পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০০ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড ভবদেবের পুত্র কৃষ্ণরাম ভট্টাচাৰ্য্যও তত্ৰত্য সহদেবরায় ও উছবরায় হইতে ১৪ই চৈত্র ১১৭১ সালে সম্পাদিত এক দানপত্রে খানপুরে ৩/ হাল ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হন। ইহার চারিপুত্ররামগোপাল, রত্নাকর, রঘুপতি ও মহেশ্বর। তন্মধ্যে রঘুপতি খ্যাতিমান পুরুষ ছিলেন, তিনি “সাদেকুল হরমানিক”২৭ মোহারাঙ্কিত এক সনন্দে (নং ২৯০) ১৪ জলুসে বাজুসোণাইতা হইতে ৩ ০০দ০ ভূমি ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হন। ১২০৪ সালে তাহার মৃত্যু হইলে তদীয় ভ্রাতা মহেশ্বর উক্ত ভূমি “তছরূপ" করেন। রত্নাকর, রঘুপতি ও মহেশ্বরের বংশ এক্ষণে বিলুপ্ত। “তন্ত্র রত্নমালা" সঙ্কলিতা রামগোপালের পুত্রের নাম রাম রাম ভট্টাচাৰ্য্য, ইনি নিখিল তন্ত্র শাস্ত্র হইতে “তন্ত্র রত্নমালা" নামক একখানা সংগ্রহ গ্রন্থ সঙ্কলন করিয়া যশস্বী হইয়াছেন। রত্নাকরের পুত্রের নাম রামগোবিন্দ, ইনি গোহাটী গমন করিয়া তত্ৰত্য বড়ুয়া বংশীয় কয়েক ব্যক্তিকে শিষ্য করিয়াছিলেন। তন্ত্ররত্নমালাকার রামরামের চারিপুত্রের মধ্যে ৩য় ও ৪র্থ পুত্র রাম কেশব স্মৃতিরত্ন ও রামদয়াল ভট্টাচার্যের বংশ নাই; প্রথম পুত্র রামচরণ ও দ্বিতীয় পুত্র রামলোচনের সন্ততিবর্গই এক্ষণে সসম্মানে পৈতৃক ভিটায় বাস করিতেছেন। রায়নগরের ভট্টাচাৰ্য্য বংশ শ্রীহট্ট সহরের ভট্টাচাৰ্য্য বংশীয় ব্রাহ্মণ সম্বন্ধে ২/৪টি কথার উল্লেখ করিয়া এ খণ্ডের ব্রাহ্মণ বিভাগ সমাপ্ত করিতেছি। ইহার সাহু বণিক সম্প্রদায়ের ব্রাহ্মণ। শ্রীহট্টের পূৰ্ব্বাংশে ইটার রাজা সুবিদ নারায়ণের সভা পণ্ডিত পরাশর গোত্রীয় ব্রাহ্মণদের কথা বলা গিয়াছে, রাজকোপে তিনি পদচ্যুত হন, তাহার বংশ বহু বিস্তৃত। গৌতম গোত্রীয় তদীয় দৌহিত্র বংশ এবং কুটম্ব পূতিমাস প্রভৃতি গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণই তৎকালে সাহু সমাজের পৌরহিত্যে বৃত হইয়াছিলেন। বলা গিয়াছে যে, রাজা সুবিদনারায়ণ ও শ্রীহট্টের দেওয়ানের বিবাদ কালে শ্রীহট্ট শহরে দেওয়ানের উপলক্ষে এক সভা আহূত হয়,২৮ সেই সভায় সমাগত বহুতর ব্রাহ্মণ ও ভদ্রলোক পরে রাজকোপে সমাজত্যক্ত হন, সেই ব্রাহ্মণের মধ্যে কোন একজনের পৌত্র বা প্রপৌত্রের নাম কৃষ্ণকান্তভট্টাচাৰ্য ২৯ কৃষ্ণকান্তের সুদাম নামে এক পুত্র জন্মে, তাহার দুই পুত্র রাজারাম ও সুখদেব। এই দুই শাখা হইতে বংশ বিস্তৃতি ঘটিয়াছে। সফল স্বপ্ন সুদাম ভট্টাচাৰ্য্য একদা স্বপ্ন দর্শন করেন যে আমুড়া বিলে তিন কোলে গুপ্তধন প্রাপ্ত হইয়াছেন। প্রভাতে ব্রাহ্মণের মনে ধনলিন্সা জাগিয়া উঠিল তিনি অনতিবিলম্বেই আমুড়া বিলে গিয়া অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন; তথায় তিনি ধনের পরিবৰ্ত্তে এক অমূল্য রত্ন প্রাপ্ত হইলেন, তন্মধ্যে শ্রীবংশীধারী বিগ্রহ। অপর এক সুদাম বিপ্রের কথা পাঠক স্বরণ করুণ, দ্বাপর যুগের সেই দরিদ্র সুদাম ধমের আশায় বন্ধুর নিকট দ্বারকায় গিয়াছিলেন; কিন্তু সেই বংশীধারী পার্থিব ধনের পরিবৰ্ত্তে তাহাকে অতুল পারত্রিক সম্পদের অধিকারী করিয়াছিলেন। আমাদের প্রাগুক্ত সুদাম ভট্টাচাৰ্য্যও বংশীধারী বিগ্রহ লইয়া গৃহে আসিলেন, এবং নিজ ২৭ ്. মোহরের বিবরণ ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৪র্থ অধ্যায়ে দ্রষ্টব্য। ২৮. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৭ম অধ্যায় দ্রষ্টব্য।