পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিল্পোৎপন্ন দ্রব্য। ] শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত । ૭૧ নাই। নিজেদের প্রস্তুত খেস ফেলিয়া তাহারা বিদেশী সুলভ বস্ত্র ক্রয় করিতে অগ্রসর হয় না। মণিপুরী স্ত্রীলোকেরা সৰ্ব্বদাই এই খেস ব্যবহার করে। সদর, প্রতাপগড় ও ভানুগাছ প্রভৃতি স্থানের মণিপুরীরা উৎকৃষ্ট খেস ও পাতল মশারি প্রস্তুত করে। খেসের মূল্য ১ টাকা হইতে ৫৭ পাচ সাত টাকা পৰ্য্যন্ত হয় । ভিতরে তুলা ভরিয়া মণিপুরিগণ “লাইচাং” নামে একরূপ শীতবস্ত্র বয়ন করে, লাইচাঙ্গের মূল্য ৪৫ টাকা হইয়া থাকে। মণিপুরীদের প্রস্তুত গামোছা সুলভ অথচ ভাল । যুগীয়ান গিলাপ— যুগীয়ান কাপড় এক সময় এ জিলায় সকলেই সাদরে ব্যবহার করিত ; লজ্জানিবারক মোটা বস্ত্র পরিতে তখন কেহই লজ্জা বোধ করিত না। কিন্তু যে বিদেশী বস্ত্র পরিধান করা না করা প্রায় সমান, তদ্রুপ স্বক্ষ বস্ত্র সমধিক আদরণীয় হওয়ায়, যুগীদের বস্ত্র ব্যবসায় নিতান্ত মন্দীভূত ভাবে চলিতেছে। যুগীদের প্রস্তুত কাপড়ের মধ্যে গিলাপ’ বা যোড়াচাদর শীত নিবারণোপযোগী ; শীত ঋতুতে অনেকেই এই গিলাপ’ ব্যবহার করেন ; বিলাতি মূল্যবান সার্জ প্রভৃতি হইতে অল্পমূল্যের এই গিলাপ শীত নিবারণ পক্ষে কম উপযোগী নহে। গিলাপের থান ২২২৪ হাত দীর্ঘ ও ১২ হাত প্রস্থ বিশিষ্ট হয়, সুতরাং মধ্যে সেলাই করিয়া ৬ হাত লম্বা যোড়া চাদর প্রস্তুত করতঃ ব্যবহার করিতে হয়। গিলাপের মূল্য ১০ টাকা হইতে ৩ টাকা পৰ্য্যন্ত হইয়া থাকে। যুগীয়ানা ধুতি প্রভৃতির এখন আর আদর নাই ; ইহার ব্যবহার একবারেই উঠিয়া গিয়াছে বলিলেও অত্যুক্তি নহে ; তাহা না হইলে যুগী জাতির এ দুর্গতি কেন ? পূৰ্ব্বে এদেশীয় স্ত্রীলোকের বিধবা হইলেই স্থত কাটিত, এখন তাহ প্রায় ভুলিয়া গিয়াছে। বিধবার স্থতা তখন যুগীরা ক্রয় করিয়া লইত । এখন তাতি এবং যুগীরা আমদানী কৃত বিদেশীয় স্বত্র দ্বারাই প্রায়শঃ বস্ত্র প্রস্তুত করে । শ্ৰীহট্টের দ্বাবিংশতি লক্ষ অধিবাসীর মধ্যে ২৩৮৩ ব্যক্তি মাত্র সুত৷