পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৪ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড কথিত আছে। পরমানন্দের পুত্র লক্ষণরাম, তাহার পুত্র মহাদেব কর; তাহার পুত্র রতিনাথ ও রামকৃষ্ণ । রতিনাথের পুত্র রাধারাম তৎপুত্র মুকুন্দরাম, তাহার পুত্র মাণিকরাম, তৎপুত্র রামগঙ্গা, তাহার পুত্র শ্ৰীযুত রামগতি কর হইতে আমরা তাহাদের বংশ তালিকা প্রাপ্ত হইয়াছি। পরগণা-লক্ষীপুর মহান্ত বংশ মহাত্মা কামদেব কায়স্থ বংশোদ্ভব এবং লাউড়ের ব্রাহ্মণ নৃপতির কৰ্ম্মচারী ছিলেন। লাউড়ের রাজা দিব্যসিংহ বৃদ্ধাবস্থায় শান্তিপুরে অদ্বৈতপ্রভুর নিকটে গমন করিয়া কৃষ্ণদাস নামে তথায় অবস্থিতি করেন ২৩ কামদেব ঐ সংবাদ শ্রবণে ঐ সময়েই শান্তিপুরে গমন করিয়াছিলেন। অদ্বৈত প্রভুর অভিপ্রায় মত তথায় তিনি বিবাহ করেন, কালক্রমে তাহার একটি পুত্র হয়, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নাম স্মরণে ইহার চৈতন্যদাস নাম রাখা হয়। ইহারা পিতাপুত্রে অদ্বৈত প্রভুর শিষ্য ছিলেন। অদ্বৈত প্রভুর শাখা গণনায় ইহাদের নাম আছে— “নন্দিনী আর কামদেব চৈতন্যদাস—” শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত । চৈতন্যদাসের পুত্রের নাম নরহরি । তিনি স্ত্রীকে লইয়া পিতামহের জ্ঞাতিবর্গ সহ সম্মিলনে শ্রীহট্টে আগমন করেন । জ্ঞাতিবর্গ তাহাকে পাইয়া অদ্বৈত্যের পার্ষদ বংশধর জ্ঞানে নিরতিশয় শ্রদ্ধা করিতে লাগিলেন ও এদেশে থাকিতে নিরতিশয় আগ্রহ করিলেন । তিনি তাহাদের অত্যগ্রহ প্রত্যাখান করিতে সমর্থ হইলেন না । তাহারা তাহাকে ভূমিদান করিলেন, নরহরি সেই ভূমে—হুসিয়ারপুর গ্রাম স্বগীয় জগন্নাথ বিগ্রহ স্থাপন পূৰ্ব্বক সেবাধিকারী রূপে বাস করিতে লাগিলেন। দেখিতে দেখিতে নরহরির কাছে অনেক ভদ্রলোক দীক্ষাগ্রহণে তাহার শিষ্যত্ব স্বীকার করিলেন। তাহার বাড়ী “জগন্নাথের আখড়া” নামে খ্যাত হইয়া পড়িল । ইহার পুত্র নিত্যানন্দ এক সিদ্ধপুরুষ ছিলেন। ইহার সম্বন্ধে অনেক আশ্চৰ্য্য ঘটনার সংবাদ শুনা যায়। মোহাম্মদ আলী নামক জনৈক জমিদার ইহার গুণে মোহিত হইয়া তাহাকে অনেক ভূমি দান করিয়াছিলেন। নিত্যানন্দ হইতে এ বংশের মহিমা ও সম্মান বহুগুণে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। এবং তদবিধই ইহারা সাধারণতঃ “লক্ষীপুরের গোসাঞি" এই নামে কথিত হইয়া আসিতেছেন । কিন্তু তাহাদের উপাধি প্রাপ্তির কোনও বিশিষ্ট বিবরণ প্রাপ্ত হওয়া যায় নাই । নিত্যানন্দের মৃত্যুর পর তাহার দেহ ভেখাশ্রিত বৈষ্ণবের রীতিমত সমাহিত করা হইয়াছিল। কথিত আছে, তিনি তাহার অনেক ভক্তকে মৃত্যুব পরেও ছায়ামূৰ্ত্তিতে দর্শন দিয়াছিলেন। নিত্যানন্দের পৌত্রের নাম পীতাম্বর, তৎপুত্র দুৰ্ল্লভদাস, তাহার পুত্র শুকদেব । শুকদেবের পুত্রের নাম বৃন্দাবন চন্দ্র, ইহার দুই-পুত্র মাধব ও বিশ্বম্ভর । মাধবের পুত্র গোরাচাদ এবং বিশ্বস্তরের পুত্র নিমাই পণ্ডিত । এই দুই ভাইর মধ্যে নিমাই পণ্ডিত অতি বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন। গোরাচাঁদ একদা এক শিষ্যবাড়ীতে গমন করিয়া তত্ৰত্য একটি রমণীর রূপে বিমুগ্ধ হন। উক্ত রমণীর উপদেশে তাহার মোহ বিদূরিত হয় এবং তিনি ঢেউপাশা নামক স্থানে গমন করিয়া