পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় অধ্যায় : বিবিধ বংশের উল্লেখ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৫৭ পঞ্চখণ্ডের সুপাতলা বাসী রামচন্দ্র ভট্টাচার্য্যের সোণারাম ও মথুরেশ নামে দুই পুত্র হয়। তন্মধ্যে সোণার পুত্র মদুসূদন, তৎপুত্র জয়চন্দ্র তর্কভূষণ ও প্রয়াগরাজ ভট্টাচাৰ্য্য; প্রয়াগের পুত্র হীরালাল দশসনা বন্দোবস্ত কালে জীবিত ছিলেন। তিনি পূৰ্ব্বপুরুষ সোণা ও মথুরেশের যুক্ত নামে “২নং সোণা মথুরেশ" নামক তালুক বন্দোবস্ত করেন। হীরালালের বৃদ্ধ প্রপৌত্র শ্ৰীযুত দ্বারকানাথ স্মৃতিভূষণ বৰ্ত্তমান বৃন্দারণ্যবাসী হইয়াছেন।২৩ ব্ৰহ্মানন্দের পৌত্ৰগণের মধ্যে নয়ন ভূসম্পত্তি অৰ্জ্জন পূৰ্ব্বক মিরাসদার শ্রেণীতে গণ্য হইয়াছিলেন। ইহাদের মধ্যে পূৰ্ব্বে অনেক শক্তিশালী ও প্রতাপশালী এবং ন্যায়বান ব্যক্তি উদ্ভব হয়; ঈদৃশ বংশের বর্তমান অধঃপতন বড়ই শোচনীয়। A ইতিপূৰ্ব্বে ভট্টশ্রীর রখীতর গোত্রীয় ভট্টাচাৰ্য্য বংশের “নবত” করার ১১৯০ সালের সম্পাদিত অনুমিত পত্রের উল্লেখ করিয়াছি, সেই দলিলে তদঞ্চলের মোসলমান জমিদার বর্গের নামের সহিত এই বংশীয় মুকুন্দরামও স্বীয় নাম দস্তখত করিয়াছিলেন। নয়নের পুত্রের নাম বিশ্বেশ্বর, তৎপুত্র অভয়রাম, ইহার পুত্রের নামই মুকুন্দরাম ছিল। লইয়াছিলেন; তালুক গুলির নামঃ—“৩৭নং নয়ন বিশাই পং," "১০৭নং মুকুন্দরাম পং,” “১০৬নং রঘুরাম পং।" এই তালুক গুলি ভিন্ন তাহার নিজ নামেও তিনি একটি তালুক বন্দোবস্ত লইয়াছিলেন, ইহা “১০২নং পয়লারাম পং" নামক তালুক। পয়লারামের বৃদ্ধ প্রপৌত্ৰ বৰ্ত্তমান। এই বংশোদ্ভব শ্ৰীযুত বিপিন চন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য হইতে এই উভয় বিবরণী প্রাপ্ত হইয়াছি। জলডুবের জমিদার বংশ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ১ম ভাগে "অধিবাসী" শীর্ষক অধ্যায়ে রাঢ় জাতির প্রসঙ্গে জলডুবের ব্রাহ্মণ জমিদার বর্গের উল্লেখ করা গিয়াছে; এই জমিদার ব্রাহ্মণবর্গ পরাশর গোত্রীয়, তাহারা রাঢ়জাতির পৌরোহিত্যও করিয়া থাকেন। বহুকাল যাবৎ ইহারা এদেশ বাসী হইলেও তাহাদের ষষ্ঠ পুরুষের উদ্ধতন ব্যক্তি বর্গের কোন সংবাদই প্রাপ্ত হওয়া যায় না। ছয়পুরুষ পূৰ্ব্বে এই বংশে কামদেব নামে এক ব্যক্তি ছিলেন, তিনি দশসনা বন্দোবস্তের সময়ে জীবিত ছিলেন এবং একটি তালুক নিজ নামে বন্দোবস্ত গ্রহণ করেন, ঐ তালুকের নাম “১০৭ নং কামদেব পণ্ডিত ।” কামদেবের তিন পুত্র ছিলেন, তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠ শঙ্কর ঠাকুরের নামটিই পরিজ্ঞাত আছে; ইনি নিজ বাড়ীতে এক শিব মন্দির নিৰ্ম্মাণ করতঃ তাহাতে শিব প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। ইহার তিন পুত্র তাহাদের নাম শান্তরাম, রতিরাম ও সুন্দররাম। তন্মধ্যে শান্তরাম বিশেষ প্রতিষ্ঠান্বিত ছিলেন। শান্তরাম কোন এক দেবতা প্রতিষ্ঠার জন্য সঙ্কল্প করিয়া এক সুন্দর অট্টালিকা নিৰ্ম্মাণ পূৰ্ব্বেই তাহার মৃত্যু ঘটে। তাহার মৃত্যুর পরে এক সন্ন্যাসী আগমন করিয়া তদীয় পুত্রগণকে স্বগীয় মদনমোহন নামে এক বিগ্রহ প্রদান করিয়া যান অনেক অনুসন্ধানেও তাহাকে পরে যাওয়া যায় নাই; তখন তদীয় পুত্ৰগণ কর্তৃক সেই দালানে মদনমোহন স্থাপিত হন। এই বংশের কুলদেবতা রূপে এ যাবৎ মদনমোহন পূজিত হইতেছেন। শান্তরামের গুণে বিমুগ্ধা হইয়া ২৩. “পুরুষোত্তম তীর্থ-কৃত্য” নামক ইহার কৃত একখানা সংস্কৃত গ্রন্থ আছে।