পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯১ ষষ্ঠ অধ্যায় : বৈদ্য ও কায়স্থাদির কথা 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত দুলালীস্থ তেরহাতী দত্তকাপনের সেন বংশে মনোহর সেনের উদ্ভব হয়। ইনি একজন প্রসিদ্ধ কবি ছিলেন, শ্ৰীমদ্ভাগবতের কৃষ্ণলীলা অবলম্বনে গুণরাজ খানের ন্যায় তিনি “কৃষ্ণ বিজয়” নামক গ্রন্থ রচনা করেন। তদ্ব্যতীত “হাস্যনাথের পাঁচালী” ও কৃষ্ণলীলাত্মক সঙ্গীতাবলী তাহার কৃত। ঐ সকল সঙ্গীতের পসার এখনও আছে। “সেন মনোহরে বলে শুনহে কালিয়া। নিভাইল প্রেমের আগুণ কে দিল জ্বালাইয়া।” তাহার নাম যুক্ত এই ভণিতাটি হইতেই বুঝা যায় যে তিনি প্রেম-রসে রসিক ছিলেন। ইলাসপুরের গুপ্তবংশে শ্রীগৌরাঙ্গ-পার্ষদ মুরারি গুপ্ত জাত হইয়াছিলেন। ৪র্থ ভাগে ইহার সংক্ষিপ্ত কথা কথিত হইবে। কিন্তু ঢাকাদক্ষিণের মিশ্রবংশীয়গণ বলেন যে, মুরারি গুপ্ত তত্ৰত “বেজের পাড়া” নামক পল্লীবাসী ছিলেন। বেজের পাড়ার গুপ্তবংশ মিশ্রবংশেরই যজমান ছিলেন। এক্ষণে এ বংশ বিলুপ্ত কেবল র্তাহাদের বাটিকাদির চিহ্ন পূৰ্ব্বস্মৃতি জাগাইতে বৰ্ত্তমান আছে। দশসনা বন্দোবস্তের পর পর্যন্ত এ ংশের ধারা চলিয়াছিল, তখন এ বংশীয় রঘুদেবের নামে একটি তালুক বন্দোবস্ত হইয়াছিল, এ বংশের শেষ বংশধরের নাম ভানুরাম, ইনি উকীল ছিলেন। ঢাকাদক্ষিণে আর এক বংশ বৈদ্য ছিলেন, উক্ত বিলুপ্ত বৈদ্য বংশের উল্লেখ পূৰ্ব্বে* করা গিয়াছে। ঢাকাদক্ষিণের চৌধুরী বংশ নামতত্ত্ব শ্রীহট্টের একাংশের নাম যেমন মগধ ছিল, শ্রীহট্টে যেমন এক গৌড় ছিল, তদ্রুপ শ্রীহট্টে মিথিলা বলিয়া কোন স্থান ছিল না কি? পুরন্দরকৃত “চৈতন্য চবিত’ নামক এক গ্রন্থে" লিখিত আছে যে, শচী ও জগন্নাথ তাহদের স্বদেশ মিথিলায় গিয়াছিলেন তথায় শচী দেবী গর্ভধারণ করিলে এক স্বপ্ন দর্শন পূৰ্ব্বক তাহারা নবদ্বীপে গমন করেন। তথায় শ্ৰীমহাপ্রভুর উদ্ভব হয়। শ্ৰীকৃষ্ণ চৈতন্যোদয়াবলীতেও ঠিক এই রূপ কথা পাওয়া যায়। কিন্তু তাহাতে ঢাকাদক্ষিণের নামের স্থলে “গুপ্ত বৃন্দাবন” লিখিত। “চৈতন্য চরিতের” পাঠকেব মনে এ প্রশ্নটি জাগিতে পারে না কি যে উক্ত মিথিলা কোন মিথিলা? উহা উদয়াবলীল “গুপ্তবৃন্দাবন” বা ঢাকাদক্ষিণের উদ্দেশ্যে লিখিত না কি? কাছাড় রাজগণের উপাধি নারায়। নারায়ণ বংশীয় রাজগণের ইতিহাস আলোচনা করিলে প্রতিপন্ন হয় যে, খৃষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর পূৰ্ব্বে তাহা সুরম্য উপত্যকার সমতল ভাগের আধিপত্য লাভ করিতে ১৩. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত উত্তবংশ ৪র্থ ভাগে ইহাব জীবনচরিত বর্ণিত হইবে। ১৪. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত উত্তরাংশে ৩য ভাগ ১ম খণ্ড ৩য় অধ্যায়ের টীকা দেখ। ১৫. এ গ্রন্থের প্রায় ১০৫ বৎসর পূৰ্ব্বকাব হস্তলিখিত পুথি আমাদের কাছে আছে গ্রন্থকাবের পরিচয়সূচক কিছু লিখিত নাই। ১৬ শচী ও জগন্নাথেব ঢাকাদক্ষিণ গমন ও তথা হইতে পুনঃ নবদ্বীপাগমন পূৰ্ব্বোক্ত ৩য় অধ্যায়ে বর্ণিত হইয়াছে।