পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ অধ্যায় : প্রাচীন দত্ত-বংশ বিবরণ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২৩৭ তাহার অগ্রজ রামনারায়ণ, তদগ্রজ (অর্থাৎ তাহাদের সৰ্ব্ব জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাই) রাধা বল্লভ দত্ত। হরিদাসের কথা বলা হয়েছে, হরিদাসই ভুনবীর দত্ত বংশের আদি। হরিদাসের কনিষ্ট পৌত্র বসন্তদত্তের পুত্র সন্তান ছিল না, তাহার একমাত্র কন্যাকে শ্রীনাথ তলাপাত্র সহ বিবাহ দেন।১১ বসন্তদত্তের জ্যেষ্ঠ পুত্র বুদ্ধিমন্তের প্রথম পুত্রের নাম মহেশ দত্ত। ইহার এক পৌত্র “স্ত্রী হেতু” লংলায় গমন করেন। বুদ্ধিমত্তের ২য় পুত্রের নাম শ্রীরাম; রতন রাম নামে ইহার এক পৌত্র দৌলতপুর গমন করেন। এবং অপর পৌত্র দয়রাম আগনাতে চলিয়া যান। বুদ্ধিমত্তের অপর পুত্রের নাম শ্রীনাথ। ইহার দুই পৌত্র রতন ও রঘুদত্তের শাখা (পরিশিষ্টে) বংশ-তালিকায় উদ্ধৃত হইয়াছে; ইহার অপর পৌত্র ধনরাম “চৌধুরাই লাগি উজড়িল দেশ" বলিয়া বর্ণিত আছে। ভীমশীর দত্ত f ভীমশীর দত্ত পরিবারের আদি শ্ৰীমন্ত রায়ের প্রপৌত্র তিলক রাম যে এক প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন, তাহা গোপীনাথ দত্তের লিখিত— “তা সবের তিলকরাম হইলা সৰ্ব্ব জৈষ্ঠ । বাঙ্গলার মধ্যে যার নাম হইল শ্রেষ্ঠ॥" শ্ৰীমন্তরায়ের পুত্র চন্দ্র রায়ের বংশে বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের বিশেষ প্রভাব লক্ষিত হয়; এই বংশে প্রায় ছয়জন গৃহত্যাগী বৈষ্ণব হন, তন্মধ্যে বড় মোহন্ত পৰ্ব্বত প্রধান ব্যক্তি। এই বংশে হরিশ্চন্দ্র রায়ের পুত্র রমানাথ “দীঘল ঠাকুর" বলিয়া আখ্যাত হইতেন। চন্দ্ররায়ের অপর পুত্র কালীদত্ত বালিহীরা খারিজা হওয়ার কালে বিজয়পুরের শিকদার নিযুক্ত হন। বিজয়পুরের উল্লেখ পূৰ্ব্বে একবার করা গিয়াছে ১২ কালীদত্তের শেষ বংশধর গোবিন্দ গৃহত্যাগী হওয়ায় পাহাড় সন্নিকটবৰ্ত্তী বিজয়পুর উজাড় হইয়া যায়। পরগণা-ইটা কানুনগো বংশ-কথা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে একটি কানুনগো বংশের কীৰ্ত্তিকথা বর্ণিত হইয়াছে ১৩ সেই কানুনগো বংশ হইতে ইহা ভিন্ন। এই বংশীয় দত্তগণ রাঢ়দেশের পশ্চিম-বট গ্রাম হইতে ইটায় ১১. পৈলে বৰ্ত্তমানে তলাপাত্র-বংশ বলিয়া কোন বংশ নাই । ঢ পরিশিষ্টেব লিখিত বংশ তালিকায় নামাবলী ও একে অন্যের সম্বন্ধ দ্রষ্টব্য । ১২. “দত্ত বংশাবলীতে ইহার সীমা এইরূপ লিখিত আছে, যথা— উত্তরে লালপুর, পূৰ্ব্বে উদয়পুরের পাহাড়, দক্ষিণে ডালাউড়া ও শঙ্কর সেনা। পশ্চিম সীমা লিখিত হয় নাই ।” ১৩. বিভিন্ন কানুনগো বংশ। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তে পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৯ম অধ্যায় ইটার নদী উদ্বাস্থ অৰ্জ্জুন বংশের বিবরণ বর্ণিত হইয়াছে। নদীরাম অৰ্জ্জুন সেই বংশের আদিপুরুষ; ইহার নামেই নদীউড়া গ্রামের নাম হয়। সেই বংশ হইতে এই বংশ ভিন্ন। উক্ত অৰ্জ্জুন বংশের কথা এই অধ্যায়ে কথিত হইতেছে। তৰ্ত্তিন হরবল্লভ দত্ত কানুনগোইর বংশ বিবরণও পূৰ্ব্বোক্ত ৯ম অধ্যায়ে কথিত হইয়াছে। হববল্লভের পুত্রই সুপ্রসিদ্ধ শ্যামরায় দেওয়ান। ইহার বংশ কাহিনী পাঠক পূৰ্ব্বেই জ্ঞাত হইয়াছেন। হরবল্লভ দত্ত কানুনগোও মেদিনীধরের বংশ সম্ভৃত, সুতরাং আমরা যে বংশ সম্বন্ধে এস্থলে ২৪টি কথা বলিতে উদ্যত হইতেছি, সে বংশ ও হরবল্লভের বংশ একই মূলোৎপন্ন বলিয়া বোধ হইতেছে। এস্থলে হরবল্লভের বংশের একটি ধারা উদ্ধৃত করিতেছি, যথা- হরবল্লভ, তৎপুত্র শ্যামরায় দেওয়ান (ইহার কথা ২য ভাগ ২য় খও ৯ম অধ্যায়ে দেখ), তৎপুত্র রামকান্ত, তৎপুত্র দেবীপ্রসাদ, তৎপুত্র গুরুপ্রসাদ, তৎপুত্র গোলক চন্দ্র, তৎপুত্র শ্রীযুক্ত অশ্বিনী কুমার দত্ত জীবিত আছেন।