পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় অধ্যায় : ইটা, বরমচাল প্রভৃতি স্থানের কাশ্যপ গোত্রীয় শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২০৩ ঘনশ্যাম দেশে প্রত্যাগমন করিলে, তাহার আধ্যাত্মিক উন্নতি নিদর্শন দর্শনে অনেকেই তদীয় শিষ্যত্ব গ্রহণ করিয়াছিল; গয়ঘর নিবাসী শ্ৰীচন্দ্ররায় তাহার কৃপাপ্রাপ্ত হইয়া কৃতাৰ্থ হন। ঘনশ্যামের পুত্র রাধাকান্ত ও শ্যামানন্দ। শ্যামানন্দ তন্ত্রশাস্ত্রে অভিজ্ঞ ছিলেন। রাধাকান্তের পুত্র ভবানন্দ সিদ্ধান্ত একজন সিদ্ধ পুরুষ ছিলেন। ভবানন্দের বংশীয় শ্রীযুক্ত কালীচরণ ভট্টাচাৰ্য্য হইতেই এই বিবরণ সংগৃহীত হইয়াছে। পরগণা-শমশের নগর মহামহশ্রের কাশ্যপ কথা so পূৰ্ব্বে অৰ্জ্জুন মিশ্রের নামোল্লেখ করিয়াছি, অৰ্জ্জুন মিশ্রের পরে তদ্বংশে কয়েক পুরুষের নামগুণ কিছুই অবগত হওয়া যায় নাই। এই বংশে প্রায় একাদশ পুরুষ উদ্ধে হরিশচন্দ্র তর্কচূড়ামণি নামে এক ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেন, তাহার পুত্রের নাম রামচন্দ্র । এই রামচন্দ্র মহাসহস্র বা মালা গ্রামে বাটী নিৰ্ম্মাণ করিয়া বাস করেন। রামচন্দ্রের পুত্রের নাম কমলাকান্ত, এক নাগপঞ্চমী দিনে সর্পাঘাতে কমলাকান্তের মৃত্যু হয়। রামদেব বিদ্যারত্ন, মহাদেব সাৰ্ব্বভৌম ও কৃষ্ণদেব ভট্টাচাৰ্য নামে তাহার তিন বংশ প্ৰবৰ্ত্তক পুত্র ছিলেন। সাৰ্ব্বভৌম ও বিদ্যারত্ন পৈতৃক বাসভবন ত্যাগ করিয়া পৃথক দুই বাটীকা নিৰ্ম্মাণ ক্রমে বাস করেন, কনিষ্ঠ কৃষ্ণদেব পূৰ্ব্ববাটিকাতেই বাস করিতে থাকেন। রামদেব, মহাদেব ও কৃষ্ণদেবের বাসস্থান যথাক্রমে পূৰ্ব্বপাড়া, মধ্যপাড়া ও পশ্চিম পাড়া নামে খ্যাত হয়। গয়ঘরের সোনারাম দত্ত নামক এক ব্যক্তি ইহাদের সময় এইস্থানে আসিয়া বাস করেন । রামদেবের পুত্র রতিরাম তর্কালঙ্কার পরম ধাৰ্ম্মিক ছিলেন। তিনি শ্রীহট্টের নবাব হইতে অনেক ভূমি দান প্রাপ্ত হইয়াছিলেন বলিয়া শুনা যায়। আমরা তাহার কোন নিদর্শন না পাইলেও রাজা সুবিদ নারায়ণের পুত্র ঈশা খার বৃদ্ধ প্রপৌত্র দেওয়ান ইসমাইল খার প্রদত্ত তন্নামীর একখানা দানপত্র কালেক্টরীতে পাইয়াছি, ইহাতে রতিরামকে একখানা খানেবাড়ী প্রদত্ত হইয়াছে ॥৬ রতিরামের গৌরবল্লভ ও হরবল্লভ নামে দুই পুত্র ন্যায়শাস্ত্র অধ্যয়নের জন্য মিথিলা গমন করিয়াছিলেন, তন্মধ্যে হরবল্লভ উপাধি পরীক্ষায় "তর্কভূষণ” খ্যাতি লাভ করেন। উপাধি প্রাপ্তির পর তিনি মুর্শিদাবাদ রাজধানীর সন্নিকটে গঙ্গাতীরে তপস্যাতে রত হইয়াছিলেন। সিদ্ধমালা অমাবস্যাতে চন্দ্রোদয়ের বিচিত্র কথা ইতিপূৰ্ব্বে বহুস্থানে বলা গিয়াছে; মুর্শিদাবাদের নবাব সভায় এক অমাবস্যা তিথিতে এই নৈয়ায়িক পণ্ডিত নাকি ভ্রমতঃ সেদিন পূর্ণিমা বলিয়া ফেলেন ও পরে নিজ বাক্যের সত্যতা পালনার্থে তপোবনে চন্দ্র প্রদর্শন করিয়াছিলেন । নবাবগণ পণ্ডিত ৬. উক্ত দানপত্র (নং ৭৫) এইঃ "ইআদিকিদ সকল মঙ্গলালয় শ্রীরতিরাম ভট্টাচাৰ্য সদাসএসু পত্র মিদং কার্জ্যঞ্চ আগে তুমার মিরাস মৌজে রামেশ্বর মহল্লা মহাসহস্ৰ সুনারাম কানুনগবই দিগির (দীর্ঘীর) দক্ষিণ পব (পাবেতে) জে ভূমি খানেবাটী রহিয়াছে এই বাটী লাখিরাজ করিয়া দিলাম এর (ঐ জমি) আমল তছরূপ কবিয়া ভোগ করিয়া দও। করহ। ইতি ১১০৭ সন তারিখ ১০ জেলহজ্জ । তপছিল-খানেবাড়ী-মোয়াজি । (একদিকে দেওয়ান ইসমাইলের পারস্য দস্তখত আছে।)