পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায় : বড়লিখার পুরকায়স্থ কথা এবং প্রতাপগড়ের বিবরণ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৭৯ গয়াতে তিনি একটা হস্তীদান করিয়াছিলেন, গয়ার পুরোহিতেরা অদ্যাপি একথা স্বরণ রাখিয়াছেন। ঢাকাদক্ষিণের ঠাকুরবাড়ীতে এবং মিশ্রবংশীয় কোন কোন ব্যক্তিকে নিয়মিতরূপে তিনি অর্থ দান করিতেন। এক ব্রাহ্মণ তনয় তাহার ব্যয়ে ন্যায় অধ্যয়ন পূৰ্ব্বক “ন্যায়ভূষণ" উপাধি প্রাপ্ত হন। যখন এ অঞ্চলে বিদ্যাশিক্ষার চর্চা কিছুমাত্র ছিল না, তখন তিনি নিজ গৃহে এক উচ্চ শ্রেণীর বঙ্গ বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বৈষ্ণব লেখক “পদ্যপ্রসূণ” প্রণেতা স্বগীয় রাজীবলোচন দাস এবং “বিজয় মাধব নাটক” প্রণেতা, গীতচিন্তা মণির ব্যাখ্যাতা, করিমগঞ্জের ভূতপূৰ্ব্ব স্বপ্রতিষ্ঠ মোক্তার শ্রীল কৃষ্ণচরণ দাস (কৃষ্ণপদ দাস) প্রভৃতি এই বিদ্যালয়ের ছাত্র। বিদ্যালয়টি সুদীর্ঘকাল স্থায়ী হইয়াছিল, আমরাও শিশুকালে খেলা ছলে বিদ্যালয়ে গিয়া বসিতাম মনে আছে। কৃষ্ণপ্রসাদ চৌধুরী অপরিমিতি ব্যয়ী ব্যক্তি ছিলেন, তাহাতে তাহার মৃত্যুর পর সম্পত্তির তদীয় অংশ নষ্ট হইয়া যায়। গবর্ণমেন্ট স্বত্বত্যাগে রসদ ববানের বৃদ্ধি পূৰ্ব্বে রসদ ববানের উল্লেখ করা গিয়াছে, রসদ ববান গবর্ণমেন্টেরই সংসৃষ্ট ভূমি। কৃষ্ণপ্রসাদ চৌধুরীর ভ্রাতার অভিপ্রায় ও তাহার উদ্যোগে প্রতাপগড়ের ববান তালুকে তাঁহাদের যে অংশ ছিল, তাহা গবর্ণমেণ্টকে প্রদত্ত হয়, ইহাতে প্রতাপগড়ে পূৰ্ব্বোক্ত রসদ ববানের প্রসার বৃদ্ধি পায় ও ইহা সাধারণের একটা আলোচ্য বিষয় হইয়া উঠে। এই কাৰ্য্যটি তাঁহাদের স্বার্থমূলক এবং জ্ঞাতিগণের হানিকর ছিল সন্দেহ নাই। ববান তালুকে সকলেরই স্বত্ব থাকায়, কেহই তাহা ভোগ দখল করিতেন না। সেই বৃহৎ সম্পত্তি ইহারা একা হস্তগত করার এক পন্থা করিলেন। ঐ ভূমি গবর্ণমেণ্টের এলাম প্রচারে তাহারা উহার পাট্টা দিতে বিরত হন; তখন ইহারা এক এস্তেফানামা (ত্যাগ-পত্র) দাখিল ক্রমে ববান তালুকের নিজাংশ ছাড়িয়া স্বত্বত্যাগী হন। গবর্ণমেণ্ট ইহা গ্রাহ্য করিলে, তাহা “খাস” রূপে গণ্য হয় এবং গবর্ণমেণ্ট হইতে তাহাই তাহারা বন্দোবস্ত আনিয়া উপস্বত্ব ভোগী হন। বলা বাহুল্য যে অন্যান্যেরা এইরূপ স্বত্বত্যাগী হন নাই। যাহা হউক, ববান তালুকের এক অধিকারী নিজ অধিকৃত ভূমির রসদ বা অংশ ত্যাগ করিলে এবং তাহা গবর্ণমেণ্টের খাস গণ্য হইলে, দশসনা সহ এই সংমিশ্রিত অংশও “রসদ ববান" বলিয়া খ্যাত হয় ২০ প্রতাপগড়ের ববান তালুকের জটিলতা ইহাতে আরও জটিল হইয়া উঠিয়াছে। এলাম পাট্টা গ্রহণে কিছুকাল ইহারা এলাম ভূমের উপস্বত্ব ভোগ করেন। কিন্তু গবর্ণমেণ্ট মাধব চরণ চৌধুরী পাট্টা ত্যাগ করেন। তখনই প্রতাপগড়ে তহশীল আফিস প্রতিষ্ঠার আবশ্যক হয় এবং মিঃ লটমন জনসনের সময়ে তাহা কার্য্যে পরিণত হয় ॥২১ এখন এই তহশীল আফিসের আয় কত বস্তুতঃ ইহারা আশু স্বার্থ মূলে স্থায়ী স্বাৰ্থত্যাগ 80. "Further interest attaches to this pargana from the fact that certain claims, known as baban and rasad baban and are put putforward by the owners of Some of the permanently settled estates, etc." Assam District Gazetteers Vol. ll, p. 229. ২১. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ৫ খণ্ড ৩য় অধ্যায়ে ইহা বর্ণিত হইয়াছে।