পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৬১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১৮ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত চতুর্থ ভাগ মহাশয় শ্রীহট্ট সম্বন্ধীয় জ্ঞাতব্য এমন অনেক বিষয়ের উল্লেখ করিয়াছেন, যে সকল বিষয় ইতঃপূৰ্ব্বে আর কেহ কখনও সাহিত্য সমাজে প্রকাশ করেন নাই। যদি গ্রন্থকার মহোদয়ের গবেষণার সেই সকল বিষয় এই গ্রন্থে সন্নিবেশিত না হইত, তাহা হইলে কালে সেই সকল ঘটনা লোকের জ্ঞানের সীমা হইতে হইত না। আমরা এই গ্রন্থখানিকে শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত বলিব কিম্বা শ্রীহট্ট সীমা হইতে বিলুপ্ত হইয়া যাইত। আমরা এই গ্রন্থখানিকে শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত বলিৰ কিম্বা শ্রীহট্ট সম্বন্ধে এনসাইক্লোপিডিয়া বলিব, তাহাই এক বিচাৰ্য্য বিষয় বলিয়া আমাদের মনে হইতেছে। শ্ৰীযুক্ত অচ্যুতচরণ তত্ত্বনিধি মহাশয়ের ভাষা সৰ্ব্বত্রই সরল প্রাঞ্জল ও চিত্তাকর্ষী। আমরা এই ইতিহাসেও তাহার সুস্পষ্ট বহুল উদাহরণ দেখিতে পাইয়া বিমুগ্ধ হইলাম। দয়াময় শ্ৰীভগবান গ্রন্থকারকে দীর্ঘজীবী করিয়া তাহার দ্বারায় এই মহৎ কাৰ্য যথাসম্ভব সত্বরে পরিসমাপ্ত করাইবেন, ইহাই বাঞ্ছনীয়। বৰ্ত্তমান খণ্ডের মূল্য ৪ টাকা। পল্লীবাসী—১৯ শে আষাঢ় ১৩১৯ সাল। “শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত।” “সৎগ্রন্থের প্রকাশে সৎসাহিত্যের প্রচার;—সৎসাহিত্যের প্রচারে সাহিত্যিকের আনন্দ। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পাঠে আমরা এমনই আনন্দ পাইয়াছি। প্রণেতা শ্ৰীযুক্ত অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি মহাশয় বৈষ্ণব সাহিত্যে সুপরিচিত—“পল্লীবাসীর” আশৈশব সুহৃদ-আমাদের পরম প্রেমাম্পদ। তাই সাহিত্যিক অচ্যুতচরণকে আজ ঐতিহাসিক হিসাবে অভিনন্দন করিতে গিয়া আমরা একটু গৌরবও অনুভব করিতেছি। তত্ত্বনিধির ভাষালেখায় খাসা হাত। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তে তাহার পরিচয় পাই। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত এক বিরাট ব্যাপার। শ্রীহট্ট সম্বন্ধে জ্ঞাতব্য এমন কোনও ভৌগোলিক বা ঐতিহাসিক তথ্য নাই, যাহা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের সমালোচ্য পূৰ্ব্বাংশে সন্নিবেশিত হয় নাই। Sk Sk 水 ইতিবৃত্তটিকে সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর করিতে গ্রন্থকারের যত্নের কোনটি ক্রটি নাই। গ্রন্থশেষে যে দুইটি পরিশিষ্ট সংযোগ করা হইয়াছে, তাহাও নিতান্ত দুপ্রাপ্য ও মূল্যবান। এই বিরাট গ্রন্থের পরিসমাপ্তি করিতে ধৈৰ্য্য ও অধ্যবসায়, পুরাতত্ত্বাভিজ্ঞতা ও লিপিকুশলতার প্রয়োজন, তত্ত্বনিধি মহাশয় তাহার যথেষ্টই পরিচয় দিয়াছেন। কিরূপে আজ আট বৎসরের চেষ্টা ও যত্নে এবং অচ্যুতবাবুর একান্ত অধ্যবসায়ে এই বিরাট গ্রন্থ লোক সমাজে প্রকাশিত হইয়াছে, শ্রীযুক্ত পদ্মনাথ ভট্টাচাৰ্য্য বিদ্যাবিনোদ মহাশয় ভূমিকায় তাহা স্পষ্টই উল্লেখ করিয়াছেন। আমরা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের প্রথম ও দ্বিতীয়ভাগ পড়িয়া অনেক লিখিলাম। অবশিষ্ট তৃতীয় ও চতুর্থ ভাগ প্রকাশিত হইলে, বাঙ্গালীর মঙ্গল-বঙ্গ সাহিত্যের উন্নতি । আমাদের জাতীয় ইতিহাস নাই বলিয়া এতদিন যে একটা কলঙ্ক, এই শ্রেণীর গ্রন্থ যত অধিক প্রচার হইবে, ততই তাহার ক্ষালন হইবে। এই মূল্যবান গ্রন্থ সংস্কলন করিয়া তত্ত্বনিধি মহাশয় বঙ্গসাহিত্যে বিজয়কীৰ্ত্তি রক্ষা করিয়াছেন। শ্রীভগবানের নিকট প্রার্থনা করি,—গ্রন্থকার তাহার ইতিবৃত্ত খানি সম্পূর্ণ করিয়া ধন্য হউক।