পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৯৮ নিযুক্ত হন; এই দুইজনই তথাকার আদি পুরকায়স্থ। ইহাদের পরবত্তী বাসুদেব পুরকায়স্থ এক কীৰ্ত্তিমান ব্যক্তি। তাহার কৃত একটি জলাশয় শ্রীহট্ট-ফেঞ্চগঞ্জ রাস্তার ধারে “বাসুদেব-তালাব” নামে খ্যাত থাকিয়া এখনও পথিককে জলদান করিতেছে। দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার সুবিধাকল্পে তিনি যে খাল কৰ্ত্তন করিয়া দিয়াছিলেন, শ্রীহট্ট শহর হইতে বালাগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে যাওয়ার পক্ষে তাহাই সুগম পস্থা। বাসুদেবের ভ্রাতা কেশবরামের নামে গোধরালি পরগণার ৮নং তালুকের নাম হয়। বাসুদেবের পুত্র গোকুলচান্দও পিতার ন্যায় সৰ্ব্বসাধারণের হিতকর কার্য্য করিয়া যশস্বী হইয়াছিলেন। তৎকালে শহরে যাইবার ভাল পথ ছিল না, গোকুলচান্দ সে অসুবিধা দূর করেন—“গোকুলচান্দের জাঙাল” আজও তাহার কীৰ্ত্তি প্রচার করিতেছে। গোকুলানন্দের পুত্র গোলাবচান্দ নিজ বাটীতে স্বগীয় শ্ৰীশ্রীরাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ স্থাপন করেন। আজ কাল শ্রীবিগ্রহ প্রতিষ্ঠার বড় গুরুত্ব না থাকিলেও পূৰ্ব্বেই ইহা বিশেষ গুরুতর ও পুণ্যকায্য বলিয়া অবধারিত ছিল। অপর পুরকায়স্থ বংশ এই পুরকায়স্থ বংশীয়গণ ব্যতীত গোধর লিতে আরও এক পুরকায়স্থ বংশ বিদ্যমান। গোধরালির এই দ্বিতীয় পুরকায়স্থদিগের পূৰ্ব্বপুরুষ যে বৈদ্য জাতীয় ছিলেন, তাহার বাণীবেজ নাম হইতে তাহা প্রতীয়মান হয়। বাণীবেজ বংশীয়গণ মৌদগুল্য গোত্রীয়, ইহারা প্রথমতঃ আখালিয়াতে ছিলেন। আখালিয়াতে এখনও “বেজের টীলা” বলিয়া একটা স্থান আছে। তথা হইতে তদ্বংশীয় রমাবল্লভ গঙ্গানগরে গিয়া বাস করেন;তিনিই পূৰ্ব্বোক্ত গোকুলচান্দের কন্যা বিবাহ ক্রমে, তথা হইতে শ্বশুরের গ্রামে বাসবাটী নিৰ্ম্মাণ করিয়া লইয়াছিলেন - “ দিগলী এইরূপ দিগলীতে “কবের দীঘী” “কবের দেউড়ী” “করের বাড়ী” ইত্যাদির চিহগদি দৃষ্টে বোধ হয় যে কর বংশীয়গণই তথাকার আদি অধিবাসী। দিগলীর সংলগ্ন শ্রীমানপুরে ধর বংশীয়গণ ছিলেন। দশহাল ব্যাপিয়া তাহদের খানেবাড়ী ছিল; তাহদের বৃহৎ দীঘী ইত্যাদির চিহ্ন দৃষ্টে বোধ হয় যে, তাহারা এক সময় কম ক্ষমতাশালী ছিলেন না। ইহাদের নামে তাহার বসতি-স্থান কালিদাসপাড়া রলিয়া খ্যাত হয়। এই বৈদ্য বংশীয়গণ কত্ত্বকই গয়ার পরগণার সৃষ্টি হইয়াছিল বলিয়া কথিত আছে। অপর দাস বংশ দিগলীর উক্ত কর ধর ও দাস এবং দত্ত বংশীয়গণই মৌলিক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তত্ৰতা ধূজ্জটি দাসের বংশধরবর্গের প্রভাবে ইহারা কিয়ৎ পরিমাণে হীনবস্থা হইয়া পড়েন। ধূজ্জটির মহাশয়ের কেহ কেহ শ্ৰীহট্টের নবাব সরকারে উচ্চপদে সমাসীন ছিলেন, এই বংশের বিজয়রাম দাস চট্টগ্রামের দেওয়ান ছিলেন । সোণালাম দেওয়ানি নামক অপর এক ব্যক্তি এই বংশে জন্মগ্রহণ করেন। ইহারা ক্রমে এ অঞ্চলে ভূম্যধিকারী হইয়া উঠিয়াছিলেন। ইদানীং এই বংশীয় স্বরূপচন্দ্র দাস ২৪ স্নেহভাজন শ্রীমান মহেন্দ্রনাথ দে পুরকার্যস্থ হইতে প্রাপ্ত।