পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায় : বুরুঙ্গা, রেঙ্গা ও ঢাকাদক্ষিণের ব্রাহ্মণ বং শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৮১ এবং “উগাহী” শব্দের নীচে “শ্রীমছউদবখত” নাম লিখিত আছে।) উক্ত রামকৃষ্ণের পুত্রের নাম রঘুনাথ ভট্টাচাৰ্য্য, তৎপুত্র রতিনাথ বিশারদ, তাহার পুত্র শ্ৰীযুক্ত রোহিণী নাথ জীবিত আছেন। পরগণা-ঢাকাদক্ষিণ রায়গড়ের সাম্প্রদায়িক বৎসগোত্রীয় ব্রাহ্মণ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশে সাম্প্রদায়িক ব্রাহ্মণগণের বিবরণ প্রসঙ্গে ২য় খণ্ডের ৭ম অধ্যায়ে বলা গিয়াছে যে ইটার রাজা সুবিধ নারায়ণের সময়ে এক সামাজিক বিবাদমূলে বৎস গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণ ঢাকাদক্ষিণ, লংলা ও তরফ প্রভৃতি পরগণায় গমন করেন। ঢাকাদক্ষিণে যিনি আগমন করেন, কথিত আছে তিনি প্রথমতঃ রণাডহর নামক স্থানবাসী ছিলেন, ইহার নাম কেশবমিশ্র,১১ ইহার জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম শ্ৰীবৎস ও তৎপুত্রের নাম পরমেশ্বর ছিল; পরমেশ্বরের জ্যেষ্ঠপুত্র মুকুন্দরাম ভট্টাচাৰ্য কোন কারণে রণাডহর পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক রায়গড় গ্রামে চলিয়া যান; তথায় রামকৃষ্ণ; কমলাকান্ত, গোবিন্দ, ও অনন্ত নামে চারিপুত্র হয়, ইহাদের বংশধরবর্গ সসম্মানে ঢাকাদক্ষিণে বাস করিতেছেন । রামকৃষ্ণের কথা গঙ্গারামের জ্যেষ্ঠপুত্র রামকৃষ্ণ তপোনিষ্ঠ ও ফলিত জ্যোতিষ শাস্ত্রে অদ্বিতীয় পুরুষ ছিলেন; তিনি মুর্শিদাবাদে গঙ্গাতীরে বহুদিন বাস করেন। কথিত আছে যে, একদা নবাব দরবারে উপস্থিত হইলে তপস্বী-বেশী রামকৃষ্ণকে নবাব তাহার নিরুদ্দিষ্ট জামাতা বাচিয়া আছেন এবং কোথায় আছেন, জিজ্ঞাসা করেন; রামকৃষ্ণ অঙ্কপাত করিয়া কিছুক্ষণ পরে উত্তর দেন যে তিনি অচিরাৎ আসিয়া পৌছিবেন । তাহার পরদিন জামাতা আসিয়া পৌছিলে, সকলেই বিক্ষিত হইয়াছিল এবং নবাব কর্তৃক শেষভাগে পুরস্কৃত হইয়াছিলেন। কেবল তাহাই নহে, নবাব তাহাকে জিজ্ঞাসা করা হইত। ইনি তাহার মীমাংসা পত্র প্রদান করিতেন, এবং তাহাই গ্রাহ্য হইত। তপস্বী রামকৃষ্ণের জ্যেষ্ঠপুত্র রাঘবেন্দ্ৰ সৰ্ব্বভৌম “পত্র নবিশ" পদ প্রাপ্ত হন, ইহার পরবর্তী ব্যক্তিগণও এই উপাধি ধারণ করিয়া আসিতেছেন। রাঘবেন্দ্র গুণী পুরুষ ছিলেন, মুর্শিদাবাদের নবাব হইতে বার্ষিক ৩৬৫ কাহন কোড়ি প্রাপ্তির সনদ তিনি লাভ করেন। ইহার দুই পুত্র জ্যেষ্ঠ শ্ৰীকৃষ্ণ ভট্টাচাৰ্য পিতার মৃত্যুর পর “পত্র-নবিশ" নিযুক্ত হন। ইহার পুত্রের মধ্যে রামকান্ত জ্যেষ্ঠ ছিলেন, তিনি জয়ন্তীয়া-পতি হইতে বাইওঙ্গপুর মৌজায় ১০/০ হাল ভূমি ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হন ও এক বিষ্ণুমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তাহার মধ্যম ভ্রাতাও একটি শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করিয়া পুণ্য অৰ্জ্জন করিয়াছিলেন । বংশাখ্যান শ্ৰীকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের কনিষ্ঠ ভ্রাতা রামশঙ্কর পিতামহ রামকৃষ্ণের ন্যায় তপস্বী ছিলেন এবং পিতামহের ব্যবহৃত স্ফটিকমালা ধারণ করতঃ সাধন করিতেন। রামশঙ্করের দুইপুত্র, তন্মধ্যে কনিষ্ঠ রামগোবিন্দ ব্যাকরণ ও স্মৃতিশাস্ত্রে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়া হেড়ম্বেশ্বর কৃষ্ণচন্দ্র নারায়ণের অন্যতম সভাপণ্ডিত নিযুক্ত হন। তিনি কাছাড়রাজ হইতে অনেক অর্থ প্রাপ্ত হইয়া শিবালয় ১১. পরিশিষ্ট ইহার বংশাবলী দেখ । শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত(উত্তরাংশ-তৃতীয় ভাগ)-৬