পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-দ্বিতীয় খণ্ড 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ১১৪ ভট্টাচায্যের জন্ম হয়। একদা জনৈক বৈদেশিক পণ্ডিত" হেড়ম্বেশ্বর কৃষ্ণচন্দ্র নারায়ণের সভায় উপস্থিত হইয়া তিনটি প্রশ্নের উত্তর চাহেন, উত্তরটি একটি বাক্যে হইবে। শ্যামানন্দ পূৰ্ব্বে কাছাড় রাজের সভাপণ্ডিত ছিলেন, তখন অবসর গ্রহণে বাড়ী আসিয়াছেন। রাজসভায় অন্যান্য পণ্ডিতবর্গ প্রশ্নের নানারূপ উত্তর দিতে লাগিলেন, কিন্তু প্রকৃত উত্তর হইল না। তখন শ্যামানন্দকে দেশ হইতে ডাকিয়া নেওয়া হইল, তিনি সভায় উপস্থিত হইয়া প্রশ্নটি শুনিতে চাহিলে পণ্ডিত বলিলেন ৪— “পঞ্চপাদঃ কথং সিংহঃ ঘম্বিঃ স্যাৎ কেন ভাস্করঃ নৃপতিঃ কস্যতুলোসে দীয়তামেক মুত্তরম।” শুনিয়া শ্যামানন্দ বলিলেন ৪— ‘উত্তর রাক্যঞ্চ মঘোনঃ * চিত্তে বিদায় করিলেন। “রুক্মিণীহরণ নাটক’ প্রণেতা তত্ৰত টোলের অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত তারকচন্দ্র কৃতিরত্ন-তদ্বংশ বৰ্ত্তমান আছেন। পঞ্চখণ্ডের অনিপণ্ডিত বা পণ্ডিত পাড়ার পরাশর গোত্রে শ্রীচৈতন্য-পার্ষদ শ্ৰীবাস প্রভৃতির জন্ম হয় বলিয়া কথিত আছে। শ্রীবাসের পিতার নাম জলধর পণ্ডিত, শ্রীবাস যখন ষোল বৎসরের বালক, তখন সস্ত্রীক জলধর নবদ্বীপে গমন করিয়াছিলেন। শ্রীবাসের জ্যেষ্ঠ সহোদর নলিন পণ্ডিতের একমাত্র কন্যার নাম নারায়ণী; শ্রীবাসের কনিষ্ট শ্রীরাম পণ্ডিত ও শ্রীকান্ত পণ্ডিতের কথা বৈষ্ণব গ্রন্থাদিতে আছে।" ৪র্থ ভাগে আমরা শ্রীবাসের প্রসঙ্গ উত্থাপিত করিব। সুপাতলা ও নয়াগ্রামের কৃষ্ণাত্রেয় গোত্রীয়গণ ত্রিপুরাধিপতির যজ্ঞে কৃষ্ণাত্রেয় গোত্রীয় শ্ৰীপতি আচার্যের আগমন হয়, পরবর্তী কালে এই বংশে উমাকান্ত চক্ৰবৰ্ত্তীর জন্ম হইয়াছিল, তাহার পুত্রের নাম রূপেশ্বর, তৎপুত্র মুকুন্দ রাম বিশারদ, তাহার পুত্রের নাম মহেশ্বর ন্যায়ালঙ্কার। মহেশ্বর হইতে এ বংশ বিশেষ গৌরবান্বিত হইয়াছে। মহেশ্বরের পুত্রের নাম শ্রীরাম বিশারদ, র্তাহার পুত্র শম্ভুনাথ। মহেশ্বর ন্যায়ালঙ্কার— ৪. উক্ত পণ্ডিত পূৰ্ব্বে নবদ্বীপধিপতি কৃষ্ণচন্দ্রের সভাপতি ছিলেন বলিয়া কথিত আছে। ৫. মতান্তরে গোবিন্দচন্দ্র নারায়ণ। ৬ শ্লোকার্থ ঃ—সিংহ পঞ্চপাদ বিশিষ্ট কিরূপে হয়? ঘম্বি ভাস্কব হন কি কারণে ? এই রাজা কাহার তুল্য ? একটি বাক্যে উত্তর দিন। উত্তরে—“মঘোনঃ ” যথা—(১) মঘয়া উনঃ মঘোনঃ। নয় পাদ নক্ষত্রে এক রাশি হয়, মঘা, পূৰ্ব্বফাল্গুনী, ও উত্তর ফাল্গুনীর একপাদে সিংহবাশি এখন মঘা ছড়িয়া সিংহ পঞ্চপাদ হয়। (২) মঘাভ্যামুণ ঃ—ঘম্বি শব্দ হইতে ‘ঘ’ এবং ম’ অক্ষর ত্যাগ করিলে “রবি” অবশিষ্ট থাকে;রবি অর্থে ভাস্কর। (৩) মঘোন ঃ শব্দে ইন্দ্রেয় বুঝায়, অর্থাৎ এই নৃপতি ইন্দ্রতুল্য। নাম যথা—শ্ৰীবাসপণ্ডিত আর শ্রীরামপণ্ডিত। শ্রীপণ্ডিত আর শ্রীকান্তপণ্ডিত।—প্রেমবিলাস। ৮। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২ম খণ্ড ৪র্থ অধ্যায় দেশ।