পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-তৃতীয় খণ্ড 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৯৪ এই অন্তদ্ধান ব্যাপার নিজের পাপেরই ফল স্বরূপ মনে করিয়া তিনি প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ আত্মপ্রাণ পরিত্যাগে প্রস্তুত হন। কথিত আছে তখন এক নারিকেল বৃক্ষে ঐ মূৰ্ত্তি প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছিল। ইহা দেবলীলা কি ভক্তের নিষ্ঠা পরিক্ষার্থী কোন চতুরের কার্য্য, কে বলিবে? শ্রীকান্তের ছয়পুত্রের একতমের নাম জগন্নাথ, তৎপুত্র সারদা, তাহার পুত্র শ্রীযুত শচীন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য প্রভৃতি উক্ত শ্রীমূর্তির সেবাধিকারী। রাঘবেন্দ্রের মধ্যম পুত্র শ্রীচন্দ্রের উমাকান্ত ও রামকান্ত নামে দুই পুত্র হয়। উমাকান্তের জ্যেষ্ঠপুত্র হরিকান্ত তন্ত্রোক্ত সন্ন্যাস গ্রহণ করিয়াছিলেন। তিনি গোবিন্দবাটীর দীঘীর পশ্চিম তীরে এক শিব প্রতিষ্ঠা করিয়া, এস্থান থাকিয়া সাধন করিতেন। কথিত আছে, দূর হইতে লোকে এই স্থানে নানাবিধ আশ্চৰ্য্য ব্যাপার দেখিতে পাইত; কেহ কখন বা সন্ন্যাসীকে শতপথিক পরিবৃত দেখিত, শূন্যস্থানে কেহ বা হোমাগ্নি শিখা প্রত্যক্ষ করিত। সন্ন্যাসী লোক-সঙ্গ-ত্যাগী ও ধ্যান ধারণাপরায়ণ ছিলেন। এসকল দৃশ্য দ্রষ্টাদেব দৃষ্টি-বিভ্রম-জনিত কি না কে বলিবে? ইহার কনিষ্ঠ সহোদর কালীকান্ত টেঙ্গ রার তরদ্ধাজ গোত্রীয় নীলকণ্ঠ ভট্টাচার্যের কন্যাকে বিবাহ করিয়া রেঙ্গতে গমন করেন, এক্ষণে তদীয় প্রপৌত্র তথায় অবস্থিতি করিতেছেন কালীকান্তের অগ্রজভ্ৰাতা রামকান্তের প্রপৌত্রও জীবিত আছেন। পূৰ্ব্বোক্ত রামকান্তের দুই পুত্রের নাম সৰ্ব্বানন্দ চূড়ামণি ও গৌরীকান্ত ভট্টাচাৰ্য্য। সৰ্ব্বান্দ একটোল স্থাপন করিয়া শত শত ছাত্রকে শিক্ষা দান করেন। গৌরীকান্তের তিন পুত্রই নিঃসন্তান ছিলেন, তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠ গোপীকান্ত একজন প্রতিভাশালী ব্যক্তি ছিলেন। তরফে একবার এক ব্যাপার উপলক্ষে নিমন্ত্রিত হইয়া, প্রায় সহস্র ব্রাহ্মণ পণ্ডিত একত্রিত হন, গোপীকান্ত সেই ব্যাপারের সদস্য পদে নিয়োজিত হইয়া সুচারু রূপে তাহা সম্পাদন পূৰ্ব্বক যুগ্ম পট্ট-বস্ত্র ‘বরণ” প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। হংস খলা ইটার হংসখলা (হাস খলা) গ্রামে কাশ্যপ গোত্রীয় আর এক বংশ আছেন; ইহারাও পাশ্চাত্য বৈদিক। ইহারা পরবর্তী কালে এ অঞ্চলে আগমন করেন। এ বংশে রামদেব বিদ্যাভূষণ তান্ত্রিক সাধনা-নিরত ও সিদ্ধপুরুষ ছিলেন। ইহাদের উপাধ চক্ৰবৰ্ত্তী। আমাদিগকে কেহ লিখিয়াছেন যে, হংসখলার অনন্তরাম পণ্ডিত স্বীয় কন্যাকে বৎস্য গোত্রীয় ব্রাহ্মণ-নৃপতি ভানুরামের সহিত বিবাহ দিয়াছিলেন। তাহা হইলে অনন্তরামের বংশধরগণ রাজা সুবিদনাবায়ণের মাতুলবংশীয়। উক্ত বিববণ প্রদাতার মতে অনন্তরামেব পুত্রের নাম রামগোবিন্দ, ইহার বৃদ্ধ প্রপৌত্রের নাম গঙ্গারাম চক্ৰবৰ্ত্তী, গঙ্গাবামেব পৌত্র কামদেব বাচস্পতি, তাহার পুত্র রঘুনাথ সিদ্ধান্তবাগীশ, ইহার বৃদ্ধ প্রপৌত্র তত্ৰত শ্ৰীযুত গিরীশচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য বৰ্ত্তমান আছেন। পরগণা-বরমচাল প্রবাদ বাক্য একটা প্রবাদ আছে — “সেনধর চক্রবর্তী, বরমচালের উৎপত্তি।” এই প্রবাদমূলে বুঝা যায় যে, ৯ শ্রীযুক্ত কৃষ্ণচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য (ইটা) হইতে প্রাপ্ত।