পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০০ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-তৃতীয় খণ্ড তিনি বনভাগেই বাটী প্রস্তুত করিয়া বাস করিতে আরম্ভ করেন। তাহার ৬ষ্ঠ পুরুষে গৌরীনাথ শিকদার জন্ম গ্রহণ করেন। গৌরীনাথ কোন কারণে বনভাগ ত্যাগ করিয়া ভগবতীপুরে আগমন করেন, কিছুদিন তথায় অবস্থিতির পর এস্থান ত্যাগ করতঃ ইটার একামৌ গ্রামে আসিয়া বসত বাটী নিৰ্ম্মাণ করেন, তাহার বংশধরবর্গ অদ্যাপি তথায় আছেন।১৫ হৃষীকেশ বংশ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে সপ্তম অধ্যায়ে বলা গিয়াছে যে, নিধিপতির পৌত্র কনপ কন্দপের প্রপৌত্র দেবচন্দ্র, ইহার প্রপৌত্র কামদেবের মহাদেব নামে একপুত্র স্থানান্তর গমন করেন; তাহার বাসস্থান “মহাদেবী বড়কাপন" নামে খ্যাত হয়। ইহার বংশধরগণ সসম্মানে বাস করিতেছেন। কামদেবের কয়েক পুত্রের মধ্যে একজনের নাম হৃষীকেশ, ইহার পুত্র রামনাথ, রামনাথের প্রপৌত্রের নাম শ্রীরাম, শ্রীরামের পুত্রের নামও হৃষীকেশ ছিল; ইটার হাড়িয়াবা ঐ গ্রামে হৃষীকেশের বংশীয়গণ বাস করিতেছেন । এই গ্রামে স্বগীয় রণচণ্ডীদেবীর ধাতুনিৰ্ম্মত এক মূৰ্ত্তি আছেন। শঙ্খ-চক্র অসি-ত্রিশূলধারিণী সিংহবাহিনী এই ত্রিনয়না দেবীমূৰ্ত্তী প্রায় তিনপোয়া হস্ত উচ্চ। হৃষীকেশ বংশীয়গণ বলেন যে ঐ দেবী রাজা সুবিদ নারায়ণের পূজিতা, যবন বিপ্লব কালে ঐ মূত্তি তাহারা রক্ষা করিয়াছিলেন ॥১৬ হৃষীকেশের রামনাথ ও শিবনাথ নামে দুই পুত্র হয়, তন্মধ্যে রামনাথের শ্রীকৃষ্ণ ও হরিরাম নামে দুই পুত্র ছিলেন, ইহাদের বংশ বহুবিস্তৃত। হরিরামের পুত্র শুকদেব, তাহার তৃতীয় পুত্র বৈদ্যনাথ । বৈদ্যনাথের পুত্র রাজ বল্লভ, তৎপুত্ৰ সৰ্ব্বানন্দ, তাহার পুত্র শিবানন্দ, ইহার পুত্র শ্ৰীযুত সদানন্দ চক্রবর্তী রাজ-পূজিত পূৰ্ব্বোক্ত রণচণ্ডীর মূৰ্ত্তির সংবাদ সহ এই বিবরণ আমাদিগকে জানাইয়াছেন । ইন্দ্রনারায়ণ বংশ পূৰ্ব্বে হইয়াছে যে, ভানুনারায়ণ রাজোপাধি প্রাপ্তে বাট প্রস্তুত ক্রমে তথায় চলিয়া গিয়াছিলেন ও তাহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা পৈত্রিক ভদ্রাসনেই অবস্থিতি করেন; ইহার নাম ইন্দ্রনারায়ণ । ইহার পুত্র ভব নারায়ণ (শিভ নারায়ণ) যবন বিপ্লব কালে ভাটেরায় গমন করিয়াছিলেন। দেশে শান্তি স্থাপিত হইলে তাহার পুত্র দীপ নারায়ণ ইটার পৈত্রিক বাসভবনে প্রত্যাগমন করেন; দীপ নারায়ণের পুত্র দেবানন্দ সুরানন্দ, দেবানন্দের বংশের সুযোগ্য বংশধর শ্রীযুক্ত কৈলাস চন্দ্র চক্রবত্তী এই সংবাদ আমাদিগকে প্রদান করিয়াছেন । ইহারা এওলাতলী বাসী; তাহাদের ব্যবসায় মিরাসদারী । ১৪. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত উত্তরাংশ ৩য় ভাগ ১ম খণ্ড ৫ম অধ্যায় দেখ । ১৫. গৌরীনাথের গঙ্গানারায়ণ ও দুর্গাদাস নামে দুই পুত্র ছিলেন, উভয়েরই পরবর্তী বংশধর তথায় আছেন; ইদানীং উভয় শাখা হইতে এক একজন কাণিহাটী গিয়াছেন, অপলেরা একামেীবাসী, এস্থলে একটি একটি বংশধারামাত্র দেওয়া গেল; যথাঃ-গৌরীনাথ; তৎপুত্র গঙ্গানারায়ণ, তৎপুত্র রামচন্দ্র, তাহলে পুত্র বাম দেব, তাহার পুত্র রাজ কৃষ্ণ, ইহার পুত্রের নাম হরকৃষ্ণ, তৎপুত্র কৃষ্ণগোবিন্দ, ই হ’ব কনিষ্ঠ ভ্রাতা শ্ৰীযুত গৌরগোবিন্দ বিশারদ হইতে আমরা এই বিবরণ প্রাপ্ত হইয়াছি । ১৬. সিদ্ধকালী-মহাদেবী বড়কাপনেও এক প্রস্তরময়ী প্রাচীন কালী মূৰ্ত্তি আছেন, ইনি যে গুএত্য প্রাচীন বংশীয়গণের পরিপূজিত, তাহা সহজেই বোধ হয় । জনাবদারেল পুষ্করিণী খনন কাল এই প্রস্তবময়ী মূৰ্ত্তিব “কাঠমি” প্রাপ্ত হওয়া যায় । দীপরাম কালী মূৰ্ত্তিকে তত্ৰত্য রমাকান্ত ন্যায় বাগীশের করে সমর্পণ করায়, তদ্বংশীয়গণ কর্তৃক তদবধি ঐ কালী যথারীতি অৰ্চিত হইতেছেন।