পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায় বড়লিখার পুরকায়স্থ কথা এবং প্রতাপগড়ের বিবরণ বড়লিখা م শ্রীহট্টে আগমন বড়লিখার যে পুরকায়স্থ বংশ বিবরণ এ স্থলে বর্ণিত হইতেছে, তাহাদের পূৰ্ব্ব পুরুষের আদিবাস অন্যত্র ছিল । যে বংশে শ্রীহট্টের প্রসিদ্ধ সদাগর জোড়ারায় ও দুৰ্ল্লভ দাস জন্মগ্রহণ করেন, যাহার পুত্ৰ হুকমত রায়ের নামে শ্রীহট্টের ত্রয়োদশটি বৃহত্তম তালুকের উৎপত্তি হইয়াছিল, মুর্শিদাবাদের এক ভীষণ দুর্ভিক্ষ যাহার বদান্যতায় প্রশমিত হইয়াছিল এবং শ্রীহট্টের নবাবি প্রদত্ত হইলেও যিনি উদারতা গুণে১ অন্যকে সে মহিমান্বিত পদে প্রতিষ্ঠিত করিয়া হৃদয়ের সৌন্দর্য্যে আরও মহিমান্বিত হইয়া গিয়াছেন, তিনি এই বংশেই উদ্ভূত হন।২ দুল্লভদাসের পূৰ্ব্বপুরুষ জাতিতে বৈদ্য ছিলেন। তাহার নাম রাজা নরেন্দ্র নারায়ণ দাস । তিনি কোন রাজবংশীয় ছিলেন, অথবা রাজবংশীয় না হইয়া থাকিলে, তাহার নামের সহিত “রাজা” শব্দ থাকার সার্থকতা কি ছিল, তাহা জানা যায় না। তাহার আদি বাস গৌড়দেশে ছিল, কোন কারণে তথা হইতে শ্রীহট্টের পলডহর পরগণায় আগমন করিয়া এই স্থানে অধিকার স্থাপন করেন। এই স্থান তৎকালে হেড়ম্ব রাজ্যে অন্তর্গত ছিল, হেড়ম্বেশ্বরের অনুমতি ব্যতীত তদীয় রাজ্যসীমা মধ্যে অধিকার স্থাপন করায়, তিনি হেড়ম্ব রাজ কর্তৃক বিতাড়িত হন ও পলায়ন পূৰ্ব্বক জয়ন্তীয়াপতির আশ্রয় গ্রহণ করেন। জয়ন্তীয়াপতি সমাদরের সহিত অতিথিকে গ্রহণ করিয়াছিলেন, এই স্থানেই কিছুদিনান্তে তাহার মৃত্যু হয়। তাহার পুত্রের নাম মোহনরাম দাস। তিনি জয়ন্তীয়া পরিত্যাগ করিয়া শ্রীহট্ট শহরে আগমন করেন, ও শ্রীহট্টীয় কোন সন্ত্রমশীল সাহু তনয়ার পাণি গ্রহণ পূৰ্ব্বক তথায় অবস্থিতি পং ফুরকাবাদের অন্তর্গত আমুড়া গ্রামে আগমন করেন। ইহার দুই পুত্র, তাহাদের নাম জোড়ারায় ও দুৰ্ল্লভদাস ! শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে (২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৪র্থ অধ্যায়) নবাব হরকৃষ্ণ দাসের নবাবি প্রাপ্তি সম্বন্ধে কথা শ্রুত ছিলাম। আমাদের জনৈক সন্ত্রান্ত বিবরণ প্রদাতাও তাহাই লিখিয়াছিলেন । তদ্ব্যতীত কোন শ্রদ্ধাস্পদ বন্ধুর Gifu og-Hukmat Roy, Marchant of Sylhet, got Nawabship of Sylhet." Fossi সংবাদ জানিতে পারি। কিন্তু সম্প্রতি তাহাদের দৌহিত্র বংশীয়গণ প্রামাণ্য ও প্রাচীন কাগজ অবলম্বনে যে বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়াছেন ও আমাদিগকে প্রদান করিয়াছেন, তাহাতে জোড়ারায়েরই নবাবি প্রাপ্তির কথা লিখিত আছে । হুকমত রায়ের ক্ষমতা অসামান্য ছিল, তিনিই ইটার শ্যামরায়ের দেওয়ানী প্রাপ্তির মূল । তাহার এই কীৰ্ত্তিই বোধ হয় জোড়ারায়ের কীৰ্ত্তি আচ্ছাদিত করিবার কারণ হইয়াছে। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৯ম অধ্যায়ে এতদ্বিবরণ বর্ণিত হইয়াছে। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৪র্থ অধ্যায় দেখ।