পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জিলার সংক্ষিপ্ত কথা । ] শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত। গুলিতে অনেক জল হয়। শ্ৰীহট্টের পূর্বদিক ক্রমোন্নত এবং পশ্চিমাংশ নিয়। শ্ৰীহট্টের ভূমি অতি উৰ্ব্বর, বৃষ্টিপাত মাত্রেই মাটী কৃষ্ণবর্ণ পঙ্কাকার ধারণ করে। 韓 শ্ৰীহট্ট ঘন বসতি সমাচ্ছন্ন জনপদ হইলেও ইহার অনেক স্থান শোভ। জল ও জঙ্গলাবৃত। উত্তরে খাসিয়া ও জয়ন্তীয় পৰ্ব্বত এবং দক্ষিণে ত্রিপুরা পৰ্ব্বত উন্নত শীর্ষে দণ্ডায়মান থাকিয়া উভয় দিক্ রক্ষা করিতেছে। পূৰ্ব্বদিগ্‌ভাগে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাহাড় দণ্ডায়মান, এবং সুরম ও বরাক নদী পূৰ্ব্ব হইতে পশ্চিমাভিমুখে প্রবাহিত হইতেছে; সুরমা উপত্যকার মুরম্য প্রান্তর উভয় পাশ্বে বিস্তৃত রহিয়াছে। জঙ্গলাবৃত ভূমি পশ্চিমাংশে ক্রমশঃ হ্রাসত প্রাপ্ত হইয়াছে; এবং উত্তর-পশ্চিমাংশে জল ভূমির বাহুল্য পরিলক্ষিত হয়। শ্ৰীহট্টের প্রাকৃতিক দৃপ্ত নয়ন-মনোমুগ্ধকর। পাহাড়ের নীরব গভীর ভাবের বিশদ বর্ণনা, বিস্তৃত বন-সুষমার মাধুৰ্য্য প্রকীৰ্ত্তন, সহজ সাধ্য নহে। বনে বৃক্ষের সারি--বৃক্ষের পর বৃক্ষ, সরল সতেজ সুদীর্ঘ, শাখায়- শাখায় আকাশ সমাচ্ছন্ন। কোন কোন পুষ্টাঙ্গ বৃক্ষে স্থলাঙ্গী লতা ; লতায় লতায় ফুল,—সুন্দর দৃপ্ত। পাহাড়ের যে অংশে বংশবন, তথাকার শোভা অবর্ণনীয়,—শুধু অনুভব গম্য। ঈষৎ হরিদ্রাভ নবীন নধর শু্যামল পত্রাবলী বিশোভিত বংশদওশ্রেণী সজীবতা ও সৌন্দর্য্যের জীবন্ত ছবি। ক্রোশের পর ক্রোশ–দৃষ্টি যতদূর চলে, তরঙ্গের পর তরঙ্গ, অতুল জলধির ন্তায় চলিয়াছে। পার নাই—সীমা নাই, দেখিতে দেখিতে দর্শকের চিত্ত অজ্ঞাতে অভিভূত,—স্তম্ভিত হইয়া পড়ে ; দর্শককে আত্মহারা হইতে হয়। উদ্ধে দৃষ্টিপাত করিলে আর একরূপ দৃশ্য, শৃঙ্গের পর শৃঙ্গ, তাহার পর আরও উন্নত শৃঙ্গ, তদুপরি বিশাল বৃক্ষরাজি,—মহামহিমাময় দৃপ্ত। শ্ৰীহট্টের এই অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে বিমোহিত-চিত্ত কবি যথার্থই গাইয়াছেন ঃ– “প্রকৃতির ভাণ্ডারেতে শ্রীহট্টের মাঝে ; কত শোভা মনোলোভা সৰ্ব্বত্র বিরাজে। প্রতিভা প্রস্থত নয়, প্রকৃত বিযয় , দেখনা পথিক গিয়ে যদি মনে লয় ? “যে দেশের বন শোভা অতুলন ভবে, প্রকাও দীঘল ক্রম আপন গৌরবে