পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/২১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায় : ইটার কাত্যায়ন, পরাশর ও ভরদ্বাজ গোত্রীয় শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২১৩ মৃত্যুর অব্যবহিত পূৰ্ব্বে তিনি সঙ্কল্প করিয়াছিলেন যে, “ধৰ্ম্মচন্দ্রিকা" নাম দিয়া রঘুনন্দনের ২৮ তত্ত্বের ন্যায় ২৮ খানা গ্রন্থ প্রকাশিত করেন। কিন্তু কঠোর কাল তাহার মনোভিলাষ পূর্ণ হইতে দেয় নাই। দেশের দুর্ভাগ্য এই সকল গ্রন্থ প্রকাশিত হইতে পারিল না। কাত্যায়ন গোত্রের অনেকজন সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত ইটায় ছিলেন, বৰ্ত্তমানেও আছেন, তন্মধ্যে পঞ্চগ্রাম বাসী শ্ৰীযুত রাম কমল শাস্ত্রী মহাশয়ের নিকট হইতে আমরা নানা বিষয়ে সহায়তা প্রাপ্ত হইয়াছি। এই বংশ বিবরণ তৎপ্রদত্ত । কাছাড়ী ও দেবীপুরের পরাশর গোত্রীয় ব্রাহ্মণ বিবরণ আদি কথা পরাশর গোত্রীয় সাম্প্রদায়িক ব্রাহ্মণগণ ইটার কাছাড়ী ও দেবীপুর গ্রামবাসী। আদি ধৰ্ম্মার যজ্ঞাগত পুরুষোত্তম পঞ্চখণ্ডে বাস করেন। পঞ্চখণ্ড হইতে একশাখা পরে ইটায় বিস্তৃত হয়। পূৰ্ব্ববৰ্ত্ত ২য় খণ্ডে পরাশর গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণের কথা কথঞ্চিৎ কথিত হইয়াছে। পুরুষোত্তম হইতে ত্রয়স্থিংশ্য পৰ্য্যাযে৩ রমাপতির উদ্ভব হয়, ইনি সুপণ্ডিত ও সিদ্ধপুরুষ ছিলেন; ইহার পুত্র রামগোবিন্দ তর্কালঙ্কার প্রভৃতি কাছাড়া গ্রামবাসী এবং কনিষ্ঠ রামনাথ বংশীয়গণ দেবীপুর গ্রামবাসী হন। জাতক প্রদীপ প্রণেতা রাম গোবিন্দ তর্কালঙ্কার অসাধারণ তার্কিক ছিলেন। ইনি শ্রীহট্টের নবাব হইতে ব্ৰহ্মত্র ভূমি প্রাপ্ত হন বলিয়া কথিত আছে। তাহার ভ্রাতা মুকুন্দ বিশারদ জ্যোতিষ সম্বন্ধীয় একখানা সুন্দর গ্রন্থ রচনা করিয়া যশস্বী হইয়া গিয়াছেন। ঐ গ্রন্থ অদ্যাপি শ্রীহট্টের চতুষ্পাঠী সমূহে আনীত হইয়া থাকে, ইহার নাম "জাতক প্রদীপ " শ্যামানন্দ নামে এই বংশে পরবত্তী কালে আর এক ব্যক্তি শাস্ত্রলোচনায় প্রসিদ্ধি লাভ করেন । দেবীপুর শাখায় রমাকান্ত বিদ্যাবাগীশ মহাপণ্ডিত ছিলেন; তাহার ভ্রাতুষ্পপুত্র শিবচরণ বিদ্যানিবাসের খ্যাতি অদ্যাপি বিলুপ্ত হয় নাই; ইহার পৌত্র কাশীচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মৃতিতীর্থ মহাশয় তাহার “বৈদিক নির্ণয়” গ্রন্থ প্রেরণে আমাদের সহায়তা করিয়াছিলেন। কিন্তু এই গ্রন্থে নানা অযথাবাদ পরিদৃষ্ট হয়। টেংরার ভরদ্বাজ গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণ আদি কথা মহারাজ আদি ধৰ্ম্মপার যজ্ঞে ভরদ্বাজ গোত্রীয় গোবিন্দচার্য্য মিথিলা হইতে আগমন করেন বলিয়া কথিত আছে । গোবিন্দাচাৰ্য্য বংশের আদি কথা অতি অল্পই জ্ঞাত হওয়া যায়। কোনও মতে গোবিন্দ বংশীয় চন্দ্রকান্ত শিরোমণির তিন ভ্রাতার মধ্যে সৰ্ব্ব জ্যেষ্ঠ সাধুহাটীবাসী হন; মধ্যম জয়ানন্দ শিকদারের বংশধর বর্গ বালিশিরার রাজপুর গ্রামের অধিবাসী বলিয়া গণ্য হন; বলভদ্ৰ সৰ্ব্ব কনিষ্ঠ ছিলেন, বলভদ্র বিশারদের বংশীয়গণ লংলার বিশারদবংশ্য বলিয়া খ্যাত । এই বংশীয় জগন্নাথ শিরোমণি নামক অপর একব্যক্তি লংলার ভটেরপাড়া গ্রাম বাসী হন বলিয়া আশ্রীহট্টের ইতিবৃত্তেরতয় ভাগ ৩য় খণ্ডে ঢ পরিশিষ্ট দ্রষ্টব্য।