পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৯ দ্বিতীয় অধ্যায় : ইটা, বানচাল প্রভৃতি স্থানের কাশ্যপ গোত্রীয় ব্রাহ্মণ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত জগদানন্দের বংশাখ্যান জগদানন্দ সেই স্থানেই জীবনতিবাহিত করিয়াছিলেন, নানা বিষয়ে অসুবিধা সত্ত্বেও তিনি ডলায় প্রত্যাবৰ্ত্তন করেন নাই। কিন্তু জগদানন্দ পরলোক গমন করিলে পর তাহার পুত্র রঘুনাথ বিশারদ ডলায় চলিয়া আসেন। রঘুনাথ বিশারদ খ্যাতনামা পণ্ডিত ছিলেন। নবাব লুৎফউল্লা খাঁ বাহাদুর হইতে ১০৭০ বাঙ্গলায় তিনি কতক ভূমি দান প্রাপ্ত হন। রঘুনাথ বিশারদ নবাব মহাফতা খাঁ বাহাদুর হইতে ১০৭৭ বাংঙ্গলায় আরও সাদ্ধ ত্রিহল ভূমি (মদতমাস স্বরূপ) দান প্রাপ্ত হইয়া ছিলেন।” লুৎফউল্লা খা প্রদত্ত সনন্দে (নং ৬৮) আলীনগর হইতে তিনি ৫ ॥২৪ ভূমি (মদতমাস স্বরূপ) প্রাপ্ত হন । এই সনন্দে প্রাপকের বাসস্থান আলীনগর লিখিত থাকায় অনুমিত হয় যে তিনি কিয়ৎ কালের জন্য তথায় গমন করিয়া থাকতে পারেন। তর্কলঙ্কারের মৃত্যুর পর উক্তভূমি তৎপুত্র কৃষ্ণরাম ন্যায়ালঙ্কারত্ররে “তছরূপ” থাকে।" কৃষ্ণরাম ন্যায়লঙ্কার এক সময়ে কামরূপ সিদ্ধপীঠে গমন করিয়াছিলেন, তথায় কিছুদিন অবস্থিতি করিয়া তিনি একাধিক্রমে অষ্টোত্তরশত পুরশ্চরণ করেন, কিন্তু তাহাতে সফল মনোরথ হইতে পারেন নাই।” কৃষ্ণরামের পুত্রের নাম ঘনশ্যাম। বৈদিক পুরাবৃত্ত নামক এক কুল গ্রন্থেব কল্পিতত্ত্বের বিষয় শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে আলোচনা করা গিয়াছে বলা গিযাছে যে ঐ নামে কোন গ্রন্থেব অস্তিত্ব সাম্প্রদায়িকদের মধ্যে অনেকেই অস্বীকার করেন; তবে শ্রীহট্টে বৈদিক ব্রাহ্মণাগমন সম্বন্ধে কয়েকটা শ্লোক আমরা ডলা হইতে কাশ্যপ গোত্ৰীয়ের যে বিবরণ পাইয়াছি তাহাতেও উহা জগদানন্দেব বচিত বলিয়া উল্লেখিত হয নাই। জগদানন্দকে রাজা সুবিদনাবাযণের সমসাময়িক বলা হইয়াছে ইহাব সম্বন্ধে বিভিন্ন ব্যক্তি হইতে নানারূপ বিভিন্ন বিবরণ আমরা প্রাপ্ত হইয়াছি, তাহা একে অন্যের বিসংবাদি, সে জন্য সে সকল সংশয়াত্তক কথা ত্যাগ করিতে আমরা বাধ্য হইয়াছি। ৩. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৪র্থ অধ্যায়ে উদাহরণ স্থলে রঘুনাথ বিশারদ নামীয উক্ত দুখানা সনন্দের উল্লখ করা হইযাছে। নবাব মহাফতা খা প্রদত্ত সনন্দ (নং ৪০) ইহারই প্রাপ্তি সন্দেহ নাই। কিন্তু নবাব লুৎউল্লা খা প্রদত্ত সনন্দে প্রাপকের ঠিকানা স্থলে “শমশেব নগর’ লিখিত আছে। সনন্দ দাতা উভয় নবাবই সম্রাট আরঙ্গজেবের সমকালবৰ্ত্তী ছিলেন। ৪. শ্রীহট্টের কলেক্টরীতে সনন্দের যে সকল নকল বহি আছে, তাহাতে উক্ত সনন্দের মস্তব্যে কৃষ্ণরামের মৃত্যুরপর গনশ্যাম ভট্টাচাৰ্য ঐ ভূমি “তছরূপ" করেন বলিয়া লিখিত আছে এবং তাহাতে জন আমুটি সাহেবের দস্তখত আছে। আমবা যে বিবরণী প্রাপ্ত হইযাছি তাহাতে কৃষ্ণবামেব উপাধি নামে বাগীশ লিখিত হইয়াছে সনন্দে “ন্যায়ালঙ্কাব” উপাধি লিখিত। ৫. কথিত আছে কৃষ্ণরাম সিদ্ধি লাভে অকৃতকার্য হইয়া নায়িকা সাধনে প্রবৃত্ত হন ঐ নায়িকা একদা ভাবান্তবিত হইয়া বলিযাছিল যে কৃষ্ণরাম পূৰ্ব্বজন্মে বুরুঙ্গায় জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। নিত্য নৈমিত্তিক ক্রিয়াকাণ্ডে যে কুশময় ব্রাহ্মণ প্রস্তুত কবা হয়, “ক্রিয়ান্তে” তিনি তাহা মুক্ত না কবিয়া বিসৰ্জ্জন করাতে শত ব্ৰহ্মহত্যার পাতক তাহাকে আশ্রয় করিয়াছিল, তৎকৃত শতপুরশ্চরণে সেই পাতক সশালিত হইয়া অবশিষ্ট আটটি পুরশ্চরণ মাত্র পুণ্যজনক হইয়াছে। তাহার দ্বারা এ জন্মে অরা কিছু হইবে না, তবে তাহার পুত্র অনায়াসে সিদ্ধিলাভ সমর্থ হইবে। এই প্রত্যাদেশ কাহিনী কৃষ্ণরাম মৃত্যুর পূবেৰ্ব স্বীয় গুরুর নিকটে মাত্র ব্যক্তি করিয়াছিলেন। ডলাব কাশ্যপ গোত্রীয়গণ ইহাকেই “বৈদিক পুরাবৃত্ত” সংজ্ঞিত বিবরণ রচয়িতা করেন। ૨.