পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৩৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ অধ্যায় ।] নবাবি আমলে দেশের অবস্থা । & S. কখন কখন প্রভূত ধন উপার্জন পূর্বক দেশে আসিয়া সংকীৰ্ত্তি করিত। চুড়খাইর সন্নিকটবর্তী খোজার দীর্ঘ প্রভৃতি ইহার প্রমাণ। করিমগঞ্জের প্রসিদ্ধ জায়গীরদার বংশের প্রসিদ্ধি ও সমৃদ্ধি তাহদের বংশের জনৈক খোজ হইতেই এই সময়ে হইয়াছিল ।* তখন লোকে বেতন দিয়া চাকর রাখিতে বিশেষ চেষ্টা পাইত না, তখন অতি মাত্রায় দাসত্ব প্রথা প্রচলিত ছিল, তখন পণ্য দ্রব্যের ন্যায় বাজারে দাসদাসী বিক্রয় হইত, তবে ইহাদের ক্রয়বিক্রয়ে লিখিত দলিলের ব্যবহার ছিল।" সংস্কৃত ভাষার ব্যবহার-— শ্ৰীহট্টে পূৰ্ব্ব হইতে মৈথিল দ্বিজবর্গের প্রাধান্য থাকায় সংস্কৃতের বহুল চর্চা ছিল। শাহজলালের সময় হইতে এদেশের কথাবাৰ্ত্তায় উন্দু ভাষার অনেক শব্দ মিশ্রিত হইলেও সংস্কৃতের প্রভাব হিন্দু সমাজ হইতে দূরীভূত হয় নাই, নবাবি আমলেও অধিকাংশ স্থলে দলিল পত্র সংস্কৃতেই লিপিবদ্ধ হইত { পণ্ডিতগণ সংস্কৃতেই গ্রন্থাদি লিখিতে যত্ব করিতেন। পরবর্তীকালে বাঙ্গালা

  • শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের ৩য় ভাগে (বংশবৃত্তান্তে ) এই বংশকথা কথিত হইবে।
  • ইট নিবাসী রাঘবেন্দ্র চক্ৰবৰ্ত্তীর ১৮১১ খৃষ্টাব্দের লিখিত এইরূপ একখানি দলিলের অবিকল নকল এস্থলে উদ্ধত করা গেল, ইহাতে তখনকার ভাষার নমুনাও পাওয়া যাইবে;–

“ইআদিকীর্দ স্ত্রীরাঘবেন্দ্র চক্রবর্তি সদাসয়েমু লিখিতং শ্রীরত্ববল্লভ শৰ্ম্মণঃ কস্ত বিক্রয় পত্রমিদং কাজ্যঞ্চ আগে আমি তুমার পাশ হনে মবলগ ৩ তিন রূপাইয়া পাইলাম পাইয় আমার পৈত্রিক নফর শ্রচান্দ মুদ্রৱ বেটী শ্ৰীমতি আদরু দাসিরে তোমার পাশ বিক্রয় পত্র করিয়া দিলাম তোমার পৈত্রিক নফর শুনা মুদ্রর পুত্র শ্ৰীকটা মুদ্রর পাশ বিবাহ দেও ইহার দিগে যে সস্তান আদি হৈব এহার দান বিক্রি অধিকার তুমার এহাতে আমার সত্ত নাই এতদৰ্থে বিক্রয় পত্র লেখিয় দিলাম ইতি সন ১২১২ সাল বাঙ্গালা মাহে ১৯ কার্তিক ।” (পাশ্বের সাক্ষী—ঐবিজয়কৃষ্ণ শৰ্ম্ম, শ্ৰীবিষ্ণুরাম শৰ্ম্ম । উপরে সাক্ষর শ্রীরত্ববল্লভ শৰ্ম্মণ: ) ¢ শ্ৰীযুক্ত স্বরূপচন্দ্র রায় তদীয় শ্রীহট্টের ভূগোলের ৩৬ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন,— “অনেকস্থলে সংস্কৃতে লিখিত ভূমি বিক্রয়পত্রাদিও দেখা গিয়াছে (যথা ধৰ্ম্মপুর নিবাসী সনৎকুমার চৌধুরীর বাড়ীতে প্রাপ্ত বহু প্রাচীন সংস্কৃত কবলা), এ দেশে যে আধ্য ভাষায় ভুরি প্রচলন ছিল, তৰিবয়ে দ্বৈধ জন্মিবার কারণ নাই ।”