পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-দ্বিতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৩৮ ছোটলিখার ব্রাহ্মণ বংশ ভরদ্বাজ গোত্র ছেটলিখার ভরদ্বাজ গোত্রীয় ব্রাহ্মণ বংশের আদিপুরুষ ঢাকাদক্ষিণ হইতে এই স্থানে আগমন করেন। এই স্থানের নাম পূৰ্ব্বে “লিখা” ছিল,* পরে বড়লিখা এই দুই অংশে বিভক্ত হয়। ভরদ্বাজ নিজ ভরণ পোষণের জন্য শ্রীহট্টের নবাব সরকাবে আবেদন করিলে, তদানীন্তর নবাব হরকিযুণ দাস মনসুর উলমুলক বাহাদুর এক সনন্দে (নং ৬৩৭) তাহলে পাথারিয়া হইতে ১% ভূমি ব্ৰহ্মত্র দেন । নবাব নজীব আলী খাঁ বাহাদুর ও নবাব এক্রামউল্লা খা বাহাদুর হইতে পরবর্তী কালে দুই বিভিন্ন সনন্দে (নং যথাক্রমে ৫৩৯ এবং ৬৩৮) পঞ্চখণ্ড হইতে ।১A ০M এবং ছোটলিখা ও ইছামতী হইতে •/२ ॥७॥ नि ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হন। ১১৯৫ সালে তাহার মৃত্যু হইলে তদীয় ভ্রাতা গিরিধর ভট্টাচাৰ্য তাহা “তছরূপ" করেন। ভবদেবের পুত্রের নাম জয়রাম, তৎপুত্র বৈদ্যনাথ, তাহার পুত্র কুলচন্দ্র, তৎপুত্র কালীচন্দ্র, ইহার পুত্র শ্ৰীযুত নবীনচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য হইতে এই ক্ষুদ্র বিবরণী প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে। এই বংশের একশাখা পাথারিয়া বাসী। ভট্টাচাৰ্য্য গৌড় বংশ ছোটলিখার নিশাপতি গৌড় বংশীয় ব্রাহ্মণেরাও সমাজে সম্মানিত। ইহারা “ভট্টাচাৰ্য্য গৌড়” ংশ বলিয়া অভিহিত। বংশ প্ৰবৰ্ত্তকের নাম নিশাপতি ছিল। এই বংশে অনেক পণ্ডিত ছিলেন, তন্মধ্যে হরিহর বিদ্যাবাগীশ, তৎপুত্র রঘুনাথ তর্কবাগীশ, তাহার পুত্র গৌবীকান্ত বাচস্পতির নাম উল্লেখযোগ্য। কথিত আছে, গৌরীকান্ত প্রথমতঃ বিদ্যায় বঞ্চিত ছিলেন, লোকে তজ্জন্য তাহাকে অশ্রদ্ধা ও অনাদর করিত। একদা আত্ম-ধিকৃত হইয়া তিনি পাশ্ববৰ্ত্তী অরণ্যে গমন করেন। কিছুদূর গেলেই অরণ্যাশ্রয়ী এক সন্ন্যাসী সহ তাহার সাক্ষাৎ হয়। সন্ন্যাসী নানা বিষয়ে তাহাকে জ্ঞানোপদেশ প্রদান আশ্বাস প্রদান পূৰ্ব্বক গৃহ-প্রত্যাগমনের আদেশ করেন। গৌরীকান্ত যেন পুনৰ্জ্জীবন লাভ করিলেন। লোকেও তাহার ভাব পরিবত্তন লক্ষ্য করিয়া, অপ্রত্যাশিতরতিপে মান্য ও শ্রদ্ধা করিতে লাগিল। তথাহার জ্ঞান-গৌরবে অচিরেই তিনি বাচস্পতি উপাধি লাভ করিলেন। র্তাহার মুখবিগলিত জ্ঞানান্বিত বাক্য শ্রবণে শ্রোতা বিমুগ্ধ হইয়া যাইত, তীব্রত রামেশ্বর চৌধুরী তাহার উপর বিশেষ শ্রদ্ধাবন হইয়া উঠিলেন এবং তদীয় শিষ্যত্ব স্বীকার করিলেন। ইহার পুত্র মধুসূদন পঞ্চানন দেশে বিশেষ সম্মান অৰ্জ্জন করেন। তাহার ১৮ মকুন্দরাম সিদ্ধান্ত নামক এক মহাত্ম কৃত এক প্রাচীন শ্লোকেও এই স্থানের নাম শুধু “লিখা" বলিয়া লিখিত হইয়াছে।