পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায় : বড়লিখার পুরকায়স্থ কথা এবং প্রতাপগড়ের বিবরণ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৭৫ ব্যক্তির সহিত বিবাহ দেন। এই সদানন্দই শ্বশুরের পুরকায়স্থি সনন্দ ও সম্পত্তির অধিকারী হন। সদানন্দের পুত্র স্বগীয় গোলকচন্দ্র রায় পুরকায়স্থ কয়েক বৎসর যাবৎ মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছেন; ইহার পুত্র শ্রীযুক্ত নবকুমার রায় পুরকায়স্থ হইতে আমরা এই বংশবিবরণ সঙ্কলন সম্বন্ধে বিশেষ সাহায্য পাইয়াছি। প্রতাপগড়ের আধুনিক বিবরণ প্রতাপগড়ের প্রাচীন ঐতিহাসিক বিবরণ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে বলা গিয়াছে; ইংরেজ আমলের অনেক সংবাদও সঙ্কলিত হইয়াছে; কিন্তু আমরা প্রতাপগড়ের ভূসংক্রান্ত আরও কিছু বিবরণ প্রদান করিতে প্রতিশ্রুত আছি। এই বৃত্তান্তটি পূৰ্ব্বাংশে সংযোজন-যোগ্য হইলেও একটি বংশ বৃত্তান্তের সহিত জড়িত থাকায় এ খণ্ডেই প্রদত্ত হইল। করিমগঞ্জ সবডিভিসনে পাথারকান্দি, তহশীল আফিস, সবরেজিস্টর আফিস, থানা, কম্বাইণ্ড পোষ্ট আফিস, সরকারি ডাক্তারখানা, স্কুল, বাজার ইত্যাদি সহ একটি উল্লেখযোগ্য স্থান। প্রতাপগড়ে গবর্ণমেণ্টের অনেক এলাম ভূমি আছে এবং তাহাতেই এস্থানে তহশীল আফিস স্থাপিত হয়। প্রতাপগড়ে যেরূপে এলাম ভূমের উৎপত্তি হয়, তদ্বিবরণ সাধারণের সুখপাঠ্য নহে ইহার পরে (হস্তাবোধের) প্রাক্কালে এই সকল তালুকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ৭৩টি তালুকের ভূমি অধিকারিগণ চিহ্নিত করিয়া লন; এগুলি ভিন্ন অবশিষ্ট বৃহত্তম ৭টি তালুক হইতেও তদধিকারিরা অনেক ভূমি পরিমাপিত করিয়া চিহ্নিত করেন, উক্ত চতুঃসীমাবদ্ধ অংশ বাদে উক্ত ৭টি বৃহত্তম তালুকের অবশিষ্ট ভূমি পরস্পর মিশ্রিত থাকায় “বাবান" রূপে নির্দিষ্ট হয়।১১ “এলাম” কাহাকে বলে এবং কিরূপে তাহার উৎপত্তি হইয়াছিল, শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে১২ তাহা বলিয়াছি। এলাম ভূমি নিরূপণার্থ গবর্ণমেণ্ট কর্তৃক নিয়োজিত পাটওয়ারিগণ তৎকালে প্রতাপগড়ে অনেক ভূমি বন্দোবস্তের বহির্ভূত আছে বলিয়া নির্দেশ করিয়াছিলেন; এই অতিরিক্ত ভূমিই প্রতাপগড়ের “এলাম”। প্রতাপগড়ের জঙ্গলের প্রতিবন্ধকে পূৰ্ব্বোক্ত সাতটি দশসনা তালুকের অধিকাংশ ভূমি যেরূপ পরিমাপিত ও চিহ্নিত হইতে পারে নাই, নবনির্দেশিত এই এলাম ভূমের দশাও তদ্রুপ হইল; পাটওয়ারিগণ ইহারও সীমাদি নির্ণয়ে অসমর্থ হইয়া পূৰ্ব্বোক্ত দশসনা তালুক সহ উক্ত এলাম ভূমি মিশ্রিত ভাবে আছে বলিয়া মৌজাওয়ারি দাখিল করিলেন। ইহাতে পূৰ্ব্বোক্ত দশসনা “ববান তালুক" আরও জটিল হইয়া উঠিল;—গবর্ণমেণ্টের খাস ও মিরাসদারবর্গের দশসনাতে মিশামিশি হইয়া পড়িল । মিরাসদারবর্গের এজমালি তালুকগুলি ববান মহাল নামে খ্যাত ছিল, তৎসহ মিশ্রিত এই এলাম সংসষ্ট অংশই “রসদ ববান" নামে খ্যাত হইল । পাটওয়ারিগণের প্রদত্ত মৌজাওয়ারিতে এবং হস্তবোধের কাগজে, ববান তালুকের ভূমি ১১, ৭৩টি ক্ষুদ্র তালুকের অচিহ্নিত ভূমির পরিমাণ ৩৪ । ১৪ ছিল, তাহা চিহ্নিত করিয়া লইলে, বাকি বৃহত্তম ৭টি তালুকের চিহ্নিত ভূমি বাদে অচিহ্নিত ববান ভূমের পরিমাণ মোট ৩৫৩৬---হাল হয়। উক্ত ৭ তালুকের নামঃ-১নং কর মাং, ৯নং ছাচিয়া কাছিম, ১৬নং নজর মাং, ৩৩নং গোলাম আলী, ৩৪নং গোলাম রজা, ৫৩নং সাকির মাং, ৫৫নং মাং মুলাইম । ১২. শ্রীহট্টের পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ৫ম খণ্ড ৩য় অধ্যায় দেখ।