পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৬১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীহটের ইতিবৃত্ত । [ ২য় ভাঃ ৫ম খঃ সম্রাট শাহজাহানের প্রিয়তম তনয় জাহানীরার বস্ত্রাঞ্চলে, অগ্নি সংযুক্ত হইয়া গাত্র দগ্ধ হয়। চিকিৎসক বেটন সাহেব ১৬৪৫ খৃষ্টাব্দে স্বরাট হইতে দিল্লী গিয়া তাহার আরোগ্য বিধান করেন এবং অভিপ্রেত পুরস্কার গ্রহণ করিতে আদিষ্ট হইলে, মনস্বী চিকিৎসক নিজ স্বার্থীপেক্ষ জাতীয়স্বার্থ সংরক্ষণ মূল্যবান জ্ঞান করেন ; তাহার প্রার্থনানুসারে ইংরেজ কোম্পানী বঙ্গে বিনাশুল্ক বাণিজ্য করিবার অনুমতি প্রাপ্ত হন। ইংরেজ কোম্পানীর কৰ্ম্মচারীগণ ১৬৬৩ খৃষ্টাব্দে সৰ্ব্বপ্রথম বালেশ্বরে কুঠী । স্থাপন করেন। বণিক আর্টজন বিনতভাবে উড়িষ্যার মোসলমান শাসন কর্তার তুষ্ট বিধানে বাণিজ্য বিস্তারের স্বত্রপাত করেন। যখন সিরাজউদ্দৌলা বঙ্গের সিংহাসনে অধিরুঢ়, বঙ্গে তখন ইংরেজ বণিকের বাণিজ্য বিশেষ ভাবে প্রসারিত হইয়াছিল। দৈব নিৰ্ব্বন্ধে সেই সময় (১৭৫৭ খৃষ্টাব্দে ) পলাশী ক্ষেত্রে নবাব সৈন্তের সহিত ইংরেজদের এক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। বিশাল নবাব সৈন্যের বিশ্বাসঘাতক অধিনায়কের শৈথিল্য প্রযুক্ত নবাব পক্ষ পরাজিত হইল, ইংরেজগণ বিজয় গৌরবে বঙ্গে বিচরণ করিতে লাগিলেন। পরে অকৰ্ম্মণ্য নবাব মীরজাফরের সময় ১৭৬৫ খৃষ্টাবে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী বঙ্গ বিহার উড়িষ্কার দেওয়ানী পদ গ্রহণ করেন। শ্ৰীহট্ট তখন বাঙ্গালার নবাবের অধীনে ছিল, সুতরাং বঙ্গের অপরাপর জিলার স্তায় শ্ৰীহট্টেও ১৭৬৫ খৃষ্টাব্দে ইংরেজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। শ্রীহট্টের মোসলমান ফৌজদারের অধিকৃত ভূভাগের পরিমাণ তখন ২৮৬১ বর্গমাইল মাত্র ছিল ; ইংরেজ কোম্পানী ২৮৬১ বর্গমাইল ভূভাগের রাজস্ব আদায়ে নিযুক্ত হন। ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী দেওয়ানী বা শুধু রাজস্ব আদায়ের ভারই গ্রহণ করেন ; শাসনভার বা ফৌজদারী ক্ষমতা তখনও মোসলমান নবাবগণের হাতেই ন্যস্ত থাকে। শ্রীহট্টের তৎকালীন মোসলমান ফৌজদারগণের নাম ও শাসন বিবরণ শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত দ্বিতীয়ভাগ দ্বিতীয়খণ্ডের তৃতীয় অধ্যায়ে লিখিত হইয়াছে।