পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম অধ্যায় : মোসলমান বংশ বিবরণ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩৪৩ এবং আতা উল্লার পুত্র গোলাম আলী। কুরবান উল্লার ফরজন্দ আলী নামে এক পুত্র হয় এবং গোলাম আলীর পুত্রের নাম জুবের আলী, ইহাদের উভয়ের নামেই দুইটি হিস্কা আছে।১১ ফরজন্দ আলীর পুত্র আরজুমন্দ আলী, তৎপুত্র ইবনে আলী অতি সাধু ও বিদ্বান এবং বুদ্ধিমান ব্যক্তি ছিলেন; ইহার সুযোগ্য পুত্র আবদুল সাত্তার, আবদুল জব্বার প্রভৃতি জীবিত আছেন। অন্যশাখায় জুবের আলীর পুত্র সহেবর আলী তৎপুত্র মৌলানা আওলাদ আলী অতিশয় বিদ্বান ব্যক্তি ছিলেন, ইহার পুত্রও একজন মৌলবী; তিনি জীবিত আছেন। পাঠান বং প্রভৃতি নামগুলি পাঠানবিজয়ের কথা সূচিত করিয়া থাকে। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশে খোয়াজ ওসমান খাঁর তরফ, ইটা প্রভৃতি বিজয়ের উল্লেখ করা হইয়াছে, সেই সময়ে পূৰ্ব্বাঞ্চলের অনেক জন জমিদার একতাসূত্রে পরস্পর আবদ্ধ হইয়াছিলেন; প্রতাপগড়ের জমিদার বাজিদ তন্মধ্যে অন্যতম। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় যে, খোয়াজের সহযোগী তরফাত্রমণকারী বাজিদের সহিত সৈয়দ বংশে সম্বন্ধ থাকা দৃষ্ট হয়। নরপতির প্রাচীন বংশ তালিকায় লিখিত আছে যে, সৈয়দ খোদাবন্দের কনিষ্ঠ পুত্র আরেজ বা জিবরাইলের১২ পুত্র কলন্দর, বাজিদের কন্যা বিবাহ করিয়া ছিলেন; আবার ইহারই ভ্রাতা লস্করপুরের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ মুসা, প্রতাপগড়ের রহমত খার (?) কন্যা বিবাহ করিয়াছিলেন । খোয়াজ ওসমান খার জনৈক সেনাপতি-পুত্র ওসমান নামে খ্যাত ছিলেন, তিনি তরফের পাঠান টোলাতে বাটিকা নিৰ্ম্মাণ করিয়া বাস করেন; তাহার পুত্রের নাম করিম খা । তৎপুত্র রহিম খা, তাহার পুত্র সাবির খা, সাবিরের কবির খা নামে এক পুত্র হয়; তাহার পুত্র সুলতান খা, ইনি অতি তেজস্বী বীরপুরুষ ছিলেন: ইনি পাঠান টোলা ত্যাগ করিয়া বালিয়ারি গ্রামে বাস করেন। তাহার পুত্র ডেসুখার তিন পুত্র হয়, তন্মধ্যে এক পুত্রের নাম নুর মোহাম্মদ ইহার পুত্র মোনশী নজীব উল্লা খা, তাহার পুত্রের নাম মোনশী আসিম উদ্দীন আহমদ । আসিম উদ্দীনের পুত্র মোনশী আবদুল সুবহান ও তদীয় পুত্ৰ বৰ্ত্তমান আছেন। পাঠান বংশীয়গণের বিস্তৃত বিবরণ সংগৃহীত হইতে পারে নাই। পরগণা-গিয়াস নগর সৈয়দ গদাহাসনের ভ্রাতা গিয়াসের কথা পূৰ্ব্বে বলা হইয়াছে, তরফ হইতে তাহার নিজ নামে গিয়াসনগর পরগণা খারিজ করিয়া নেওয়ার কথাও পূৰ্ব্বে১৩ উল্লেখিত হইয়াছে। কাশিমনগর, বেজোড়া, লাখাই, তরফ প্রভৃতি পরগণা হইতে ভূমি গ্রহণপূৰ্ব্বক এই নূতন পরগণা সৃষ্টি করা হয়। মাধবপুরের অন্তর্গত চাড়াডাঙ্গায় গিয়াসের কবর আছে। গিয়াসের জ্যেষ্ঠপুত্র নিজামউদ্দীন মৌজপুর গ্রামে গিয়া বাস করেন। গিয়াসের বংশধরগণ মৌজপুর, চাড়াডাঙ্গা এবং লাকুড়িপাড়া গ্রামে অবস্থিতি করিতেছেন। ১১. উক্ত উভয় তালুক ও তৎসংসৃষ্ট হিম্বার রাজস্ব দি এইঃ ৭নং তাং হবিব উল্লার রাজস্ব ৬৪৭ ১০ পাই, ভূমি পরিমাণ ৯০২ একর। ১নং হিম্বা ফরজন্দ আলীর রাজস্ব ৪১৪=১০ পাই, ভূমি পরিমাণ ৫০৯ একর। ১০৫০নং তাং হইতে জুবের আলী নিজ নামে একটি হিম্বা পৃথক করেন। ১২. ইহার নাম শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড খ পরিশিষ্টে লিখিত হইয়াছে। ১৩. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (পূৰ্ব্বাংশ) ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৫ম অধ্যায়।