পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৫৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫২ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত চতুর্থ ভাগ স্ত্রীকবি হেমপ্ৰভা হবিগঞ্জের অন্তর্গত ষাটিয়াজুরি নিবাসী মুনসেফ শ্রীযুক্ত উপেন্দ্র কুমার কর বি এল মহাশয় ইহার স্বামী। স্বগীয় উকীল শরৎচন্দ্র দত্ত ইহার পিতা ছিলেন। ইনি “বামা বোধিনী" পত্রিকাতে প্রায়ই সুন্দর কবিতা লিখিতেন। গত ১৩২০ বাংবৈশাখ মাসে ২৫ বৎসর বয়সে ইনি পরলোকগতা হইয়াছেন। হরনাথ চক্রবর্তী হরনাথের বাসস্থান হবিগঞ্জের অন্তর্গত বেকিটেকার আসেরা গ্রাম। হরনাথ পণ্ডিত ব্যক্তি ও শিবোপাসক ছিলেন । শিবমন্দিরে প্রবিষ্ট হইয়া শিবকীৰ্ত্তন করাই উপাসনার অঙ্গ বলিয়া বোধ করতঃ তাহাতেই রত থাকিতেন। তিনি গঞ্জিকা ও মদ্য গ্রহণে কুষ্ঠিত ছিলেন না; কিন্তু তজ্জন্য তিনি অশ্রদ্ধাভাজন ছিলেন না; মহাত্মা বলিয়া লোকে তাহাকে ভক্তি করিত। লাতুর পার্শ্ববৰ্ত্তী চালদিয়া পল্লীতে তাহার মাতুলালয় ছিল, তথাকার গোপীমোহন নামক এক ব্রাহ্মণতনয় তাহার বাড়ীতে থাকিতেন। বর্ষাকালে সেই অঞ্চল জলপ্লাবিত হইলে এক সময় তাহার শিবমন্দিরের ৩০ হস্ত আন্দাজ উত্তরে বনান্তরালে তিনি মলত্যাগ করিয়াছিলেন। রাত্রে আহারান্তে শয্যায় যাইতে গোপীমোহন দেখিলেন যে একটা শৃগাল গৃহমধ্যে প্রবিষ্ট হইল। ঘরে বাতি ছিল, গোপীমোহন তৎক্ষণাৎ প্রবিষ্ট হইয়া কোথাও শৃগালকে দেখিতে পাইলেন না। তখন নিশ্চিত মনে শয়ন করিলেন। কিন্তু নিদ্রাবেশ হইলে, শৃগালে যেন তাহার গলদেশ কামড়াইয়া ধরিয়াছে, এইরূপ স্বপ্নদৃষ্টে জাগিয়া গেলেন ও পাশ ফিরিয়া শুইলেন; এবারও পুনঃ সেই স্বপ্ন। তখন জাগিয়া “উবুড়" হইয়া শুইলেন, কি জঞ্জাল! এবারও তদ্রুপই দংশন স্বপ্ন! এবার আর তিনি শুইলেন না, উঠিয়া বাহিরে আসিলেন। তখনও অধিক রাত্রি হয় নাই, দেখিলেন হরনাথ বাবান্দায় বসিয়া রহিয়াছেন। গোপীমোহন হরনাথকে স্বপ্নবৃত্তান্ত বলিলেন, শুনিয়া হরনাথ যেন একটু ধ্যানস্থ হইলেন, তারপর বলিয়া উঠিলেন “মন্দির সন্নিকটে মলত্যাগ করিয়াছিলেন কেন? এখন শিবের কাছে দুধকলা মানস করিয়া শুইয়া থাক।” গোপীমোহনের বহির্দেশ গমনের কথা মনে হইলে, তিনি ज्ञाशिनी_ञाश्ध्निीं । “(সেই তোর কি দোষ কেল রে জানম, মুই তোর কি দোষ কৈল?) আরজু ফরদম রুিহ এ] তু দিদম্ (তন মন পাগল ভৈলু।) হামচু + মজনু বাহরে তু লেয়লি (ভাবিয়া ব্যাকুল হৈলু রে জানম্ ) ইমৃরুজ ফজবে দিলবরে জানম্ (আসিবার বলিয়া গেলে!) রুজ গুমাপ্তা কাম রসিদা আফতক (তুই ঘরে না আইলে রে জানম্।) চসমে চু আই চিনি বুদবুদ, চান্দানে চুদানে আনার এস্কে তোমরা মারানা মুদি কালুবালা (চিত্তে ধইলু) শালে মূল গয়ের তরেহিম রওসন (মুই তোর অন্ত না পাইলু রে জানম্) লাতক না তুমির রহমতুল্লাহে কুতুবে মান্দামে (হিয়া) ইন্নাল্লা ইনফেরু জনুবা) (ভুলিয়াছ নি তুমি) বা জানম্ (মুই তোর কি দোষ কৈলু?)” এই সঙ্গীতটি বাঙ্গালা, পারস্য, হিন্দি, আরবি, সংস্কৃত প্রভৃতি ভাষার শব্দ সংযোগে রচিত। ( ) বন্ধনী মধ্যস্থ পদ বাঙ্গালায় লিখিত, “+” চিহ্নিত শব্দগুলি হিন্দি : + চিহ্নিত নাম দুইটি প্রেমিক প্রেমিকার। ইহাদের অর্থাৎ মজনু ও লেয়লির প্রসঙ্গে এই আধ্যাত্মিক সঙ্গীত রচিত হয়। "+" চিহ্নিত শব্দ সংস্কৃত এবং [ ] বন্ধনী মধ্যস্থ পদগুলি আরবি বাকি সমস্ত পারস্য ভাষায় লিপিত। রামশ্রীর সৈয়দ শ্রীযুক্ত সাজিদুব রহমান সাহেব হইতে ইহা প্রাপ্ত হইয়াছি।