পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৪৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭ম অধ্যায় । ] ইটার রাজা । 364 এই অভিযোগ উপস্থিত হইলে, তাহাকে দমনের জন্য দেওয়ান আদিষ্ট হন। “রাজ্য পরিদর্শক” খোয়াজ ওসমান সহসা রাজাকে আক্রমণ করিতে সাহস করেন নাই। দেওয়ানের পুনঃ পুন: উত্তেজনায় তিনি অবশেষে রাজবাটী আক্রমণে উদ্যত হন । রাজা স্থবিদ নারায়ণ গুপ্তচর মুখে সমস্ত জ্ঞাত ছিলেন এবং তিনি পূৰ্ব্ব হইতেই প্রস্তুত হইয়াছিলেন। দেওয়ানের বিশেষ উদ্যোগে খোয়াজ ওসমান যুদ্ধার্থে ধাবিত হইলে অনতিবিলম্বেই যুদ্ধ আরম্ভ হয় । , দুই দিন যুদ্ধ হইয়া গেল, উভয় পক্ষেরই সৈন্যগণ হতাহত হইল, কিন্তু মোসলমান সৈন্য দুর্গ জয় করিতে সমর্থ হইল না । তৃতীয় দিবসে মহাবিক্রমে তাহারা পুনৰ্ব্বার দুর্গ আক্রমণ করিল, রাজার প্রধান সেনাপতি জয়সিংহ পরাভূত হইয়া পলায়ন পর হইলেন, সৈন্যগণ মুহূৰ্ত্ত মধ্যে ছিন্ন ভিন্ন ও অদৃশু হইয়া গেল। দুৰ্দ্দান্ত পাঠানগণ তখন জয়োল্লাসে রাজবাটী আক্রমণার্থে ধাবিত হইল, কিন্তু রাজবাটীতে প্রবেশ করিতে সমর্থ না হইয় অবরোধ করিয়া রহিল। পঞ্চম দিবসে উভয় পক্ষে পুনৰ্ব্বার যুদ্ধ আরম্ভ হইল, রাজা স্বয়ং সেনাপতি রূপে সৈন্য পরিচালন করিয়া অতুল সাহসে যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। তাহার সৈন্যের উৎকট আম্ফালন, রণমাতঙ্গের গভীর বৃংহন ও অশ্বারোহী সৈন্যের তুরঙ্গগণের কর্কশ হেৰাৱৰ ইত্যাদিতে রণস্থল তুমুল কোলাহল পূর্ণ হইয়া উঠিল। বিজয়ভেরী বাজিতে লাগিল, উৎসাহে উল্লাসে সৈন্যগণ নাচিতে লাগিল, বিপক্ষ বিদ্রাবিত করিতে সকলেই উৎসুক হইল। তীরে তীরে রণক্ষেত্র কণ্টকাকীর্ণ হইল, অসি, শূল ও গুলির আঘাতে উভয় পক্ষের সৈন্য ও তুরঙ্গ-মাতঙ্গাদি ছিন্ন ভিন্নাঙ্গ হইয়া চতুর্দিকে প্রধাবিত হইতে লাগিল, রণক্ষেত্রের অবস্থা দুণিরীক্ষ্য হইয়া উঠিল। রাজার অগ্নিময় উৎসাহ বাক্যে, অতুলনীয় শৌৰ্য্য বিকাশের জলন্ত উদাহরণে অনুপ্রাণিত হইয়া সৈন্যগণ প্রাণপণে যুঝিতে লাগিল ; কিন্তু হায়, সে অতুল উদ্যম ব্যর্থ হইল, প্রখর দাবাগ্নিকে প্রবল বর্ষা প্রবাহ নিৰ্ব্বাপিত করিয়া দিল,