পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৮ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-দ্বিতীয় খণ্ড তাহার বংশধর বর্গ মধ্যে পরবত্ত কয়েজনেরই খাঁ উপাধি দৃষ্ট হয়; তাহার বংশীয়গণ অদ্যপি ঐ স্থান বাসী ॥২ শাহবাজপুরের চৌধুরী বং “জাংদার" কোন ব্যক্তির নাম কি উপাধি, তাহা জানিতে পারা যায় নাই। পঞ্চখণ্ডে পূৰ্ব্বে এক বিশিষ্ট হিন্দু জমিদার বংশ ছিল, এবং তাহা জাংদার বংশ বলিয়া কথিত হইত। এইবংশে শ্যামরায় জাংদারের উদ্ভব হয়, তাহার পুত্রের নাম স্বরূপ রাম জাংদার; ইনি ধৰ্ম্মনিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ তাহাকে ধৰ্ম্মভ্রষ্ট হইতে হয়। ইহার স্থাপিত বাসুদেব বিগ্রহ অদ্যাপি শাহবাজপুরের কুমার সাইদ মৌজায় আছেন, উক্ত দেবতার নামে তৎপ্রদত্ত ৬/০ হাল দেবত্র ভূমি আছে। একদা রাজস্ব বাকির দায়ে স্বরূপরাম পড়িয়াছিলেন। তিনি বহু চেষ্টায় রাজস্বের কতকাংশ সংগ্রহক্রমে দিল্লীতে গমন করেন, তথায় তাহার জাতি-চু্যতি ঘটে। স্বরূপ রামের মোসলমান অবস্থার নামই শাহবাজ খা । মোসলমান ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিয়া তিনি নিজ জমিদারী পঞ্চখণ্ড হইতে খারিজ ক্রমে পৃথক পরগণায় পরিণত করেন। তাহার পর তিনি দিল্লী হইতে মক্কায় গমন পূৰ্ব্বক হজব্রত সম্পাদনে “হাজি" নামে খ্যাত হন। শাহবাজ হিন্দু থাকা কালে নিঃসন্তান ছিলেন। মোসলমান ধৰ্ম্ম অবলম্বন কালে তিনি বৃদ্ধ হইয়াছিলেন, কিন্তু নিৰ্ব্বন্ধানুসারে তাহাকে এই সময় বিবাহ করিতে হয় । সেই আশীতিপর বৃদ্ধের এই বিবাহে ঈশ্বরেচ্ছাক্রমে একটি পুত্র জাত হয়, ইহার নাম ফতেহ মোহাম্মদ। ইনিও তৎকালে তাহার বয়ঃক্রম প্রায় নবতি বৎসর হইয়াছিল । শাহবাজপুরের ১নং তালুক তাহার নামেই বন্দোবস্ত হয়। ফতেহ মোহাম্মদের পুত্রের নাম মোহাম্মদ ফাজিল, তৎপুত্র মোহাম্মদ আদিল, ইহার পুত্র না থাকায় একটি কন্যাই সম্পত্তির অধিকারিনী হন; তাহার পুত্র আব্দুল গফুর চৌধুরী, ইহার পুত্ৰ নমানমোকিদ চৌধুরী সন্ত্রান্ত ও সম্মানিত ব্যক্তি বটেন। বাহাদুরপুর—পঞ্চখণ্ডের আর একটি খারিজা পরগণা বাহাদুরপুর। উহা শেখ বাহাদুর চৌধুরীর নামে খারিজা হয়। শেখ বাহাদুরের কোন বিবরণ প্রাপ্ত হইতে পারি নাই। তাহার ংশে মোহাম্মদ সাদন নামে এক ব্যক্তি ১১৫০ সালে, ফতে মোহাম্মদ চৌধুরীর সমকালে জীবিত ছিলেন।ত এই বংশে বৰ্ত্তমানে বাহাদুরপুরের শ্ৰীযুত সরাফত আলী চৌধুরী জীবিত আছেন। মোহাম্মদ সাদনের উত্তরাধিকারী সূত্রে শ্রীহট্টের মজুমদার আলাদাদ খা বাহাদুরপুরের সম্পত্তির অনেকাংশ প্রাপ্ত হন; দশসনা বন্দোবস্ত কালে উহা তাহার নামে বন্দোবস্ত হইয়াছিল। বাঘপ্রচণ্ড বা বাসী চৌধুরী বর্গের একটি বংশ ধাবা এস্থলে দেওয়া গেল, যথাঃ-প্রচণ্ড খা, তৎপুত্র গৌহর খা, তৎপুত্র মজলিস আগওয়ান, তাহার পুত্র মজলিস এফতিয়ার, তৎপুত্র মজলিস খা, তৎপুএ মবারিম খা, ইহাব পুত্রের নাম মাসুম খাঁ, ইহার পুত্র ফতেহ মোহাম্মদ, তৎপুত্র ফয়েজ মোহাম্মদ, তাহাব পুত্র শফর মোহাম্মদ, ইহার পুত্র আব্দুল আলী, তাহার পুত্র আবদুল মজিদ, মজিদের পুত্র আবদুল ওযাহেদ, ইহার পুত্র শ্ৰীযুত আবদুল খালেক চৌধুরী বৰ্ত্তমান আছেন। এই বিবরণী ভট্টগ্রার শ্রীযুক্ত যোগীন্দ্র কুমার ন্যায়রত্ন হইতে প্রাপ্ত । পূববৰ্ত্ত ২য় অধ্যায়ে ভট্টগ্রীর বংশ বিবরণ প্রসঙ্গে যে রাজপণ্ডিত দছিল উদ্ধৃত হইয়াছে, তাহাতে ইহার নামের স্বাক্ষর থাকা দুষ্ট হয়।