পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-দ্বিতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৪৬ বৰ্ত্তমানে শ্ৰীযুত প্রসন্ন কুমার দত্ত চৌধুরী এবং দাস বংশে শ্ৰীযুত পবিত্রনাথ দাস প্রভৃতি জীবিত আছেন। পঞ্চখণ্ডের ১৯নং হইতে ২৪নং তালুকগুলি দত্ত বংশীয় ব্যক্তিগণের নামে আখ্যাত ও বন্দোবস্ত হইয়াছিল। লাউতার অন্যান্য বংশ পঞ্চখণ্ডের লাউতা গ্রামে ঘোষ, দেও ও দেব বংশের বাস;কথিত আছে, এই স্থানে পূৰ্ব্ব কুকিদেব বাসস্থান ছিল,কুকিসর্দার লাউয়ার নামে পরে লাউতা গ্রামের নাম হয় লাউতার ঘোষ ও দেও বংশ এক্ষণে নিৰ্ব্বংশ। তথায় “জামাল ঘোষের টীলা” বলিয়া একটা স্থান আছে, এই স্থানেই ঘোষদের বাড়ী ছিল। দেও বংশ সম্বন্ধে নানা আখ্যায়িকা প্রচলিত আছে; এবংশে সারঙ্গ দেও ও খেচু দেও নামে দুই ভ্রাতা ছিলেন, ইহারা অর্থশালী ব্যক্তি ছিলেন। সারঙ্গ দেওয়ের সঙ্গে ১২০ সংখ্যক কোদালি থাকিত,ইহাদের দ্বারা সারঙ্গ বহুসংখ্যক পুষ্করিণী খনন করাইয়াছিলেন বলিয়া কথিত আছে। তন্মধ্যে দেওদের বাড়ীর সম্মুখবত্তী দীঘী বৰ্ত্তমানে দলদামে আবৃত হইলেও, ২০/২৫ হাত লম্বা বংশ দণ্ড দ্বারাও তাহার নিম্নের ভূমি পাওয়া যায় না,ইহা এতই গভীর। সারঙ্গের একটা কীৰ্ত্তি অতুলনীয়। একজন ব্রাহ্মণ দৈন্য বশতঃ ইচ্ছা সত্ত্বেও চতুষ্পাঠী স্থাপন করিতে পারিতেছেন না জানিয়া সারঙ্গ তাহাকে নিজ বাড়ী দান করেন ও স্বয়ং বৰ্ত্তমান বারুই গ্রামে চলিয়া যান। সদ্বয়-বাহুল্যে সারঙ্গের অর্থ জলের ন্যায় বহির্গত হইয়া গিয়াছিল। জনসাধারণে অদ্যাপি একটা জনশ্রুতির উল্লেখ করে যে, ধলাই বিল হইতে যে খাল বহির্গত হইয়াছে, সারঙ্গের টাকা ঐ খাল দিয়া বহির্গত হইয়া যায়;এজন্য ঐ খাল “টাকা খাল” নামে কথিত হইয়া থাকে। মাত্র ১০/১২ বৎসর হইল, দেও বংশের শেষ বংশধরের মৃত্যু হইয়াছে। লাউতার দেব-গ্রামে দেব বংশীয়ের বাস। দেব বংশের বিশেষ বিবরণ আমরা প্রাপ্ত হই নাই। এ বংশে ইদানীং শ্যামসুন্দর দেব সৰ্ব্বসাধারণের অনুরাগ ভাজন ছিলেন। তিনি স্বীয় চরিত্রগুণে লেখ্যবৃত্তি দ্বারা প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন। দেব বংশের গৌরব স্বরূপ শ্ৰীযুক্ত রায় দুলালচন্দ্র দেব বাহাদুর র্তাহারই পুত্র। লাতুর বংশোল্লেখ করিমগঞ্জ সবডিভিশনে লাতু এক প্রসিদ্ধ স্থান। পূৰ্ব্বে রাজস্ব সংগ্রহের জন্য ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন কেন্দ্র গঠিত হইয়াছিল। ঐ কেন্দ্রগুলি জিলা বলিয়া কথিত হয়। পূৰ্ব্ব শ্রীহট্টের রাজস্ব আদায়ের কেন্দ্র বা জিলা লাতুতে স্থাপিত হওয়ায় লাতু এক বিশিষ্ট গ্রামে পরিণত হয়। বহু পূৰ্ব্বে যখন এ অঞ্চলে ভদ্র বসতি স্থাপিত হয় নাই। তখন জাতু, আতু, পাতু ও লাতু নামে কয়েকটি কুকি সর্দার এ স্থানে বাস করিত, তাহাদের অধিকৃত স্থানই পরে তাহাদের নামে খ্যাত হয়। এই স্থানে কুকিদের বারটি পাড়া ছিল, এই পরগণা তাহাতেই বারপাড়া বলিয়া খ্যাতি লাভ করিয়াছিল। লাতুর বাজারের দক্ষিণে একটি ক্ষুদ্র টীলা “মালগড়ের টালা” বলিয়া খ্যাত, এই টীলাতে তৎকালে গৃহাদি ছিল এবং সংগৃহীত রাজস্বাদি রক্ষিত হইত। “মাল” অর্থাৎ রাজস্ব এখানে থাকিত বলিয়াটলাটী “মালগড়’ নামেই খ্যাত হয়। তখন লাতুতে একটি মুন্সেফ কোর্ট স্থাপিত হইয়াছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশতঃ পঞ্চখণ্ডের ন্যায় আমরা লাতুর কোন বংশেরই বিবরণ প্রাপ্ত হইতে পারি নাই। লাতুর স্বামী বংশ কি দত্ত বংশ অথবা অষ্টপতি বংশের