পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০৮ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত চতুর্থ ভাগ “শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের উপাদান মধ্যে শ্রীহট্টবাসী পণ্ডিতগণের যে সকল সাক্ষ্য বাক্য আছে তাহা এস্থলে উদ্ধৃত করা নিম্প্রয়োজন—কেন না, তাহা আপাততঃ পক্ষপাত দুষ্ট বলিয়া উপেক্ষিত হইতে পারে। তাই শ্রীহট্টের অধিবাসী ভিন্ন যে সকল সন্ত্রান্ত ব্রাহ্মণ পণ্ডিত এ বিষয়ে অভিমত প্রকাশ করিয়াছেন, তাহাই উল্লেখিত হইতেছে। কলিকাতা সংস্কৃত কলেজ সবিনয় নিবেদনমেতৎ ২৫শে শ্রাবণ ১৩২১ “রঘুনাথ শিরোমণির জন্মস্থান শ্রীহট্টই, এরূপ কিংবদন্তী আমরা শিশুকাল শুনিতেছি। অধ্যাপক মহাশয়দিগের নিকটেও এইরূপ শুনিয়াছি। পণ্ডিত মহাশয়গণ সকলেই এরূপ বলেন। তাহারাও অধ্যাপক পরম্পরায় এরূপ অবগত হইয়াছেন। ইহার বিরুদ্ধে কথা এ যাবৎ আর শুনি নাই। শ্রীযুক্ত গুরুচরণ তর্কদর্শনতীর্থ (মহামহোপাধ্যায়) মহাশয়ও এরূপ বলিলেন। তিনিও নিজ অধ্যাপকের নিকট এবং অন্যান্য পণ্ডিতবর্গের নিকট হইতে এরূপ অবগত আছেন। আমাদের কলেজের অন্যান্য পণ্ডিত মহাশয়গণের নিকট জানিলাম তাহারাও এই কিংবদন্তী অবগত আছেন এবং বিশ্বাস করেন। পূজ্যপাদ স্বগীয় চন্দ্ৰকান্ত তর্কালঙ্কার মহাশয় সোসাইটি হইতে প্রকাশিত কুসুমাঞ্জলির ভূমিকার একথা লিখিয়াছেন। সেই লেখা এইরূপ। রঘুনাথ শিরোমনিঃ প্রসিদ্ধ স্মার্থে রঘুনন্দনশ্চ পূৰ্ব্ববঙ্গ বাস্তব্য আসীৎ। গদাধরোহপু্যত্তর বঙ্গ বাস্তব্যঃ । পশ্চান্নবদ্বীপে অধীত্য তত্রৈব নিবাসং চক্রঃ । তদেবং নবদ্বীপে যে প্রসিদ্ধ গ্রন্থকার আসনৃ তে প্রায়োবঙ্গদেশীয়া এবেতি জ্ঞায়তে ।” "রঘুনাথ শিরোমণি শ্রীহট্টবাসী, এই কিংবদন্তী অবাধে পুরুষানুক্রমে সৰ্ব্বত্র জাজ্বল্যমান ভাবে প্রচলিত আছে। ইহার বিরুদ্ধে কোনও গ্রন্থের উক্তি বা প্রবাদের কণিকামাত্র নাই। এই অবস্থায় এই কিংবদন্তী প্রমাণরূপে গৃহীত হইবার সম্পূর্ণ উপযুক্ত বলিয়া আমরা মনে করি। শ্রীযুক্ত তর্কদর্শন তীর্থ মহাশয়ের এইরূপ মত। অনুগ্রাহ্য শ্ৰীযামিনীনাথ শৰ্ম্মণঃ।” “ইনি ময়মনসিংহের পণ্ডিতরত্ন (সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক) শ্রীযুক্ত যামিনী নাথ তর্কবাগীশ মহাশয়। মহামহোপাধ্যায় দৰ্শনতীর্থ মহাশয়ের বাড়ীও ত্রিপুরা জেলায়। অর্থাৎ কেহই শ্রীহট্টের লোক নহেন। ইহারা পূৰ্ব্ববঙ্গের অধিবাসী এখন পশ্চিমবঙ্গের পণ্ডিতগণ কি বলেন দেখা যাউক । “শ্রীহট্টের ইটাবাসী পণ্ডিতবর শ্রীযুক্ত মহেন্দ্রনাথ কাব্যসাংখ্যতীর্থ মহাশয় বোধ হয় প্রাগুক্ত লেখক মহাশয়ের প্রবন্ধ পাঠে বিচলিত হইয়া এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকজন পণ্ডিতের মত সংগ্রহ করেন। কিয়দিন হইল তিনি লিখিয়াছেন—“পূজ্যপাদ শ্রীযুক্ত পঞ্চানন তর্করত্ন মহাশয় বলেন রঘুনাথ শ্রীহট্টের কি না নিশ্চয়ই জানিনা, কিন্তু তিনি পূৰ্ব্বদেশীয় ছিলেন এবং অতি অল্প ১১ড,"প্রতিভা" নামক মাসিকপত্রের জনৈক লেখক রঘুনাথকে শ্রীহট্টের লোক বলিতে অনিচ্ছুক হইযা ঐ পত্রে এ বিষয়ে প্রবন্ধ লিখেন। শ্রীহট্টবাসী দুই লেখক তাহার প্রবন্ধের উপযুক্ত উত্তর আনন্দবাজার ও সুরমা পত্রিকায় ধারাবাহিকরূপে প্রকাশ করেন। ঐ সকল বাদ প্রতিবাদ দৃষ্টে সৌরভ পত্রিকার সম্পাদক মহাশয় শ্ৰদ্ধেয় শ্ৰীযুক্ত পদ্মনাথ ভট্টাচাৰ্য বিদ্যাবিনোদ তত্ত্ব সরস্বতী মহাশয়কে প্রকৃত ব্যাপার জিজ্ঞাসিলে তিনি যে উত্তর প্রবন্ধ ১৩২১ বাং মাঘ মাসের সৌরভে লিখেন তাহার কথাই বলা যাইতেছে। (ঐ প্রবন্ধই দ্রষ্টব্য )