পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৩৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ অধ্যায় । ] তরফের অবশিষ্ট কথা । כנג তদৃষ্টে তাহাকে ধৃত করতঃ হত্যা করিল। নিরস্ত্র নির্ভীক খোন্দকার সাহেব তখনও নিশ্চিন্ত ভাবে বসিয়া রহিয়াছেন! তখনও তাঁহার মুখমণ্ডলে, ভয়ের চিহ্ন নাই ! এই অতুল্য সাহসী পুরুষকে সাহেবউদ্দীন ও বীরথী নামক দুইটী আফগান বধ করিতে গিয়া তাহার ধৈর্য্য দৃষ্টে মুহূৰ্ত্ত জন্য স্তম্ভিত হইয়া দাড়াইল, বুঝি বা অস্ত্রাঘাত করিতে ইচ্ছা হইল না, কিন্তু পরক্ষণেই তাহার নিজমূৰ্ত্তি ধারণ করিল ও প্রশান্তমূৰ্ত্তি খোন্দকার সাহেবকে খণ্ড খণ্ড করিয়া ফেলিল ! ! তেতিওর রহমান পলাইতে ছিলেন, লাখু সর্দার তাঁহাকে ধরিয়া হত্যা করিল। রাজকীয় অন্যান্য কৰ্ম্মচারীদের মধ্যে কাজি ও শিকদার ধৃত ও বন্দী হইয়া লস্করপুরে নীত হইলেন । খোন্দকারের পক্ষীয় ৩৫ ব্যক্তি নিহত ও অনেক লোক আহত হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে স্বয়ং খোন্দকার ও র্তাহার পুত্র ; যাহার জন্ত এই বিভ্রাট উপস্থিত হয়, সৈয়দ বংশীয় সেই আলীরজা ; সৈয়দ মোহাম্মদ আদম চৌধুরী নামক জনৈক কৰ্ম্মচারী ; এবং স্বপক্ষীয় ও সহায়তাকারী মোহাম্মদ আজগর, মির্জা জুলফক্কার ও স্বরত সিংহ (ওরফে মাণিক বাৰু) প্রভৃতি ব্যক্তিগণ বিশেষ সম্রাস্ত ছিলেন । আক্রমণকারীদের মধ্যে সাহেব রাম সর্দার প্রমুখ তিন ব্যক্তি প্রাণত্যাগ করে এবং স্বয়ং হামিদরজা সাহেব ও কয়েক জন সৈনিক আহত হয়। রণজয়ের পর আহমদরজা, বিপক্ষীয় হতাহত সকলকে লইয়া বাড়ী আসিলেন। অনতি বিলম্বেই অন্দর মহলের উত্তর দিকে দুইটি. গৰ্ত্ত খনন করা হইল ; তাহার একটিতে খোন্দকার সাহেব, তাহার পুত্র ও আলীরজার দেহ এবং অপরটিতে অবশিষ্ট হত ব্যক্তিবর্গের শব প্রোথিত করাইলেন। মুমূর্ষ যে সকল কাফ্রি চাকরাদি আহত অবস্থায় লম্বরপুরে নীত হয়, এই সময় তাহাদিগকেও বধ করিয়া ঐ একই গৰ্ত্তে প্রোথিত করা হয় ! হায়, যে মানুষ দেব প্রকৃতি লইয়া জন্ম গ্রহণ করে, স্বার্থ সাধন ও হিংস, পরায়ণতা তাহাদিগকে এইরূপ পণ্ড মধ্যে পরিগণিত করে, এইরূপেই তাহার, ভ্ৰাতৃশোণিত পানে আত্ম-তৰ্পণ করে। ২৬