ্গে স্থানে স্থানে উক্ত হইয়াছে; দেওয়ান মাণিকচাদের পুত্র বাবু মুরারিচাদের ও তদীয় দৌহিত্রের কথা ৪র্থ ভাগে কথিত হইবে। আখালিয়া প্রসিদ্ধ দস্তিদার বংশের কাহিনী আমরা পূৰ্ব্বেইট বর্ণন করিয়াছি, ৪র্থ ভাগে তদ্বংশীয় দয়ালকৃষ্ণের কথা কথিত হইবে। এ বংশীয় সুবিদরায়ের নামানুসারে “সুবিদরায়ের গৃধা" বলিয়া ৫. দানীরায়ের বাড়ীর শ্রেষ্ঠাংশেই এই বিবরণ প্রদাতা শ্ৰীযুত রজনীরঞ্জন দেব মহাশয়ের পূৰ্ব্বপুরুষ আসিয়া বাস করিয়া ছিলেন। রজনী বাবু লিখিয়াছেন—“দানী রায়ের সহিত আমাদের কোনও সম্বন্ধ নাই, প্রসিদ্ধ রায় বংশের সহিতও সংশ্ৰব নাই । রাঢ়দেশ হইতে আসিয়াছি এই মাত্র জানি, রায়নগরে কুলগৌরবে কখনও শ্রেষ্ঠ হইতে পারি নাই, তবে গোত্র ও প্রবলের হিসাবে তাহা বলা যাইতে পারে।" ৬. রজনীবাবু লিখিয়াছেন—“রায়দিত্য ১২৫৬ বঙ্গাব্দে একখণ্ড ভূমি আমার পিতামহকে বিক্রয় করেন; তাহাব হস্তাক্ষর ও দলিল আমার কাছে আছে।" ৭. প্রাপ্ত প্রস্তর ফলক-আদিনা মহলায় প্রাপ্ত একখণ্ড শিলালিপি মজুমদার সাহেবগণ সযত্নে রক্ষা করেন । Historical Researehes in Assam 2IC2 8% পৃষ্ঠায় èz! Undeciphereable zift:II fäffoe হইয়াছে। এই প্রস্তর ফলক সম্প্রতি দস্তিদারদের হস্তগত হইয়াছে । ইহার পশ্চাৎভাগে দুইটি শৃগাল অঙ্কিত আছে এবং সম্মুখভাগে প্রাচীন বঙ্গক্ষেরে কিছু লিখিত আছে । শ্রীযুক্ত রজনী বাবু বলেন “আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান বুদ্ধি মতে যতদূর বুঝিয়াছি তাহাতে বরছরা গ্রামে জনৈক কে ভূমিদান করিয়াছেন। বৎসর ৯০১: বেশ স্পষ্ট বুঝা যায় । ইহারাই কি রায়নগরের আদিত্য?” ৮. এই অনাদিলিঙ্গ শ্ৰীযুত রজনী বাবুদের অধিকারে আছেন। “এই বৃহৎ লিঙ্গটি একজনে তুলিতে পারে না; কিন্তু প্রায়শঃ একস্থান হইতে অন্যস্থানে চালিত হইতে দৃষ্ট হয়, কে নেয় বলা যায় না। সাধারণ লোকের বিশ্বাস যে "ব্রহ্মদৈত্য" কর্তৃক শিবলিঙ্গ এইরূপ একস্থান হইতে অন্যস্থানে নীত হইয়া থাকেন। এই লিঙ্গ কোন মন্দিরে থাকেন না, কেহ কেহ মন্দির প্রস্তুত করিয়া দিতে উদ্যত হইয়াছিলেন। কিন্তু বিপদগ্ৰস্ত হওয়ায় আর মন্দির নিৰ্ম্মিত হয় নাই। প্রধানতঃ একটা সেওড়াগাছের তলাতেই শিব থাকেন; বৃক্ষটি দীর্ঘকালাবধি একই অবস্থায আছে ।"