পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় অধ্যায় : বিবিধ বংশের উল্লেখ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৪৭ লাউতার ব্রাহ্মণ বংশ লাউতায় আগমন লাউতার কাশ্যপ গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণ ও সেনগ্রামের কাশ্যপ এক বংশসস্তৃত বলিয়া প্রকাশ । লাউতার কাশ্যপেরা তাহাদের বংশ প্ৰবৰ্ত্তক মথুরানাথ তর্কবাগীশকে সেনগ্রামী যাদবানন্দের জ্যেষ্ঠপৌত্র বলিয়া পরিচয় দেন। লাউতার মথুরানাথ হইতে এ পর্যন্ত দশম পুরুষ চলিতেছে, পক্ষান্তরে সেনগ্রামের বংশ তালিকায় যে যাদবানন্দের নাম দৃষ্ট হয়, তাহার ভ্রাতা কুমুদানন্দ ৯ পুরুষ পূৰ্ব্ববৰ্ত্তী ব্যক্তি মাত্র। যাহা হউক, মথুরানাথ একজন বিদ্বান ব্যক্তি ছিলেন, সংস্কৃত ভাষায় মথুরানাথের কৃত "আখ্যাতের টীকা" অমুদ্রিতাবস্থায় আছে বলিয়া শুনা যায়। মথুরানাথের পুত্রের নাম লক্ষ্মীনাথ বিদ্যাভূষণ, ইনি সেনগ্রামের জনৈক সেন জমিদারের স্বস্ত্যয়ন করিয়াছিলেন। তাহাতে উক্ত জমিদার আশু ফললাভে তাহাকে তত্ৰত্য “রাজপণ্ডিতি” প্রদানের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। তাহার এক মাত্র পুত্রের নাম আনন্দ মোহন শিরোমণি, তাহার পুত্র হরিহর তর্কবাগীশ সেনগ্রাম পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক লাউতাগ্রামে গমন করেন। ইহার পুত্র কৃষ্ণচরণের পাচ পুত্র, তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠের নাম জয়কৃষ্ণ বাচস্পতি। তদীয় দ্বিতীয় পুত্র রামজীবন তর্কালঙ্কার একদা নবদ্বীপ বহু পণ্ডিতকুে বিচারে পরাভূত করিয়াছিলেন; কিন্তু বিজয়গৌরব অধিক দিন ভোগ করিতে পারেন নাই, সপ্তাহ মধ্যেই মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছিলেন। হইতে ১৭২২ খৃষ্টাব্দে পঞ্চখণ্ড কালাতে এক সনন্দে (নং ১০৯৯) ১/৪ ভূমি ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হন। ইহার পুত্র রতিকান্ত আগমবাগীশ ও শ্রীকান্ত । এই আগমবাগীশ জয়ন্তীয়াপতি দ্বিতীয় রামসিংহের সভাপণ্ডিত ছিলেন । শ্রীকান্তের পুত্র শিবচরণ বিদ্যালঙ্কার । ইহার চারিপুত্র, তন্মধ্যে সৰ্ব্বজ্যেষ্ঠের নাম লক্ষ্মীনারায়ণ, ইহার পুত্ৰগণ বৰ্ত্তমান আছেন। শিবচরণের দ্বিতীয় পুত্র চন্দ্রশেখর রংপুরের বৰ্দ্ধনকুটীর রাজা শ্যামকিশোর রায়ের সভাপণ্ডিত ছিলেন। পূৰ্ব্বোক্ত কৃষ্ণচরণ পঞ্চননের চতুর্থ পুত্র কমলাকান্ত ভট্টাচাৰ্য্য, ইহার অনুজের রাম রাঘবরাম সাৰ্ব্বভৌম। উভয়েই সুবিজ্ঞ ছিলেন এবং স্বগুণে আদৃত হইয়া ছিলেন। কমলাকান্ত ভট্টাচাৰ্য নবাব হরকিষুণ দাস মনসুরউলমুলক বাহাদুর হইতে প্রাপ্ত সনদে (নং ১১০) ১৭২১ খৃষ্টাব্দে লাউতায়॥০ অৰ্দ্ধকেদার ভূমি ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হন এবং উক্ত নবাব হইতে অন্য এক সনন্দে (নং ১০৯০) পরবর্ষে পং বাহাদুরপুর হইতে আরও॥২/৫ ভূমি ব্ৰহ্মত্র পাইয়াছিলেন। তিনি আরও একখানি সনদে (নং ১১০২) ১৭৪৮ খৃষ্টাব্দে নবাব নজীব আলী খাঁ বাহাদুর হইতে পং বাহাদুরপুর মৌং উলুউরিতে ৫০ ১ ভূমি ব্ৰহ্মত্র লাভ করেন। ১১৯৮ পং সনে তাহার মৃত্যু হয়। সাৰ্ব্বভৌমের মৃত্যু ঘটিলে তাহার পুত্র কালীচরণ বিদ্যানিবাস উহা “তছরূপ" করিয়াছিলেন বলিয়া সনন্দের মন্তব্যে লিখিত আছে। বিদ্যানিবাস জ্যোতিষশাস্ত্রে অভিজ্ঞ ছিলেন; জয়ন্তীয়াপতি দ্বিতীয় রামসিংহের সভায় তিনি নানা বিষয়ে কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। ইহার পুত্রের নাম কৃষ্ণগোবিন্দ, তৎপুত্র রাজেন্দ্র, তাহার পুত্র শ্রীযুক্ত রামকুমার ভট্টাচাৰ্য্য হইতে এই বিবরণ সংগৃহীত হইয়াছে। পূৰ্ব্বোক্ত কৃষ্ণপঞ্চাননের পঞ্চমপুত্র রাঘব সাৰ্ব্বভৌম সন্তানাদি শূন্য ছিলেন, নবাব নজীব আলী খাঁ বাহাদুর প্রদত্ত সনন্দে (নং ১১০৪) ১৭৪৮ খৃষ্টাব্দে পং বাহাদুরপুরে তিনিদ-4পরিমিত _ ৪. একই বংশের বিভিন্ন শাখায় পুরুষ সংখ্যার এইরূপ অনৈক্য, পঞ্চখণ্ডের পালবংশ তালিকাতেও দৃষ্ট হইবে।