পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৪৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯ম অধ্যায়। ] ইটার বিবিধ কথা । 通 vo 〉bアう “মাচুনীর জাঙ্গাল” নামে এক প্রাচীন পথের চিহ্ন অদ্যপি দৃষ্ট হয়। কথিত আছে, কোন মৎস্য বিক্রেত্ৰী “কাওয়া দীঘী” হাওরে মাছ ধরিয়া প্রত্যহ রাজবাড়ী মাছ যুগাইত। কদর্ঘ্য পথে আসিতে অতিরিক্ত বিলম্ব হইত বলিয়া যথাকলে সে রাজবাটা পৌছিতে পাতি না। মাছ আসিতে যাহাতে বিলম্ব না হয়, সেই জন্য “মাছুনীর জাঙ্গাল” নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। হিন্দু রাজার দীর্ঘীর সন্নিকটে “সুন্দর নাথের পুষ্করিণী।” বর্তমানে ইহার পরিচিহ্ন মাত্র আছে। ঐ, স্থানে নাথ জাতীয় স্বন্দরের বাড়ী ছিল। প্রবাদানুসারে ইহার একটা বৃষ হইতে “ডেকার হাওরের” নামকরণ হয়, ' প্রথমভাগে তাহা উল্লেখিত হইয়াছে। ইটার পূর্বদিশ্বত্তী কাণিহাট খৃষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীতে জনৈক হিন্দু রাজার কাণিহাটীর অধিকারে ছিল বলিয়া অবগত হওয়া যায় ; আসম রায় । ইহার নাম আসম রায়। আসম রায় ত্রৈপুর রাজবংশের এক শাখা বংশীয় ছিলেন বলিয়। কথিত আছে। আসম রায় একদা একস্থানে একটা বৃহৎ ব্যাঘ্রকে জালাবদ্ধ করেন, কিন্তু । স্থানটি জঙ্গলে ঘন সমাচ্ছন্ন থাকায় বধোপায় নিৰ্দ্ধারণে অসমর্থ হন। দৈবাৎ শাহ সেলিম উদ্দীন নামে জনৈক ফকির তথায় উপস্থিত হইলেন। সেলিম উদ্দীন শ্রীহট্ট-বিজেতা মজঃরদ শাহজলালের অনুসঙ্গিগণের অন্যতম । শ্ৰীহট্ট-বিজিত হইলে, শাহজলাল, কর্তৃক তদীয় অনুসঙ্গিগণ ইসলাম ধৰ্ম্ম প্রচারার্থ নানাস্থানে প্রেরিত হন। তন্মধ্যে তাজউদ্দীন ও সেলিম উদ্দীন ভ্রাতৃদ্বয়ের মধ্যে তাজ চৌকি পরগণায় গমন করেন এবং সেলিম উদ্দীন আসম রায়ের অধিকার মধ্যে উপস্থিত হন। সেলিম উদ্দীন জালাবদ্ধ ব্যাঘ্র দৃষ্ট্রে ব্যঙ্গচ্ছলে বলিয়া উঠিলেন, “ব্যাস্ত্র বধে এত যত্ন —যত্বে নৈরাপ্ত আশ্চৰ্য্য বটে!” আসম রায় ফকিরের এই গৰ্বিবত বাক্য শ্রবণে ক্রুদ্ধ হইয়া উঠিলেন এবং তাহার প্রতিফল দিবার উদ্দেশে তাহাকেই ব্যাঘ্র বধের অনুমতি দিলেন। অনুমতি পাইয়া ফকির স্বীয় সাধন প্রভাবে সেই ভীষণ ব্যাঘ্রকে বিড়াল ছানার ন্যায় অনায়াসে ধৃত করিয়া আনিলেন ও “ওদিকে আর আসিও না” বলিয়া তথা হইতে দূর করিয়া দিলেন।