পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮৭ ষষ্ঠ অধ্যায় : বৈদ্য ও কায়স্থাদির কথা 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত অবস্থিত, লোকে এখনও তাহাদিগকে রায়নগরের স্থাপয়িতা বলিয়া “রায়” বলিয়া সম্বোধন করে।”২ “ইহাদের গৃহজামাতারূপে সেন বংশ আসেন ও কুলমৰ্য্যাদায় রায়নগরের কায়স্থ সমাজের শ্রীকণীত্ব প্রাপ্ত হন। বর্তমানে সেনদের অবস্থা স্বচ্ছল নহে। ইহাদের ভবিষ্যত কি হয় জানিনা, তবে এখনও ক্ষীণহস্তে ইহারা সমাজে কর্ণধার হইয়া চলিয়া আসিতেছেন।” “মজুমদারগণ—বরশালার মজুমদার, ইহাদের দুই শাখা ছিল, এক শাখা নিৰ্ব্বংশ (মাত্র এক বিধবা জীবিতা আছেন) ও অন্য শাখা স্থানত্যা বরশালার মজুমদারের হিন্দুশাখা রায়নগরের মজুমদার ও মোসলমান শাখা গড়দুয়ারের মোসলমান মজুমদার বংশীয়গণ।” “রায়নগরের রামতারক মজুমদার (যাহার বিধবা বৰ্ত্তমান) সম্প্রতি মারা গিয়াছেন; বরশালায় তাহার সম্পত্তি ছিল। মোসলমান মজুমদার ও রামতারক মজুমদার মধ্যে অনেক তালুক লইয়া বিবাদ বিসম্বাদও হয়। হামিদ বখত মজুমদার সাহেব রামতারককে মাসিক ৩০ টাকা বৃত্তি দিতেন, বৰ্ত্তমান “বরশালার মজুমদার বংশ বিভক্ত হইয়া গেলে তাহাদের দেবতা বাসুদেব রায়নগরেই আনীত হন, সেই দেবতা সেদিন মাত্র নরসিংহ টীলায় গিয়াছেন।” “বামতারক বড় তেজস্ব ও জাত্যভিমানী ব্যক্তি ছিলেন। ভগবান তাহাকে দারিদ্রের চরম অবস্থায় নিযা গিয়াছিলেন। উপবাসে তাহার অনেক দিন গিয়াছে, তবুও লোকে তাহাকে পাদুকাহীন অবস্থায় দেখে নাই, বাজারে জিনিস ক্রয় বিক্রয়ে দেখে নাই। চাকর নাই, হাতে পয়সা আছে, তবুও উপবাস করেন, বাজার হইতে চাউল ডাল কে আনিয়া দিবে ?” “রাজা গিরীশচন্দ্র একদিন তাহাকে ডাকিয়া বলিলেন—“আপনি কষ্ট পাইতেছেন, আমার এখানে রোজ একবার আসিয়া কিছু আলাপ প্রসঙ্গ করিবেন, আপনাকে ৩০ টাকা করিয়া দিব।” রামতারক বলিলেন—“তাহা পারিতাম, তবে আজ আপনি আমাকে যেরূপ অভিবাদন করিয়াছেন, আপনার প্রস্তাবে রাজি হইলে আপনাকেই তদুপ অভিবাদন করিতে হইবে।” “এই মজুমদারগণ গুপ্ত উপাধিধারী। ইহারা যদিও অপর স্থান হইতে আসিয়াছিলেন, তবুও দেব (বা রায়) হইতে শ্রেষ্ঠ সম্মানের অধিকারী হন। কারণ দেবগণ বহু বৎসর ব্যাপিয়া বড় দুৰ্গতিতে পড়িয়াছিলেন।” শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূবর্বাংশ ২য ভাগ ২য খণ্ড অধ্যায়ে দেওযান আনন্দনারায়ণের প্রসঙ্গোপলক্ষে বলা হইয়াছে যে তাহার “বায” উপাধি হইতে শ্রীহট্টের রাযনগবের নাম হয়। এ বিবরণ সে কথারই প্রতিবাদ। ৩ শ্রীহট্ট দর্পণ এবং Mazumdar family গ্রন্থের নির্দেশ মতে শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৩য় অধ্যায়ে সৰ্ব্বানন্দকে দস্তিদার বংশীয় বলা হয়, এ বিবরণ প্রকৃষ্ট প্রতিবাদ। মতান্তরে রায়নগরের মজুমদাবেব পূৰ্ব্ববৰ্ত্তিগণ বরশালা হইতে আখালিয়াতে গমন করেন এবং তথা হইতে রায়নগরে সমাগত হন। ৪. মোঘল বাজত্বের অবসান কালে বাবা শাস্তিদাস শ্রীহট্টে আসিয়া এক সুরম্য স্থানে নিজ সিদ্ধাশ্রম স্থাপন করেন। তাহাব জটাকলাপ মধ্যে নরসিংহ দেবতাকে তিনি রাখিতেন। এই স্থানে সে দেবতা স্থাপন করিলে আশ্রমটি নবসিংহ টীলা নামে খ্যাত হয়। নরসিংহ দেবেব সেবাবায় সুদীর্ঘকালে মণিপুরাধিপতি প্রদান কবিয়াছিলেন। &