পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬১ চতুর্থ অধ্যায় ; বড়লিখার পুরকায়স্থ কথা এবং প্রতাপগড়ের বিবরণ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তাহা বলিয়াছি। এলাম ভূমি নিরূপণার্থ গবর্ণমেন্ট কর্তৃক নিয়োজিত পাটওয়ারিগণ তৎকালে প্রতাপগড়ে অনেক ভূমি বন্দোবস্তের বহির্ভূত আছে বলিয়া নির্দেশ করিয়াছিলেন; এই অতিরিক্ত ভূমিই প্রতাপগড়ের “এলাম”। প্রতাপগড়ের জঙ্গলের প্রতিবন্ধকে পূৰ্ব্বোক্ত সাতটি দশসনা তালুকের অধিকাংশ ভূমি যেরূপ পরিমাপিত ও চিহ্নিত হইতে পারে নাই, নবনিৰ্দ্দেশিত এই এলাম ভূমের দশাও তদ্রুপ হইল, পাটওয়ারিগণ ইহারও সীমাদি নির্ণয়ে অসমর্থ হইয়া পূৰ্ব্বোক্ত দশসনা তালুক সহ উক্ত এলাম ভূমি মিশ্রিত ভাবে আছে বলিয়া মৌজাওয়াবি দাখিল করিলেন। ইহাতে পূৰ্ব্বোক্ত দশসনা “ববান তালুক” আরও জটিল হইয়া উঠিল—গবর্ণমেন্টের খাস ও মিরাসদারবর্গের দশসনাতে মিশামিশি হইয়া পড়িল। মিরাসদারবর্গের এজমালি তালুকগুলি ববান মহাল নামে খ্যাত ছিল, তৎসহ মিশ্রিত এই এলাম সংসুষ্ট অংশই “রসদ ববান” নামে খ্যাত হইল। পাটওয়ারিগণের প্রদত্ত মৌজাওয়ারিতে এবং হস্তবোধের কাগজে, ববান তালুকের ভূমি নির্দেশ উপলক্ষে “সোয়াই নীলাম ও খাস ও খারিজ দাখিল তালুকাত নজর আন্দা” এইরূপ বিশিষ্ট বাক্যাবলী (terms) হইতেই ইহা বুঝিতে পারা যায়। প্রতাপগড়ের জমিদাববর্গ প্রথমে মোসলমান ছিলেন, তাহাদের বিবরণ পূৰ্ব্বাংশে বলা গিয়াছে। কালক্রমে তাহাদের অবস্থা হীন হইয়া পড়িলে, তাহদের তাবৎ সম্পত্তি জফরগড়ের অন্যতম ভূম্যধিকারী হিন্দু চৌধুরীদের হস্তগত হয। প্রতাপগড়েব ভূমি কি সূত্রে তাহাদের হস্তগত হইয়াছিল, ঐ বিশিষ্ট বাক্যাবলী তাহার ইতিহাস বহন করিতেছে। বংশাখ্যান ও সংজ্ঞাসমূহের অর্থ প্রতাপগডের বিববণোপলক্ষে পূবেৰ্ব ঘিলাছড়াগত পাটওয়ারি বংশজ বিনন্দবাম দেবেব কনিষ্ঠ পুত্র হরিদাস ও তৎপুত্র কানুরামের কাহিনী কীৰ্ত্তন করা হইয়াছে, ইনিই স্বয়ং চৌধুরাই প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। কানুরামের তিন সহোদর ভ্রাতা ছিলেন। তাহদের নাম যথাক্রমে কেশবরাম, মণিরাম ও শঙ্কবরাম। কেশববাম সৰ্ব্বজ্যেষ্ঠ ও কানুবাম সৰ্ব্বকনিষ্ঠ ছিলেন। কেশবরামের পুত্ৰ হুলাসরাম ও আকুতরাম; মণিরামের পুত্র মায়ারাম ও মাণিকারাম এবং শঙ্কররামের পুত্রের নাম ব্রজুরাম। কানুরামের পুত্র ফকিরচন্দ্র ও গৌবীচন্দ্র, ইহার নামোল্লেখ পূৰ্ব্বাংশে করিয়াছি।১৫ ইহারা প্রত্যেকেই ক্ষমতাবান ব্যক্তি ছিলেন, ইহাদের কৃতিত্বে জফবগড় পরগণার কিয়দংশ এবং দস্তখতাদি সহ সমগ্র প্রতাপগড় পরগণা তাহাদের জমিদারী ভুক্ত হয়। ইংরেজ রাজত্বের প্রথমভাগে যখন প্রতাপগড়ের মোসলমান জমিদারদের অবস্থা হীন হইয়া ১৩ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূবর্বাংশ ২য ভাগ ২য় খণ্ড ১১শ অধ্যায় দেখ। ১৪ বিনন্দ বামেব জ্যেষ্ঠপুত্র সোণা বামেব বংশধববর্গ এখনও ঘিলাছড়া বাসী। ১৫ কানু বামের সস্তানাদি না হওয়ায তিনি চিন্তিত থাকিতেন, তদুষ্টে জনৈক ফকিব একটা কদলিফল র্তাহবি স্ত্রীকে ভক্ষণ কবিতে দনে। এই ফল ভক্ষণে পুত্র হওয়ায ফকিবেব নামে জ্যেষ্ঠ পুত্রেব নাম বাখা হয।