পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-তৃতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৮২ কন্যাদানে প্রতিজ্ঞা এই নূতন স্থানে যে তখন পর্যন্ত বিশেষ রূপে ব্রাহ্মণ-বসতি স্থাপিত হয় নাই, তাহা একটি ঘটনা হইতেই জানা যায়। তখন বিষ্ণুপুরের পূৰ্ব্বদিকে শ্রীনাথপুরে ভরদ্বাজ গৌত্রীয় কয়েকজন ব্রাহ্মণ বাস করিতেন, তিনি “ইহাদিগকে আশ্রয় দিয়া শ্ৰীনাথপুরে বাসস্থান দান করিয়াছিলেন।” ধৰ্ম্মনারায়ণের এক বিবাহ যোগ্যা কন্যা ছিল, ইহার বিবাহের জন্য তিনি নানা স্থানে পাত্রের সন্ধান করেন। কিন্তু গৃহ জামাতা রূপে সেই নূতন স্থানে কেহই আসিতে সম্মত হয় নাই। অবশেষে নিরুপায় হইয়া তিনি “প্রতিজ্ঞা” করিয়া বলিলেন যে—“নিরূপিত দিনে যে কোন ব্রাহ্মণ প্রথম দুটি গোচর হইবে। তাহার হস্তে কন্যা সম্প্রদান করিবেন (!)”। এই প্রতিজ্ঞার সমীচীনতা বা সত্যতার বিচারের প্রয়োজন নাই; কথিত পূৰ্ব্বোক্তঃ ভরদ্বাজ গোত্রীয় এক ব্যক্তি নিরূপিত দিনে প্রথম তাহার দৃষ্টিপথগামী হইয়া কন্যা লাভে সমর্থ হইয়াছিলেন। ধৰ্ম্ম নারায়ণ জামাতাকে “শ্রীনাথপুর যৌতুক স্বরূপ দান করিলেন এবং তাহাদের সামাজিক পদবী উন্নীত করিবার জন্য চৌধুরী উপাধি প্রদান করিলেন। কিন্তু দাতার কোনরূপ সনন্দ দানের অধিকার না থাকায় এই উপাধির মূল্য অধিক ছিল না।” চৌধুরাই প্রাপ্তি ও তালুক বন্দোবস্ত ধৰ্ম্মনারায়ণের বংশে° মাধব রায় একজন প্রসিদ্ধ লোক ছিলেন। তিনি সম্রাট শাহজাহান হইতে ছয়ছিরি পরগণার চৌধুরাই সনন্দ প্রাপ্ত হন। এই বংশে দশসনা বন্দোবস্ত কালে গোনাথের পুত্র রূপরায়, বিপ্রহরি ও রামবল্লভ বৰ্ত্তমান ছিলেন; তন্মধ্যে বিপ্রহরি যোগসিদ্ধ উদাসীন পুরুষ ছিলেন, কথিত আছে যে বনের বাঘ তাহার কাছে কুকুরবৎ শান্ত ব্যবহার করিত। রাজা বংশীয় বলিয়া সবৰ্ব সাধারণ লোকে তাহাকে “রাজা” বলিয়াই সম্বোধন করিত। রূপরায়ের ও রমাবল্লভের নামে তত্রতা ১নং ও ২নং তালুকের বন্দোবস্ত হয়। রূপরায়ের পুত্র গোবিন্দরায় নিজ নামে ৩নং তালুকের বন্দোবস্ত গ্রহণ করেন।" এই সময় শ্রীনাথপুরের চৌধুরী বগও নিজ নিজ নামে অন্যান্য তালুকের বন্দোবস্ত গ্রহণ করিয়া ছিলেন। পাঁচালী রচয়িতা ও পদ্মাপুরাণ প্রণেতা রূপনারায়ণের ষষ্ঠ পুরুষে গুরুপ্রসাদ জন্ম গ্রহণ করেন। গুরুপ্রসাদ ধাৰ্ম্মিক ও বিদ্বান ব্যক্তি ছিলেন। ১২৯১ বঙ্গাব্দে তিনি দধিবামনের দ্বিতল মন্দিরের সংস্কার কার্য সম্পাদন করেন। গুরু এই ভাগে সন্নিবেশিত ট পবিশিষ্টে বংশ তালিকা দ্রষ্টব্য। এই বংশ বিবরণ প্রদাতা শ্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র রায়চৌধুরীব মতে মাধব, ধৰ্ম্মনারাযণের পুত্র। অপবেব প্রদত্ত বংশ তালিকায মাধব তাহার অতিবৃদ্ধ প্রপৌত্র ছিলেন। এ স্থলে মনে ইতেছে যে, ১৩১৪ বাংলার ৩রা জ্যৈষ্ঠ তারিখের আনন্দ বাজার পত্রিকায় ইটাবাসী খ্যাতনামা উকীল শ্ৰীযুত হরকিঙ্কর দাস মহাশয়, রাজভ্রাতা ধৰ্ম্মনারায়ণকে ছয়চিরিব চৌধুরী বংশের আদি পুরুষ বলিয়া স্বীকাব করিতে যে প্রস্তুত হন নাই, বোধ হয় ইহাই তাহার কারণ। কিন্তু সে কথা স্বীকৃত হয় নাই। ৭ তালুক বন্দোবস্তকালে রূপরায় জীবিত না থাকিলেও গোবিন্দবায় পিতৃনামে বন্দোবস্ত নিয়া থাকিতে পাবেন। পিতৃ নামে তালুকের নাম রাখার বহুতব উদাহরণ আছে। তাহা হইলে গোবিন্দবায় ঐ সময নিশ্চিত জীবিত ছিলেন। মাধব রায়ের সময় নিরূপণে এ কথা লিবেচা । ট পরিশিষ্ট্রে মন্তবে ইহা আলোচিত হইয়াছে। ○