পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8も ভৌগোলিক বৃত্তান্ত । [ ১ম ভাঃ ৪র্থ অঃ — হিন্দু কুমার জাতির এবং খুসকী নামক মোসলমানেরা মাটর বাসন প্রস্তুত করে। কলসী, ঘট, পাতিল, সরা, কাই, সানকি, "ি কুজা, কলকি, ও কাছল এবং মটকা প্রভৃতিই অধিকরূপে প্রস্তুত হয়। মটকা ও কাছলা অতি বৃহৎ পাত্র । তদ্ব্যতীত সময় বিশেষে দেবমূৰ্ত্তি ও হাতী ঘোড়া প্রভৃতি খেলানাও প্রস্তুত হইয়া থাকে। দেব দেবীর মূৰ্ত্তি গঠন উপলক্ষে কুম্ভকার ও গণকগণ মধ্যে মধ্যে শিল্পের চমৎকারিত্ব প্রদর্শন করিয়া থাকে। বেষোড়া পরগণার বেঙ্গাডুবা গ্রামে পাক কাৰ্য্যের উপযোগী সুদৃঢ় পাতিল প্রস্তুত হয় ; ঐ সকল পাত্র ‘বেঙ্গাডুবি পাতিল নামে পরিচিত। রিচি পরগণার লুকরা গ্রামও মাটর বাসন প্রস্তুত জন্য বিখ্যাত। তরফের মাটর বাসনও অতি উৎকৃষ্ট । তথায় কলসী, কলকি, সানকি, কুজা প্রভৃতি বহুপ্রকার বাসন প্রস্তুত হয়। তন্মধ্যে কুজা ও কলকি প্রভৃতি দেখিতে চিনাবাসন বলিয়া বোধ হয়। শ্ৰীহট্ট সদরেও মাটীর বাসন তৈয়ার হয়। বস্তুতঃ জিলার সর্বত্রই অল্প বিগুর মাটীর বাসন প্রস্তুত হইয়া থাকে। শ্ৰীহট্ট জিলার মাটর বাসন দৃঢ়তর, ব্যবহারোপযোগী ও সুন্দর। পূৰ্ব্বকালে শ্ৰীহট্টে যে প্রস্তর-শিল্প উৎকর্য প্রাপ্ত হইয়াছিল, উনকোটি তীর্থের প্রস্তর-মূৰ্ত্তি, জয়ন্তীয়া ও অন্যান্য স্থা নর দেবমূৰ্ত্তি এবং প্রতাপগড়ের রাজবাটীতে প্রাপ্ত প্রস্তর-চিত্র তাহার প্রমাণ। বর্তমানে শ্ৰীহট্টে এই শিল্পের কোনরূপ কাৰ্য্য দৃষ্ট হয় না। কেবল মাত্র জয়ন্তীয়ায় প্রস্তরের ‘পাটা" ( শিল নোড়া ) শ্রীহট্টের প্রস্তর শিল্পের কঙ্কাল মাত্র রক্ষা করিতেছে । শ্ৰীহট্টের হস্তী দন্তের পাটি ভারত বিখ্যাত। সদর ও পাথারিয়া পরগণায় ইহার কারিকরগণ ছিল, এখনও দুই একটি আছে। হস্তী"" দন্তের বেত্র চুলের ন্যায় চিকণ করিয়া, তারা পাট প্রস্তুত করা হয়। কখন কখন ইহার সহিত স্বর্ণতারের ফুল পাতা তুলিয়া সৌন্দৰ্য্য ও মূল্য বৃদ্ধি করা হয়। এইরূপ এক একটি পাটি ৩-৬ শত টাকা মূল্যেও বিক্রয় হয় । প্রস্তুর-শিল্প ।