পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

brb" শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত । [২য় ভt: ২য় থ: ঢাকা বা মুর্শিদাবাদে আহবান করা হইত, নিমন্ত্রিতগণ ভাগ্যানুসারে তথায় বিবিধরুপ যন্ত্রণার আস্বাদ প্রাপ্ত হইতেন। এই অকথ্য অত্যাচার মুর্শিদকুলি ও তদীয় দৌহিতৃপতি দেওয়ান মোহাম্মদ রেজা খার নামের কলঙ্ক স্বরূপ হইয়া ইতিহাসের পৃষ্ঠায় অঙ্কিত রছিয়াছে। কাহাকে বা শিল্পী মৎস্যপূর্ণ বিষ্ঠাগৰ্ত্তে নামাইয়া দেওয়া হইত, কাহারও ঢিলা পায়জামার ভিতর বৃশ্চিক বা বিড়াল ছাড়িয়া দেওয়া হইত, কাহাকেও লবণমিশ্রিত মহিষ-দুগ্ধ পান করাইয়া উদরাময়ে ভোগাইবার ব্যবস্থা হইত। হিন্দুর প্রতি বিদ্রপচ্ছলেই ষেন এই অত্যাচার “বৈকুণ্ঠবাস” বলিয়া কথিত হইত। কিন্তু বৈকুণ্ঠে যে মোসলমান জমিদারগণের প্রবেশ নিষেধ, তাহ নহে ; তরফের ভূম্যধিকারীকেও একবার ‘বৈকুণ্ঠ দর্শন করিতে হইয়াছিল বলিয়া কথিত আছে। যাহাদের সৌভাগ্যে বিদেশ গমন না ঘটিত, তাহারাও সহজে অব্যাহতি পাইতেন না, স্থানীয় কৰ্ম্মচারীদের কাছে র্তাহারা বিশেষ ভাবে নিৰ্য্যাতিত হইতেন। এই নিৰ্য্যাতন ভয়ে জমি জমা গ্রহণে লোকে প্রায়ই নারাজ হইত। রায় ও রায়বাহাদুর খেতাব— নবাবি আমলেই সন্ত্রান্ত ভূম্যধিকারীগণ চৌধুরী” খেতাব পাইতেন। থেতাবের মধ্যে 'রায়' খেতাব খুব উচ্চ ছিল। মুর্শিদাবাদ কাহিনী রচয়িত লিথিয়াছেন—“বৰ্ত্তমান সময়ের ন্যায় তৎকালে রায় ও রায়বাহাদুর উপাধি পথে ঘাটে গড়াগড়ি যাইত না । সে সময়ে রায়দিগকে সহস্ৰ সৈন্যের (তন্মধ্যে ৫০০ অশ্বারোহী ) অধিপতির ও রায়বাহাদুরকে তিন সহস্ৰ সৈন্যের (তন্মধ্যে ২• • • অশ্বারোহী) অধিপতির পদমৰ্য্যাদা দেওয়া হইত। চৌধুরীদের থেতাৰ তদ্রুপ না হইলেও ইহঁরাই দেশের শক্তিস্বরূপ বিবেচিত হইতেন। চৌধুরী খেতাব— হিন্দুরাজত্বে প্রজার নিকট হইতে করম্বরূপ উৎপন্ন শস্যের ষষ্ঠাংশ গৃহীত হইত। সম্রাট আকবরের পূর্ব পর্যন্ত তৎপরিবর্তে কর স্বরূপ আয়ের চতুর্থাংশ সংগৃহীত হইত, যাহার এই সংগ্রহ কর্ঘ্যে নিযুক্ত হইতেন, তাহারাই ‘চৌধুরী (সংস্কৃত চতুর্ধারী বা চতুধুরীণ) উপাধি পাইতেন। কিন্তু তৎকালে এ উপাধি কচিৎ কাহাকেও দেওয়া হইত ; পরবর্তী সময়েই